হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলায় বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে আসা একটি ছোট গন্ধগোকুলকে পিটিয়ে হত্যা করেছে এলাকাবাসী। হঠাৎ করেই প্রাণীটি লোকালয়ে চলে আসলে আতঙ্কে সেটিকে মেরে ফেলেন এলাকার কয়েকজন।
শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের সাদ্দাম বাজার এলাকায় ছোট গন্ধগোকুলটিকে পিটিয়ে মারা হয়। এরপর সেটিকে ফেলে রাখা হয়েছে স্থানীয় একটি মাঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাদ্দাম বাজারের আশপাশে নালুয়া চা বাগান ও দমদমিয়া লেকসহ বিশাল বনাঞ্চল রয়েছে। শনিবার সকালে অচেনা একটি প্রাণী হঠাৎ লোকালয়ে চলে এলে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে সেটিকে পিটিয়ে হত্যা করেন। পরে সেটিকে একটি মাঠে ফেলে রাখা হয়। বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রাণীটি সেখানেই ছিল।
চুনারুঘাটের সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক রাজু জানান, এলাকাবাসী না জেনে গন্ধগোকুলটিকে মেরে ফেলেছেন। পরিবেশের জন্য উপকারী এই প্রাণীটিকে মারা উচিত হয়নি। এ বিষয়ে বন বিভাগের সচেতনতামূলক প্রচার চালানো উচিত।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সোসাইটি বাংলাদেশের সমন্বয়ক শিমুল মোহসেনিন বাংলানিউজকে বলেন, প্রাণীটিকে খাটাশ বা বাঘডাশ বলে ডাকা হয়। এটিকে ছোট গন্ধগোকুলও বলা হয়। এর ইংরেজী নাম ঝসধষষ ওহফরধহ পরাবঃ। ভিভেরিডি পরিবারের ভিভেরিকুলা গণের একটি গন্ধগোকুল জাতীয় প্রাণী এটি।
এদের খাদ্যাভ্যাসে রয়েছে সবধরনের ফল, বিভিন্ন ছোট প্রাণী ও পতঙ্গ, তাল-খেঁজুরের রস ইত্যাদি। গাছে উঠতে পারলেও মাটিতেই শিকার ধরে এবং ইঁদুর, কাঠবিড়ালী, ছোট পাখি, টিকটিকি, কীটপতঙ্গ ও সেগুলির লার্ভা খেয়ে থাকে। দেশ ভেদে এদের খাবারের তারতম্য দেখা যায়। কফি এদের অন্যতম প্রিয় একটি খাদ্য। এরা পরিবেশের জন্য মোটেও ক্ষতিকর নয় বরং পরিবেশের উপকার করে। এদের মেরে ফেলা উচিত নয়। আমাদের নিজেদের স্বার্থেই এ প্রাণীর প্রতি যত্নশীল হওয়া উচিত।
তিনি আরও বলেন, ছোট গন্ধগোকুল বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, মায়ানমার, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, চীন, হংকং, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, লাওস, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনামে পাওয়া যায়। বাঁশবন-ঘাসবন, শুকনো কাশবন, খগবন, জালি বেতঝাড় এদের আবাসস্থল। আবাসভূমি ধ্বংস ও ব্যাপক নিধনের জন্য এরা বিপন্ন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২
এনটি