ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

৫২ দিন পর ডিম ফুটে বের হলো ঢোঁড়া সাপের ছানা

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
৫২ দিন পর ডিম ফুটে বের হলো ঢোঁড়া সাপের ছানা ঢোঁড়া সাপের ছানা। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: নিজ বাড়িতে সাপের ডিম! এমন ঘটনাটি নিজ চোখে দেখে ভয়ে ভীত হয়ে যান গৃহের মালিক। শুধু তিনি নয়, তার পুরো পরিবার আতংকিত হয়ে উঠেন।

সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেওয়া হয় শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষকে।

তারপর সাপের সেই ডিমগুলো উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে। সেখানে বিশেষ সতর্কতায় রাখা ডিমগুলো থেকে ৫২ দিন পরে ডিম ফুটে বের হয় ঢোঁড়া সাপের ছানা।  

শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে কৃত্রিম উপায়ে ডিম থেকে সাপের ছানা ফোটার এ ঘটনাটি ঘটেছে। ইতোপূর্বে এখানে আরো সাপের ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়েছে এবং পরবর্তীতে সেগুলো প্রকৃতিতে অবমুক্ত করা হয়েছে।  

বৃহস্পতিবার (১২ মে) বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক সজল দেব বাংলানিউজকে বলেন, গত ১৮ মার্চ সাংবাদিক মুসলিম চৌধুরী তার বাসার পুকুর পাড়ের একটি পরিত্যক্ত জায়গায় সাপের এই ডিমগুলো দেখতে পান। তারপর বিষধর সাপের ডিম কিনা – এ বিষয়ে আতংকিত হয়ে আমাকে ফোন দেন। আমি শ্রীমঙ্গলের সিন্দুরখান রোড উনার বাসা থেকে প্রায় ২৫-৩০টা ঢোঁড়া সাপের ডিম উদ্ধার করে এনে বিশেষ ব্যবস্থায় সংরক্ষণে রাখি।

তারপর ৫২ দিন পর থেকে সেগুলো ফুটতে শুরু করে। ১০ মে রাত থেকে ডিমগুলো একে একে ফুটতে শুরু করেছে। সাপের ডিম তো সবগুলো একত্রে ফোটে না। আগে-পরে করে ফুটে। এখনো ফোটা অব্যাহত আছে বলে জানান সজল।  তিনি আরো বলেন, আমিও প্রথম চিনতে পারিনি এগুলো কিসের ডিম? বিষধর সাপের ডিম হবে কিনা? এ নিয়ে আমিও চিন্তিত থেকে বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ অসিফের সঙ্গে সর্বপ্রথম যোগাযোগ করি। তিনিও ডিমগুলো কোনো সাপের ডিম তা শনাক্ত করতে না পারলেও ওইগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় রেখে দেওয়ার পরামর্শ দেন। তারপর আমাদের অবাক করে দিয়ে ফুটে ঢোঁড়া সাপের ছানা।  

বন বিভাগের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এবং তাদের উপস্থিতিতে এই সাপের ছানাগুলো অল্প কিছুদিন পর বিল-হাওরে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান সজল দেব।  

ঢোঁড়া সাপ সম্পর্কে বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ বলেন, ঢোঁড়া সাপ (Checkered Keelback) নির্বিষ সরীসৃপ প্রাণী। অর্থাৎ এই সাপের কামড়ে আমাদের কোনো ধরনের ক্ষতি হয় না। কিন্তু তারপরও এক শ্রেণির মানুষ এই সাপটিকে দেখলেই মেরে ফেলেন। যেন প্রাণীটিকে তারা প্রাণে না মারা পর্যন্ত শান্ত হোন না। এটি কখনোই করা উচিত নয়। কারণ, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই প্রাণীটিরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। ঢোঁড়া সাপ সারা দেশের পুকুর, ডোবা, বিল, হাওরসহ নানান জলাশয়ে রয়েছে এবং সহজে দেখা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ০৮১৭ ঘণ্টা, মে ১২, ২০২২
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।