ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

স্থানীয়রা দাবড়ে ধরলো নীলগাই, নিয়ে গেল প্রশাসন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
স্থানীয়রা দাবড়ে ধরলো নীলগাই, নিয়ে গেল প্রশাসন শিবগঞ্জ সীমান্তে উদ্ধার নীলগাই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্তে একটি নীলগাই পাওয়া গেছে। স্থানীয় জনতা প্রাণিটি ধরে ফেলার পর স্থানীয় প্রশাসন তা জব্দ করেছে।

বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরের দিকে শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ বারিকবাজার এলাকার একটি আমবাগানে প্রাণীটি বেঁধে রাখা হয়। এ সময় নীলগাইটি এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় ছিল।  

উপজেলার দাইপুখুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) প্যানেল চেয়ারম্যান মাইনুল ইসলাম জানান, সীমান্তবর্তী বিলভাতিয়া মাঠে প্রথমে নীলগাইটি দেখা যায়।  স্থানীয়রা এটিকে ধরার চেষ্টা করে। এ সময় পশুটি ক্ষিপ্ত হয়ে মির্জাপুর, দৌলতবাড়ি ও কামালপুরসহ কয়েকটি এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটার দৌড়ায়। এক পর্যায়ে এটিকে ধরতে সক্ষম হয় স্থানীয়রা। পশুটি ধরার চেষ্টা করার সময় দু’জন সামান্য আহত হন।  

খবর পেয়ে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সোনামসজিদ সীমান্ত ফাঁড়ির সদস্যদের একটি দল ঘটনাস্থলে যায় এবং উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানায়। ধারণা করা হচ্ছে, নীলগাইটি ভারত থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে এসেছে।

এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হায়াত বাংলানিউজকে বলেন, একটি নীলগাই স্থানীয়রা ধরেছে বলে শুনেছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা জব্দ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিজিবির পাহারায় নীলগাইটি বারিকবাজারের আমবাগানে বাঁধা অবস্থায় ছিল।

ভারতের অধিকাংশ অঞ্চলেই নীলগাই দেখা যায়। পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মালাবার উপকূল ও বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন অঞ্চলগুলো বাদে উত্তরে হিমালয়ের পাদদেশ থেকে দক্ষিণে কর্ণাটক প্রদেশ পর্যন্ত এদের দেখা মেলে। এছাড়া পাকিস্তান ও নেপালের ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় নীলগাই দেখা যায়। চীনেও নীলগাই রয়েছে বলে জানা গেছে। ১৯৫০ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের দিনাজপুর এলাকায় নীলগাই দেখা গেলেও বর্তমানে তা বিলুপ্ত। যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যে নীলগাই অবমুক্ত করা হয়েছে।

নীলগাই গঠনে সুন্দর দেখতে। তবে অনেকটা ঘোড়ার মতো। দেহের পেছনের দিক কাঁধ থেকে নিচু। কারণ সামনের পা পেছনের পা থেকে লম্বা। ঘাড়ে বন্য শূকরের কেশরের মতো ঘন লোম রয়েছে। পুরুষ নীলগাইয়ের গাত্র বর্ণ গাঢ় ধূসর, প্রায় কালচে রঙের। অনেক সময় গায়ে নীলচে আভা দেখা যায় বলে এদের নীলগাই নামকরণ। মাদী নীলগাই ও শাবকের গাত্র বর্ণ লালচে বাদামি কিন্তু খুরের ওপরের লোম সাদা এবং প্রত্যেক গালে, চোখের নিচে ও পেছনে দুইটি সাদা ছোপ থাকে। ঠোঁট, থুতনি, কানের ভেতরের দিক ও লেজের নিচের তলদেশ সাদাটে।

পুরুষ নীলগাইয়ের শুধু শিং হয়। শিং দুইটি মসৃণ, অনুচ্চ, কৌণিক ও সামনের দিকে ঈষৎ বাঁকানো। শিংয়ের গোড়া ত্রিকোণাকৃতি হলেও ডগা বৃত্তাকার।

উচ্চতা সাধারণত পুরুষ নীলগাইয়ের ১৩০-১৪০ সেন্টিমিটার (৫২-৫৬ ইঞ্চি)। তবে ১৫০ সেন্টিমিটার (৫৮ ইঞ্চি) পর্যন্তও হতে পারে। মাদী নীলগাই আকারে একটু ছোট হয়। শিংয়ের দৈর্ঘ্য গড়ে ২০ সেন্টিমিটার (৮ ইঞ্চি), রেকর্ড পরিমাণ দৈর্ঘ্য ২৯.৮ সেন্টিমিটার (১১.৭৫ ইঞ্চি)।  

নীলগাই ছোট ছোট পাহাড় আর ঝোপ-জঙ্গলপূর্ণ মাঠে চড়ে বেড়াতে ভালবাসে। ঘন বন এড়িয়ে চলে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০২২
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।