খাগড়াছড়ি: পাহাড়ের মাটির উর্বরতার জুড়ি নেই। বলা হয়ে থাকে পাহাড়ে বিদেশি যেকোনো কৃষিপণ্য চাষ এবং উৎপাদনের ব্যাপক সক্ষমতা রাখে।
২০১৯ সালে উপজেলার প্রত্যন্ত রসূলপুর গ্রামের গভীরে ১৩ একর টিলাভূমিতে নুরুল আলম সৌদি আরব ও ইংল্যান্ড থেকে একশ’টি খেজুরের চারা আনেন। চাষ শুরু করার প্রথম তিন বছরের মাথায় তিনি মরুভূমির খেজুর বিক্রি করেন। প্রথম বছর প্রায় এক লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করে স্বপ্নের ভিত মজবুত করেন। চলতি বছর দুই লাখ টাকারও বেশি খেজুর বিক্রির আশা করেন তিনি। বারোহি, আজওয়া, মিটজল ও আম্বার জাতের খেজুরের জাত রয়েছে নুরুলের বাগানে। প্রায় অর্ধেক গাছেই ইতোমধ্যে ফল ধরা শুরু হয়েছে। বাগানে হলুদ, সবুজ এবং লাল রঙের খেজুর শোভা পাচ্ছে। দেশের মাটিতে বাণিজ্যিকভাবে মরুভুমির খেজুর চাষের খবরে তার বাগানে ভিড় করছেন স্থানীয়রা।
নুরুল আলম জানান, দেশে মরুভূমির খেজুরের চাহিদা আছে। তবে পুরোটা বাইরে থেকে আমদানি নির্ভর। তাই আমি ভাবলাম দেশে চাষ করলে বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। বাগান করে বুঝলাম দেশে এই খেজুরের চাহিদাও অনেক।
তিনি বলেন, আমাদের দেশে আমদানি নির্ভর অনেক কৃষিপণ্য আছে। চাকরির পেছনে না ছুটে শিক্ষিত সমাজ চাইলে কৃষিতে মনোযোগী হতে পারেন। একদিকে দেশে আমদানি নির্ভরতা কমবে অন্যদিকে নিজেদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। খেজুর দীর্ঘদিন রেখে সহজে বাজারজাত করা যায় বলেও জানান তিনি।
পাহাড়ি জনপদে চাষ শুরু হওয়া খেজুরের আকার ও স্বাদ মরুভুমির খেজুরকেও ছাড়িয়ে যাবে দাবি এ চাষির। এদিকে নুরুলের সফলতায় খুশি কৃষি বিভাগ।
মাটিরাঙ্গা কৃষি কর্মকর্তা মো. সবুজ আলী মধ্যপ্রাচ্যের খেজুর পুষ্টিসমৃদ্ধ ফল জানিয়ে বলেন, নুরুল আলম পরীক্ষামূলকভাবে খেজুর চাষ শুরু করেছেন, এতে তিনি সফলও হয়েছেন। পাহাড়ের মাটি ও আবহাওয়া সৌদির খেজুর চাষের অনুকূলে। আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি তাকে। ভবিষ্যতে খেজুরচাষ কৃষকপর্যায়ে ছড়িয়ে যাবে বলে মত ওই কর্মকর্তার।
দিন দিন খেজুর চাষে আগ্রহী হচ্ছে স্থানীয় কৃষক। সরকারি পৃষ্টপোষকতা এবং সঠিক দিক-নির্দেশনা পেলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে খেজুর চাষে কৃষক লাভবান হবে বলে আশা স্থানীয়দের।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
এডি/এএটি