ঢাকা: মেট্রোরেল আমাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন আর অর্জনের গল্প। প্রধানমন্ত্রীর গত ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৩ মেট্রোরেল উদ্বোধনের পর থেকেই দেশের সর্বস্তরের মানুষের এটাতে ভ্রমণ করছে।
অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের ব্যানারে রোববার (১২ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের প্রায় ৩০০ সাংবাদিক নিয়ে মেট্রোরেলে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে উত্তরা যাওয়া-আসা ভ্রমণের আয়োজন করা হয়।
জানা গেছে, সকাল ৭টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সাংবাদিকরা জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে উপস্থিত হতে শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রেস সচিব ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) প্রধান সম্পাদক বিশিষ্ট সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ও দ্যা ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলমসহ অন্যান্য সিনিয়র সাংবাদিকরা। এসময় সবাই ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
সকাল ৮টার দিকে এ আয়োজনের সার্বিক দায়িত্বে থাকা ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক খাইরুল আলম সবার উদ্দেশে ঘোষণা করেন, মেট্রোরেল সকাল ৮.৩০ মিনিটে জাতীয় প্রেসক্লাব স্টেশন অবস্থান করবে। যথাসময়ের ১০ মিনিট আগে প্লাটফর্মে উপস্থিত থাকার কথা জানান।
এ কথা শোনার পর পরই সবাই একযোগে প্রেসক্লাবের সামনে মেট্রোরেল স্টেশনে প্রবেশ করি। স্টেশনে ঢুকে সত্যি অবাক হয়ে গেছি। এতো সুন্দর গোছানো, চারিদিক পরিষ্কার আর নান্দনিক সৌন্দর্য।
আগে থেকেই যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম সবার জন্য টিকেটের ব্যবস্থা করে রেখে ছিলেন। তাই মেট্রোরেলের মূল অংশে প্রবেশের আগে সবার হাতে টিকেট দিয়ে দেন। আমরা সবাই টিকেট স্ক্যানিং করে এস্কেলেটর সিঁড়ি বেয়ে মূল প্লাটফর্ম যাই।
ঘড়ির কাটা যখন ঠিক সাড়ে ৮টা তখন শো শো করে মতিঝিল থেকে মেট্রোরেল প্রেসক্লাব স্টেশন এ প্রবেশ করে।
সবাই আস্তে আস্তে মেট্রোরেলে ভেতর প্রবেশ করি। তখন সত্যি নিজের দেশ নিয়ে অনেক গর্ব হলো আজ। বাংলাদেশে মেট্রোরেল চলবে, এটা ছিল স্বপ্ন। কিন্তু আজ সত্যি সত্যি আমরা এখন মেট্রোরেলে আছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক চেষ্টা আর মনোবলই স্বপ্ন আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এই সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনাকে জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ।
মেট্রোরেলে উঠার ৩০ সেকেন্ড পর ছাড়লো। মেট্রোরেল চলছে। একে একে কয়েকটি স্টেশন থেকে যাত্রী উঠছে-নামছে। না আছে হৈচৈ না আছে হকার আর ভিক্ষুকদের যন্ত্রণা। মেট্রোরেল চলছে তো চলছে। নিচের পথ গুলো কেমন জানি অচেনা লাগছে। উপরে কোনো যানজট নেই। গাড়ির বিষাক্ত ধোঁয়া আর হর্নের বিরক্ত পরিবেশ নেই। সুনসান নিরবতা।
সবাই মনোযোগ দিয়ে বাহিরে দৃশ্য দেখছি। হঠাৎ করেই কানে আওয়াজ এলো। কিছুক্ষণের মধ্যে আমরা উত্তরা স্টেশনে নামবো। কিছুটা অবাক হয়ে গেলাম মাত্র ৩০/৩৫ মিনিটেই উত্তরা। বাসে আসতে যেখানে দেড় থেকে দুই ঘণ্টা সময় লাগতো। কতটা আরামে, কম সময়ে চলে এলাম প্রেসক্লাব থেকে উত্তরায়।
তারপর উত্তরা স্টেশন থেকে নেমে সামনে একটা রেস্তোরাঁয় সবাই একসঙ্গে নাস্তা করলাম। শিল্পীদের কণ্ঠে গান শুনলাম, হৈচৈ নাচানাচি। এরপর সিনিয়র সাংবাদিকদের নিয়ে ফটোসেশন শেষে ঠিক ১১টায় আবার উত্তরা মেট্রোরেল স্টেশন থেকে প্রেসক্লাবের উদ্দেশে রওয়ানা দিলাম। আসার পথে যাত্রী কিছুটা কম থাকায় আমরা সাংবাদিকরা কয়েকটি বগি নিজেদের দখলে নিয়ে গানবাজনা করতে করতে আবার সেই ৩০/৩৫ মিনিটে প্রেসক্লাব স্টেশনে এসে পৌঁছালাম।
এ সময় ডিইউজের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, মেট্রোরেল প্রধানমন্ত্রীর বিরাট অর্জন। প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই রাজধানীবাসীকে এতো সুন্দর একটা উপহার দেওয়ার জন্য। এই ভ্রমণের মাধ্যমে সব সাংবাদিকদের একটা পুনর্মিলন হলো। আমরা যারা আজকে মেট্রোরেল ভ্রমণ করলাম। সবাই এই দিনটাকে আজীবন মনে রাখবে। ধন্যবাদ স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের সব সদস্যদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০২৩
এসএম