‘যে গ্রাম তারা ছেড়ে আসতে বাধ্য হয়েছে, তা আগুনে পুড়েছে। সাদা চুলের একজন বুড়ো আকাশের দিকে হাত তুলে ক্ষোভে কেঁদে উঠলেন।
ওপরের এই বক্তব্য ‘টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ নামের সংকলনের। এটি অবলম্বনে ধারাবর্ণনার মাধ্যমে ১০ মিনিটের একটি নাটিকায় উপস্থাপন করা হয় ১৯৭১ সালের শরণার্র্থীদের অসহায় অবস্থা। ২১ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের শহীদ নাট্যশিল্পী আলাউদ্দিন জহিন মঞ্চে নাটকটি উপস্থাপন করা হয় ‘টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ প্রকাশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংকলনের সংগঠক জুলিয়ান ফ্রান্সিস। আক্কু চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। পাঠ করেন জাদুঘরের স্বেচ্ছাকর্মী সুদীপ্ত, দেলোয়ার, জিমানা শক্তি, তামান্না মাসুক, বিথী, দ্বীপ এবং মুরসালিন।
জুলিয়ান ফ্রান্সিস বলেন, এটি সত্যিই খুব আনন্দের বিষয় যে, যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৭১ সালে প্রবলভাবে পাকিস্তানকে সমর্থন জানিয়ে আসছিল, কিন্তু সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থক। তিনি একাত্তরের আগস্ট মাসে একই সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিমবঙ্গ পরিদর্শন করেছিলেন। তিনি ‘টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ আমেরিকার কংগ্রেশনাল রেকর্ডে তুলে ধরেন এবং পূর্ণাঙ্গ রিপোর্টটি প্রকাশ করেন। অক্সফাম ব্রিটেনে রিপোর্টটি প্রকাশের মাত্র এক সপ্তাহের ভিতর এটি আমেরিকায় প্রকাশিত হয়।
১৯৭১ সালের ২১ অক্টোবর প্রকাশিত এ সংকলনটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এ দিনটিতে মাদার তেরেসা, সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডিসহ বিশ্বখ্যাত ৬০ জন মানুষের লেখা নিয়ে বাংলাদেশে গণহত্যা বন্ধের আবেদন জানিয়ে ‘টেস্টিমনি অব সিক্সটি’ নামে একটি সংকলন প্রকাশ করেছিল স্বেচ্ছাসেবা সংগঠন অক্সফাম। সংকলনটি বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। বাংলাদেশ এবং এর মুক্তিসংগ্রামের পে বিশ্ব জনমত গঠনে সংকলনটি রেখেছিল বিশেষ সহায়ক ভূমিকা। অক্সফামের তৎকালীন সংগঠক জুলিয়ান ফ্রান্সিস বিষয়টির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১৩০, অক্টোবর ২১, ২০১০