ব্রাহ্মণবাড়িয়া: শীতকালীন ফল বরই পাকার পর গাছ থেকে সংগ্রহ করে তা ফাল্গুন মাসেই শুকাতে হয়। এ মাসে আকাশ সাধারণত মেঘ-বৃষ্টিহীন থাকে, রোদ থাকে চড়া।
টানা দু’সপ্তাহ ধরে বরই রোদে শুকিয়ে একেবারে ঝরঝরা করে নিতে হয়। এই শুকনো বরই এমনিতে যেমন খাওয়া যায়, পাশাপাশি রসনা বিলাসীরা এটি দিয়ে টক-ঝাল-মিষ্টি আচার বানাতে ভুলে যান না মোটেও’। এমনটাই বলছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার রাণীখার গ্রামের গৃহিণী রাশিদা রহমান।
রাশিদা রহমান বলেন, পাকা বরইয়ের দু’দিক ফালি করে কেটে অথবা আস্ত অবস্থায় শুকানো যায়। শুকাতে দেওয়ার আগে ফুটানো পানিতে ভাপ দিয়ে নেওয়াটা ভালো। কেননা ভাপ না দিলে আচার তৈরির আগে সরাসরি কাঁচা পানি দিয়ে আলাদা সিদ্ধ করতে হয় বলে এর স্বাদ পানসে হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া ভাপ দেওয়া বরইয়ে পোকাও ধরে না বলে জানান তিনি।
রাশিদা বাংলানিউজকে বলেন, টক-মিষ্টি উভয় জাতের বরইয়ের সুস্বাদু আচার করতে চালনি অথবা চাটাইয়ে বরই বিছিয়ে পাতলা কাপড় দিয়ে ঢেকে রোদে শুকাতে হয়। শুকিয়ে পুরোপুরি ঝরঝরা হয়ে গেলে কাঁচের বয়ামে ভরে তা সংরক্ষণ করা যায়। কাঁচের বয়ামে না রাখলে বরইয়ের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাই দীর্ঘদিন সংরক্ষণের জন্য ভালোভাবে শুকিয়ে নেওয়াটাও আবশ্যক বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি বাংলানিউজের রসনা বিলাসী পাঠকদের জন্য তিনি শুকনো বরই দিয়ে আচার তৈরির কথা জানান। তিনি জানান, আচার তৈরি করতে বরইয়ের পাশাপাশি সরিষার তেল, আদা বাটা, রসুন কুচি, পাঁচফোড়ন গুঁড়া, জিরা ভাজা গুঁড়া, ভিনেগার, লবণ, মরিচ গুড়া, শুকনো মরিচ ও গুড় এসব সামগ্রী প্রয়োজন হয়।
আচার বানানোর আগে ঘণ্টাখানেক ধরে বরই পানিতে ভিজিয়ে রেখে এর বোঁটা ফেলে দিতে হয়। এরপর পানি ছেকে শুকনা মরিচ ছাড়া বাকি সব উপকরণ পাত্রে ঢেলে ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। আরেকটি পাত্র চুলায় বসিয়ে তেল গরম করে সবটুকু মসলা দিতে হবে। একটু নেড়ে গুড় ও লবণ দিয়ে ভালো করে কষিয়ে কিছুক্ষণ পর শুকনো মরিচ ও বরইগুলো দিয়ে জ্বাল দিতে হবে। অল্প আঁচে বরই নেড়ে শুকিয়ে আনতে হবে। যতটা সম্ভব শুকানোর পর আচার নামিয়ে নিতে হবে। এরপর ট্রে-তে পাতলা করে বিছিয়ে পাতলা কাপড়ে ঢেকে ফের রোদে শুকাতে হবে। হালকা ভেজা ভেজা থাকা অবস্থায় বয়ামে ভরে সংরক্ষণ করা যেতে পারে জিভে জল আনা বরই আচার।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
আরএ