ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

লোকচক্ষুর অন্তরালে ক্ষয়িষ্ণু জমিদার বাড়ি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৬
লোকচক্ষুর অন্তরালে ক্ষয়িষ্ণু জমিদার বাড়ি

তুরাগ নদীর পাড়ে ছোট্ট গ্রাম বিরুলিয়া। ঢাকা থেকে খুব কাছের এই গ্রামটির বেশিরভাগ অধিবাসীই হিন্দু ধর্মাবলম্বী।

ইতিহাসের সাক্ষী কিংবা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন দেখতে অনেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে গেলেও বিরুলিয়ার ইতিহাস-ঐতিহ্য ও জমিদার বাড়ি লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছে।

বাইরে থেকে বোঝা না গেলেও গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়বে ছড়ানো ছিটানো কালের সাক্ষী এখনও দাঁড়িয়ে আছে জীর্ণ শরীর নিয়ে। আছে একটি মন্দিরও।

গ্রামের শেষ ঠিক মাথায় নদীর তীর ঘেঁষে বাড়িটি জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের। সেখানে এখন বাস করছেন রজনীকান্ত ঘোষের বংশধররা।

স্থানীয় অধিবাসী এবং জমিদারের উত্তরসূরিদের কাছ থেকে জানা গেলো, সেই সময়ের জমিদার নলিনী মোহন সাহার কাছ থেকে রজনীকান্ত ঘোষ ৮৯৬০ টাকা ৪ আনি দিয়ে বাড়িটি কেনেন।

পুরানো ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জসহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় জমিদার রজনীকান্ত ঘোষের কয়েকটি বাড়ি থাকলেও এখন প্রায় সবগুলোই অন্যদের দখলে।

১৯৬৪ সালে দাঙ্গার সময় মূল্যবান সব জিনস লুটপাট হওয়ার পর বিরুলিয়া গ্রামের জমিদার বাড়িটি ছাড়া রজনীকান্তের আর কোনো সম্পত্তি অবশিষ্ট নেই।

বিরুলিয়ার অন্যসব পুরোনো বাড়িগুলো পরবর্তী সময়ে একজন ব্যবসায়ী কিনে নিলেও এখন সেগুলোও বেদখল হয়ে গেছে।

বাড়িগুলোতে আছে সদরঘর, বিশ্রামঘর, বিচারঘর, পেয়াদাঘর, ঘোড়াশালাসহ উল্ল্যেখযোগ্য আরও কিছু ঘর। তবে এসব এখন অন্য কাজে ব্যবহার হচ্ছে।

ছবি তোলার সময় চোখে পড়লো ২-৩টি বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় নতুন করে সংস্কার করতে গিয়ে নষ্ট করেছে জমিদার বাড়ির মূল কাঠমো।

বাড়িগুলোতে সঠিক সংস্কারের অভাবে শ্যাওলা ধরেছে, বটগাছসহ বিভিন্ন ঝোপ-ঝাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় লোকজন নিজের প্রয়োজন মতো ব্যবহার ও বসবাস করে বলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি।

চারদিকে পানি বেষ্টিত বিরুলিয়ার এই সুন্দর গ্রামের ইতিহাস আর ঐতিহ্য রাক্ষায় এখুনি এগিয়ে না এলে হয়তো লোকচক্ষুর আড়ালে রয়ে যাওয়া জমিদার বাড়িগুলো বিলুপ্ত হবে নিভৃতেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০১৬
এমজেএফ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।