নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে এই পৃথিবী নামক গ্রহে কত কীই না করতে হয়। কিন্তু মহাকাশে এমন তিনটি বিশ্বের সন্ধান মিলেছে যেখানে না অতি শীত না অতি উষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে।
বলা হচ্ছে তাহলে এলিয়েনদের কি এখানেই বসবাস!
মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এগুলোর নাম দিয়েছেন ‘ভল্লুক ত্রয়ী’। আর বলছেন, এগুলোর মধ্যে অন্তত একটির পরিবেশ পুরোই প্রাণীকূলের বসবাসের উপযোগী। এরই মধ্যে তারা সেখানে প্রাণির অস্তিত্ব পাওয়া যায় কি না তা খুঁজে পেতে দেখতে শুরু করেছেন।
মহাকাশ গবেষকদের একটি দল এই তিন ভিনগ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। তারা দেখেছেন সেগুলো একটি বেশ ঠাণ্ডা ধুসর বর্নের তারকাকে ঘিরে ঘুরছে। আর সেই তারকাটি আমাদের সুর্যের আট ভাগের এক ভাগ হবে।
ট্র্যাপিস্ট-ওয়ান নামেও পরিচিত এই ঠাণ্ডা আর অপেক্ষাকৃত কম আলোর তারকাটি একটা নিয়মিত বিরতিতে কিছুটা ঝাপসা হয়েও আসে। এ থেকে ধরে নেওয়া হচ্ছে এই তারকা আর পৃথিবী নামক গ্রহের মাঝ দিয়ে আরও কিছু অবজেক্ট আসা-যাওয়া করে।
আরও বিস্তারিত বিশ্লেষণে দেখা গেছে পৃথিবীর সমান আকারের এই তিনটি গ্রহ তাদের অস্তিত্ব ভালো করেই জানান দিয়েছে।
ট্র্যাপিস্ট-ওয়ান অনেক বেশি ঠাণ্ডা আর সূর্যের চেয়ে অপেক্ষাকৃত লালও বটে। আর সেটি বৃহস্পতি গ্রহটির চেয়ে খানিকটা বড়। আর কুম্ভ নক্ষত্রপুঞ্জের অংশ।
ছায়াপথে এমন তারকা কিন্তু অসংখ্যই দেখা যায় কিন্তু এই প্রথম তার কোনওটিকে ঘিরে গ্রহের অবস্থান দেখা গেলো।
পৃথিবীর কাছাকাছি হলেও এই তারাটি অনেকটাই মৃদু আর অনেক লাল হওয়ার কারণে খালি চোখে কিংবা সাধারণ টেলিস্কোপেও ধরা পড়ে না।
বেলজিয়ামের ইউনিভার্সিটি অব লিজ এর গবেষক মাইকেল গিলন জানালেন ওই ভল্লুক ত্রয়ী গ্রহরা তারকাটির অনেক কাছাকাছি থেকে ঘুরছে। সূর্য থেকে পৃথিবীর যা দূরত্ব তার ২০ থেকে ১০০ ভাগ কম দূরত্ব হবে ওগুলোর।
গবেষকরা মনে করছেন তিনটি গ্রহই বসবাসযোগ্য হবে, আর এখন ওগুলোই তাদের গবেষণায় বড় গুরুত্ব পাচ্ছে।
তারা বলছেন, যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি যা রয়েছে তা দিয়েই এখানে গবেষণা এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। আর প্রাণের অস্তিত্ব থাকলে তার বের হয়েও আসবে।
তারকাটির অপেক্ষাকৃত কাছের দুটি গ্রহ তার চারিদিকে একবার ঘুরে আসছে পৃথিবীর হিসেবে ১.৫ দিন ও ২.৪ দিনে। আর তৃতীয়টি এখনো কিছু অবিন্যস্ত তথ্য দিচ্ছে। হতে পারে সেটি চার থেকে ৭৩ দিনে একবার প্রদক্ষিণ করছে। বিজ্ঞানীরা এই তৃতীয়টির নাম দিয়েছেন ‘বাবা ভল্লুক’ আর তারা ভাবছেন এখানে প্রাণির বসবাসের উপযোগিতা সবচেয়ে বেশি হওয়ারই সম্ভাবনা।
এই তিনটি গ্রহে দিবা রাত্রীও আসে বলে জানিয়েছেন তারা। তাহলে কি এখানেই এলিয়েনদের বাস! ঠাট্টা করে সে কথাও বলছেন গবেষকরা।
এই গ্রহের বায়ুমণ্ডল রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করছেন তারা। ভাবছেন শিগগিরই হয়তো এই গবেষণারও একটি ফল মিলবে।
বাংলাদেশ সময় ১২১০ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৬
এমএমকে