ঢাকা: কৃষ্ণচূড়ার লাল টুকটুকে ফুলে ফুলে সেজেছে ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত। মহানগর দায়রা আদালত ভবনের তিন/চার তলা থেকে তাকালে মনে হবে সবুজের বুকে আগুন লেগেছে।
গ্রীষ্মের অতি পরিচিত ফুল কৃষ্ণচূড়া। সারাবছর চোখে না পড়লেও গ্রীষ্মকালে এর রূপ দেখে থমকে দাঁড়াতে হয়। যেন জানান দেয়, শিল্পায়নের এ যুগে নির্বিচারে যখন গাছ কাটা হচ্ছে- তখনও নড়বড়ে অস্তিত্ব নিয়ে কোনক্রমে টিকে আছি।
পুরান ঢাকার জনসন রোডে ঢাকার জজ আদালতের উত্তর পাশে ঢাকা জেলা জজ আদালতের পুরাতন ৫ তলা ভবন আর দক্ষিণ পাশে মহানগর দায়রা জজ আদালতের ৬ তলা ভবন। আর ঠিক মাঝখানের ফাঁকা জায়গাটুকুর অর্ধেক জুড়ে রয়েছে ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল আদালত। আর এক চতুর্থাংশ জায়গা জুড়ে রাস্তা এবং পার্কিং প্লেস।
বাকি জায়গাটুকুতে পরম মমতায় আঁকড়ে ধরে এখনও টিকে আছে বট, পাকুড়, কড়ই, মেহগনি, সেগুন, অর্জুন, কৃষ্ণচূড়া, আম, নিম, দেবদারু, কদম, কাঁঠাল, কামরাঙ্গাসহ প্রায় ২০ প্রজাতির শতাধিক উদ্ভিদ।
গাছের ছায়ায় প্রতিদিন বিশ্রাম নেন হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী মানুষ। গাছের কাণ্ড বাঁধিয়ে সেখানে করা হয়েছে তাদের বসার ব্যবস্থা। কেবল মানুষকে ছায়া দিয়ে প্রাণ জুড়াচ্ছে গাছগুলো- তা নয়। পাখিদের আশ্রয় হয়েছে আদালত প্রাঙ্গণের বিশাল বিশাল বট আর পাকুড় গাছ। এসব গাছের ফল খেতে আসে ঝাঁক ঝাঁক পাখি।
ঢাকা বারের প্রবীণ আইনজীবী শাহজাহান খান বাংলানিউজকে জানান, ৩০/৩৫ বছর আগেও শতাধিক প্রজাতির সহস্রাধিক গাছ ছিলো পুরান ঢাকায়। ভবন-রাস্তা নির্মাণ আর উন্নয়নের নামে নির্বিচারে সেসব গাছ কাটা হয়েছে। বড় বড় ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। তখন বৃক্ষ, গুল্ম, বিভিন্ন প্রকার ঔষধি গাছ আর হরেক রকম ফুলের গাছ হারিয়ে যায়। এখন সেসব গাছ আর দেখা যায় না।
অ্যাডভোকেট মোরশেদা খাতুন শিল্পী বাংলানিউজকে বলেন, বছর দশেক আগেও আদালত প্রাঙ্গণে কৃষ্ণচূড়া, শিউলিসহ নানান রকম ফুল আর ফলের গাছ ছিলো। অযত্ন-অবহেলায় সেসব গাছ হারিয়েছি আমরা।
এই এলাকায় উন্নয়নের নামে অনেক গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে পুরান ঢাকার মানুষের অক্সিজেন জোগানদাতা এ গাছগুলো বিলীন হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, মে ০৪, ২০১৬
এমআই/এটি