ঢাকা: আমাদের সৌরজগতের বাইরে পৃথিবী সদৃশ আরও অনেক গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন জ্যোতির্বিদরা। নাসার কেপলার টেলিস্কোপ এ অনুসন্ধানে রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
চলতি মাসের ১০ তারিখ (মঙ্গলবার) নাসা ঘোষণা করেছে কেপলার টেলিস্কোপের সর্বশেষ নতুন আবিষ্কার সম্পর্কে। কেপলার এক হাজার দুইশো ৮৪টি নতুন এলিয়েন গ্রহ আবিষ্কার করেছে, যার মধ্যে নয়টি বসবাসযোগ্য বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। অন্যদিকে প্রায় একশোটি এক্সোপ্ল্যানেট আকারে আমাদের পৃথিবীর সমান বলে জানা যায়।
নাসা একটি গ্রাফিকের মাধ্যমে আবিষ্কৃত এক্সোপ্ল্যানেটের মাপসহ শ্রেণীবিন্যাস করেছে। গ্রাফিকে নীল বারের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ১০ মে’র আগে আবিষ্কার হওয়া গ্রহগুলোকে ও কমলা বারের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ১০ মে ঘোষণা দেওয়া এক হাজার দুইশো ৮৪টি গ্রহকে।
মহাশূন্যে কেপলার টেলিস্কোপ বসানো হয় ২০০৯ সালে। এর আগে বিজ্ঞানীরা জানতেন না আমাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো আসলে কেমন।
সৌরজগতের বাইরে এসব গ্রহের সন্ধান পাওয়ার পর জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন মহাকাশে প্রতিটি নক্ষত্রকে অন্তত একটি গ্রহ প্রদক্ষিণ করছে। কেপলারের প্রথম মিশন শেষ হয় ২০১২ সালে ও এরপর অতিরিক্ত মিশনের জন্য তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছিলো। ২০১৩ সালে নতুন গ্রহ জরিপের কাজ করার সময় কেপলারের টেলিস্কোপ নিয়ন্ত্রণকারী চারটি রিঅ্যাকশন চাকার মধ্যে দু’টি ফেল করে।
মাত্র দুটো চাকা নিয়ে টেলিস্কোপের পক্ষে এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরজগতের বাইরের গ্রহ) অবজার্ভ করা দুঃসাধ্য ছিলো। এছাড়াও সৌর বায়ু প্রতিরোধ ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার সময় নড়াচড়া করতে করতে টেলিস্কোপটিই নষ্ট হওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। ফলে কেপলার ইমাজেন্সি মোডে চলে যায়।
কেপলারের বেশ কিছু অপারেশনাল মোড রয়েছে। নরমাল, সেভ ও ইমারজেন্সি। যদি কোনো কিছু অস্বাভাবিক হতে থাকে তাহলে কেপলার সেভ মোডে চলে যায়। কিন্তু ইমারজেন্সি মোড তখনই অন হয় যখন স্যাটেলাইট মনে করে স্পেসক্রাফটির সব কলকব্জা নষ্ট হয়ে গেছে।
ইমারজেন্সি মোডে মূল কম্পিউটার শাটডাউন হয়ে যায় ও এর সোলার প্যানেল সূর্যের দিকে ঘুরে যায়। এরপর নাসার কাছে সংকেত পৌঁছালে নাসা স্পেসক্রাফটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে। সেবার মিশন অপারেশন ইঞ্জিনিয়াররা সফলভাবে স্পেসক্রাফটটিকে ইমারজেন্সি মোড থেকে উদ্ধার করলেও কয়েকমাস কাজ করার পর কেপলার রিস্টোর করতে ব্যর্থ হন ইঞ্জিনিয়াররা।
এরপর ২০১৪ সালে কেপলার টেলিস্কোপকে পুনরায় তৈরি করা হয়। এবার চতুর কৌশল ব্যবহার করে স্পেসক্রাফটকে স্থিতিশীল রাখতে পৃথিবীর কক্ষপথের প্লেনে টেলিস্কোপ বসানো হয়। এরপর শুরু হয় কেপলারের কে২ নামে অারেকটি মিশন।
কে২ মিশন সৌরজগতের বাইরের গ্রহগুলো ছাড়াও তারা, সুপারনোভা ও অন্য মহাজাগতিক ঘটনা নিয়ে গবেষণার সুযোগ উন্মোচন করে।
ভেঙে যাওয়ার ইতিহাস থাকলেও কেপলার নাসার জন্য তথ্য সংগ্রহ করছে। গত বছর এ স্পেসক্রাফটি একাই সৌরজগতের বাইরে পৃথিবী সদৃশ আরেকটি পৃথিবীর সন্ধান বিজ্ঞানীদের দিয়েছে।
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৬ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
এসএমএন/এএ