ঢাকা: মৌমাছিরা দলের রানিকে অনুসরণ করে চলে। তাই রানির নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্বও তাদের।
এইতো দু’দিন আগের একটি ঘটনা। রোববার (২২ মে) যুক্তরাজ্যের প্যামব্রোকশায়ারবাসী ক্যারল হাওয়ার্থ শপিং ট্রিপে বের হয়েছিলেন। নিজের সিলভার মিতসুবিশি আউটল্যান্ডার গাড়িতে চড়ে হেভারফোর্ডওয়েস্টের একটি টাউন সেন্টারে যান।
গাড়ি পার্ক করে তিনি বাজার করতে নামেন। এদিকে কখন যেন তার গাড়ির উইপার ব্লেডের মধ্যে আটকা পড়েছে এক রানি মৌমাছি। আর সেই রানিকে খুঁজতেই ২০ হাজারের মতো মৌমাছি ঘেরাও করেছে গাড়িটিকে। এটা তিনি টেরই পাননি। এতগুলো মৌমাছি গাড়ির পেছনের অংশে লেগে রয়েছে দেখে পথচারীরা থমকে যান।
এরমধ্যে খবর দেওয়া হলে তিনজন বি-কিপার এসে মৌমাছিগুলোকে সরানোর ব্যবস্থা নেন। তারা একটি বাক্সে মৌমাছিগুলোকে বন্দি করেন।
বি-কিপারদের মধ্যে একজন রজার বার্ন। ক্যারল বাজার করে ফেরার পর রজার তাকে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে বলেন। ক্যারল বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার সময় নাটকীয় ঘটনাটির কথা ভাবছিলেন। কিন্তু তিনি জানতেন না, অধিকাংশ মৌমাছিকে সরানো গেলেও রানি মৌমাছি তার গাড়িতেই ছিলো। আর এ কারণে আরও কয়েকশো মৌমাছি তার গাড়ি অনুসরণ করতে করতে আসছিলো।
আশ্চর্যজনভাবে ক্যারল পরদিন সন্ধ্যায়, মানে সোমরার (২৩ মে) গাড়ির পেছনে ফের একঝাঁক মৌমাছি দেখতে পান। ফলে আবার ডাক পড়লো বি-কিপারদের।
৬৫ বছর বয়সী ক্যারল জানান, তার মানে প্রায় দুই মাইলের মতো পথ তারা আমার গাড়ি অনুসরণ করেছে। রানি মৌমাছিটি আমার গাড়িতে আটকা পড়ে ছিলো। আর মৌমাছিরা তাকেই অনুসরণ করতে করতে এসেছে। কিন্তু তারা কোথাও রানিকে খুঁজে পায়নি। প্রকৃতি তার শক্তি দেখালো।
বি কিপার রজার একজন অবসরপ্রাপ্ত ডাক্তার। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, রানি মৌমাছি গাড়ির কোনোকিছুর প্রতি আকর্ষণবোধ করে গাড়ির দিকে ছুটছিলো। হয়তো মিষ্টি কিছু হবে। কিন্তু সে উইপার ব্লেডের মধ্যে আটকা পড়ে। আর এজন্য ২০ হাজার মৌমাছি গাড়িটিকে ফলো করে ও গাড়ির ওপর জেঁকে বসে।
প্রথমে হাইস্ট্রিটে গাড়িটি থাকা অবস্থাতেই মৌমাছির বিরাট একটা অংশ বাক্সবন্দি করা গেছে। পুরো মিশনে আমি ১৬/২০টি হুল খেয়েছি। আরও কয়েকশো মৌমাছি গাড়ির পেছন পেছন ছুটছিলো। কিন্তু গাড়ির মালিক জানতেন না, রানিকে নিয়েই তিনি বাড়ির দিকে ছুটেছেন। পরদিন আমরা খবর পাই ওই একই গাড়ি আবার মৌমাছির আক্রমণের স্বীকার হয়েছে। জানান ৬৫ বছর বয়সী রজার।
রজার আরও জানান, আমি গত ৩০ বছর ধরে মৌমাছি সংরক্ষণ করছি। তবে মৌমাছিদের এমন কাণ্ড এতদিনে চোখে পড়েনি। রানিকে অনুসরণ করা তাদের জন্য প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে রানিকে খোঁজার জন্য দু’দিন ধরে কোনো গাড়িকে ফলো করা আশ্চর্যজনক।
এতো সব ঘটনার পর মিতুবিশি ব্র্যান্ডের গাড়িটিকে বলাই যায় ‘মিতসু ‘বি’শি’!
তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৫ ঘণ্টা, মে ২৫, ২০১৬
এসএমএন/এএ