ঢাকা: তোমার বয়স কত? এমন প্রশ্নে একটু অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো বাচ্চা ছেলেটি। বললো ‘মায়ে কইতে পারবো’।
রোদ-বৃষ্টির দিনে হঠাৎ চলে আসা বৃষ্টির জল থেকে বাঁচতে আশ্রয়ের জন্য ঢুকে পড়া রাস্তার পাশেই এক কারখানায়। প্লাস্টিক রিসাইকেল কারখানা সেটি।
ঢুকতেই গায়ের ওপর উঠে আসলো যেন বিশাল এক বস্তা! টোকাইদের টোকানো প্লাস্টিক বোতেলে ভরা বস্তা। যথারীতি নোংরা পরিবেশ- তবে উৎসুক মনে ভেতরের দিকে অনুসন্ধান শুরু।
কিছু সময় বাদে ছবি তোলার অনুমতি নিয়ে উঠে পড়া হাজার-হাজার প্লাস্টিক বোতলের পাহাড়ে! উপরে ওঠার সময় একটি ছোট্ট মেয়েও উঠে এলো সঙ্গে সঙ্গে।
তার নাম পূর্ণিমা। মায়ের সঙ্গে সে কাজ করে এই কারখানায়। বাবা ছেড়ে গেছে বহুদিন হলো, তাই পরিবারের ঘানি টানতে মায়ের সেঙ্গ কাজ করে একটু বেশি উপার্জেনর আশায়।
পূর্ণিমা অন্য বাচ্চাদের চেয়ে একটু আলাদা। বেশ বুদ্ধি তার! আর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নও। ছবি তুলতে চাইলে খুশি হয়ে লাফ দেয় যেন আকাশপানে!
নিচে নেমে দেখা গেলো, সেখানে আরও বেশ কয়েকজন বাচ্চা কাজ করছে মন দিয়ে। ওরা কেউ এসেছে মায়ের সঙ্গে কেউ বোনের হাত ধরে। নোংরা বোতলের মুখ খোলা, আর স্টিকার তোলাই ওদের কাজ।
ভাগ্যের পরিহাস, খেলার বয়সে ওরা কাজ করে দিনভর। অযত্নে আর অপুষ্টিতে তাদের বেহাল দশা। সারা শরীরে ময়লা লেগে হারিয়ে গেছে তাদের আসল চেহারাটুকুও!
উচ্চ সমাজ যখন সন্তানকে মানুষ করতে দামি স্কুলে দেওয়ার প্রতিযোগিতা করছে, তখন অপরপাশে সমাজের আরেক শ্রেণির মানুষ বেঁচে থাকার লাড়ায়ে সন্তানের সুন্দর শৈশবটুকুও দিতে ব্যর্থ! ছবির আড়ালে উঠে এলো সে কথা...।
বাংলাদেশ সময়: ০০০০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
আইএ