ঢাকা: রাজধানীর আশপাশের অনেক জায়গাতেই গড়ে উঠেছে উচ্ছিষ্ট প্লাস্টিক বোতল থেকে কাঁচামাল তৈরির কারখানা। পুরান ঢাকার লালবাগ বেড়িবাঁধ, হাজারিবাগ, কামরাঙ্গীর চর ছাড়াও উত্তর ঢাকার কিছু জায়গায় রয়েছে এই কারখানা।
উত্তর ঢাকার ভাটারার বেরাইদের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময় বাম পাশে দেখা যাবে একটি ঘরে স্তূপ করে রাখা প্লাস্টিকের খালি বোতল। কয়েকজন বসে বোতল থেকে কাগজের লেবেল আলাদা করছেন; তারপর বোতল থেকে ছিপি খুলে রাখছেন। একই রঙের বোতল একসঙ্গে বস্তায় ভরা হচ্ছে। সাইনবোর্ডে নাম লেখা ‘মুন লাইট পেট ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রি’।
প্রথমেই কথা হয় কারখানাটির প্রোডাকশন ম্যানেজার মনিরুল ইসলাম শাহানের সঙ্গে। তিনি জানান, ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে বোতল সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন এখানে। এগুলো তারা ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে কেনেন। পরিষ্কার করা বোতলগুলো কারখানায় পাঠান। এতে কেজিপ্রতি পান ৭০ থেকে ৭৫ টাকা। রঙ্গিন বা সবুজ রঙের বোতলের দাম একটু বেশি।
সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটির সম্পর্কেও বলেন প্রোডাকশন ম্যানেজার শাহান। প্রথমে একই রঙের বোতলগুলোর মধ্যে অন্য কোনো রঙের বোতল আছে কিনা, তা যাচাই করা হয়। সংগৃহীত বোতলগুলোর লেবেল কেটে বাছাই করার পর দেওয়া হয় কাটার মেশিনে। পরে দেওয়া হয় টুকরো (ফ্লেক্স) করার জন্য, তারপর ওয়াসিং মেশিনে সোডা ও ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ফ্লেক্সগুলো ধোয়া হয়।
কথা হয় মরিয়ম জাহান নামে একজন কর্মীর সঙ্গে। তিনি জানান, তারা কাজ করেন প্রোডাকশনের। এখানে তিনি বোতল বাছাই করে লেবেল খুলে আলাদা করে একটি বস্তায় ভরেন। বস্তাপ্রতি পান ৪৬ টাকা। দিনে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা আয় হয়।
রফিক মিয়া মাসিক আড়াই হাজার টাকা মজুরিতে বোতল ওয়াশিংয়ে কাজ করেন। তার সঙ্গে আরও কাজ করছেন জব্বার, আনোয়ার ও ইদ্রিস। ফেলনা বোতল নিয়েই তাদের কাজ।
পাশেই দেখা যায় শিশু লালনকে। মার সঙ্গে কাজ করতে এসে ঘুমিয়ে পড়েছে নোংরা ঝুড়ির উপরেই। কর্তৃপক্ষ কর্মপরিবেশ খুব ভালো দাবি করলেও কারখানার ভেতরে নোংরা পরিবেশে শিশু শ্রমও লক্ষ্য করা যায়।
এ বিষয়ে বিস্তারিত পড়ুন বাংলানিউজের সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট নূর এ আলমের ফটোস্টোরি ‘প্লাস্টিকে মোড়ানো শৈশব’ !
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৬
আইএ