লাউয়াছড়া, শ্রীমঙ্গল থেকে ফিরে: বানরের দল মুখ ভেংচিয়ে স্বাগত জানালো মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া সংরক্ষিত বনে। বিপন্ন উল্লুকের ডাক শুনে বনের রাস্তায় থেমে দাঁড়াতেই ভেংচিকাটা শুরু করলো তারা।
বনে ঢুকে এক ঝলক উল্লুকের চেহারা দর্শন করে গা ভর্তি জোঁক নিয়ে ফেরার সময় লম্বা গাছে বসে ফল খেতে দেখা গেলো সেই বানরদলকে।
তাদের ডিসটার্ব না করে বিট অফিসের পাশের বাংলোতে যেতে চোখে পড়লো অদ্ভুত এক দৃশ্য। বাংলোর টিলার রাস্তার দু’পাশজুড়ে গোটা ত্রিশেক বানরকে দেখা গেলো এ-গাছ থেকে ও-গাছে ছোটাছুটি করতে। কয়েকটি বাচ্চা ছিলো দলে।
কাঁঠাল আর ডেউয়া ফল সদৃশ টক স্বাদের চাম কাঁঠালের গন্ধ মৌ মৌ করছিলো বনজুড়ে। একটি মধ্যম আকৃতির কাঁঠাল গাছে মাঝারি আকৃতির একটি বানরকে দেখা গেলো কাঁঠাল ভেঙে খেতে।
গাছের মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়া! মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাওয়ার প্রবাদটি মনে করিয়ে দিলো বানরটি।
ছবি তুলতে থাকলেও কোনো বিকার নেই তার! মাঝে মধ্যে বরং পোজ দিচ্ছিলো ছবির জন্য। কাঁঠালটির ঠিক মাথায় বসে মুখের কাছ থেকে ভেঙে কোয়া বের করে খেতে শুরু করলো সে।
জ্যৈষ্ঠ-আষাঢ়ে তাদের জন্য বনে অফুরন্ত খাবার। ফলের মধ্যে কাঁঠাল আর চাম কাঁঠালই প্রধান। রাস্তা, বন সবখানে ছঁড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কাঁঠাল আর অবশিষ্টাংশ দেখে সেটা বুঝতে অসুবিধা হলো না।
এ ধরনের দৃশ্য সবসময় দেখা পাওয়া দুষ্কর। যতক্ষণ সেখানে ছিলাম বানরটি একমনে খেতেই থাকলো। একটু পরেই যোগ হলো আরও একটি।
সে অবশ্য নতুনটায় চেষ্টা না করে অন্য একটি খাওয়া কাঁঠালেই মুখ লাগালো। অন্যরা তখন পাশের আম, চাম কাঁঠাল আর কাঁঠাল গাছে বাঁদরামি করছে।
মানে ডাল ভাঙছে, এক ডাল থেকে অন্য ডালে করছে লাফালাফি। তবে খাওয়ার ধ্যান ভাঙলো না বানর দু’টির। পাশের অন্যরা তাকিয়ে দেখলো, এলো না খেতে।
বোঝা গেলো বনে এই মুহূর্তে তাদের খাবারের অভাব নেই। বেশ ভালোই দিন কাটছে তাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২৪ ঘণ্টা, জুন ২২, ২০১৬
এএ