ঢাকা: পারিবারিক দ্বন্দ্বে বা কলহে প্রায় সময় সব ভুলের দায় গিয়ে পড়ে বয়সে ছোটদের কাঁধে। ভুল ছোটদেরই হবে এমন কোনো কথা নেই।
কতোটা ছোট সে
পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বয়সের বিভিন্ন তারতম্য থাকে। ব্যাপক তফাৎ থাকতে পারে আপনার সন্তান ও আপনার বয়সে। পরিবারের ছোট সদস্যটি বয়সে আপনার ছোট, কিন্তু সামাজিক ও মানসিকভাবে তার ম্যাচিউরিটি কতোটা এসেছে তা ভাবতে হবে। কারণ আজীবন সে বয়সে আপনার ছোটই থাকবে। তবে সামাজিকভাবে সে প্রতিনিয়তই বেড়ে উঠছে।
আত্মসম্মানবোধ তারও রয়েছে
সাধারণত একটি ছেলে বা মেয়ের ১১-১২ বছর বয়স বা তারও আগে অাত্মসম্মানবোধ ও অপমানবোধ তৈরি হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে কারও সামনে বকাঝকা করলে বা গায়ে হাত তুললে তা তাদের আত্মসম্মানে আঘাত হানে। বড়দের উচিত বয়স, মানসিকতা, সময় ও পরিবেশ বুঝে ছোটদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সমোঝোতা করা।
মত প্রকাশের সুযোগ দিন
ছেলে বা মেয়ে বড় হওয়ার সময় কোনো বিষয়ে তাদের ব্যক্তিগত অনুভূতি ও মত প্রকাশের সুযোগ করে দেওয়া উচিত। প্রয়োজন বুঝে উৎসাহিত করা উচিত। তুমি ছোট, তুমি বোঝো না, তোমার চেয়ে জীবন অনেক বেশি দেখেছি, এসব না বলে তাদের মধ্যে শক্তপোক্ত জীবনবোধ তৈরি করে দেওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ সে বড় হচ্ছে, সামাজিক মর্যাদা পাচ্ছে। সামাজিক চাহিদা ও বয়স হারে মানসিক চাহিদাও বাড়ছে। হয়তো স্কুল বা কলেজে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্তও নিচ্ছে। সেখানে পরিবারে তাকে বারবার ছোট ও অবুঝ বললে তার মধ্যে কনফিডেন্স তৈরি হবে না। যা ভবিষ্যতে সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে।
১.
নেতিবাচক কথা কম বলুন
কথায় ‘না’ এর আধিক্য তার স্বনির্ভরতায় ও সিদ্ধান্ত তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নেতিবাচক মন্তব্য, প্রায় কাজে নিষেধাজ্ঞা হীনমন্যতা ও দুর্বল চিত্তের অধিকারী করে গড়ে তুলতে পারে আপনার সন্তানকে। একটি কথা মাথায় রাখুন, সে ছোট বলে তার সবকাজ ভুল হবে এমনটি নয়।
সন্তানকে পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে ভাবুন
পরিবারে বাবা-মা, ভাই-বোন এই সম্পর্কগুলো আদর্শগত। অভিভাবকের কাছে ছেলেমেয়েকে সন্তান ছাড়া একজন স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে বিচার করা একটু কঠিন। চেষ্টা করুন, একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে আপনার সন্তান ঠিক কাজ বা আচরণ করছে কিনা। যদি তাই করে তাহলে ভাবছেন কেন!
সময়ের সঙ্গে হাঁটুন
প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে আমাদের জীবন ও চাহিদা। আপনার সময় দিয়ে সন্তানকে সবসময় বিবেচনা করা ঠিক নয়। জীবনের মূল কাঠামো ঠিক রেখে সন্তানকে সৎভাবে জীবনযাপন করতে শেখানোই মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। কারণ একেক জনের জীবন একেক রকম। নিজের জীবনের কোনো অংশ দিয়ে অন্যের জীবন নিয়ন্ত্রণ করাটা অপেক্ষাকৃত ভুল পদ্ধতি।
সন্তানকে সুপথে পরিচালনা করতে শাসন একটি বিশেষ প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াটি আপনি কীভাবে পরিচালনা করছেন তার ওপর নির্ভর করবে এর সুফল ও কুফল। ইতিবাচক ও সহজ ভঙ্গিই হোক প্রকৃত শাসন।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০১৬
এসএমএন/এইচএ/