ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

দুষ্প্রাপ্য পাহাড়ি আলু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৭
দুষ্প্রাপ্য পাহাড়ি আলু শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি অঞ্চল থেকে সংগৃহীত পাহাড়ি আলু-ছবি-বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার): মাটির বুকে বন্দি হয়ে থাকে পাহাড়ি আলু। অন্যান্য কৃষিজাত পণ্যের মতো সেও মাটির পরম মমতায় লালিত। পাহাড়ি মাটির অন্তঃপুরে তার জন্ম, সেখানেই একটু একটু করে বেড়ে ওঠা। 

মাটিনির্ভর অন্য সবজিগুলো দৃশ্যমান হলেও সে থাকে মাটির বুকের গহীনে, বহু নিচে।   

সাধারণ আলুর চেয়ে এরা আকৃতিতে বেশ স্থূলকায়।

শরীরে রয়েছে অনেক অসম অংশ। এই পাহাড়ি আলু আজ আর সহজলভ্য নয়। এক সময় পাহাড়ি এলাকায় পাওয়া গেলেও বন, পাহাড় উজাড় হওয়ায় বর্তমানে এটি বিলুপ্ত প্রায়।

পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা হঠাৎ হঠাৎ এর সন্ধান পান। আর যারা এটি চেনেন বা এর উপকারিতা সম্পর্কে জানেন তারা এই মৃত্তিকা সবজির জন্য প্রচণ্ড আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মাটি থেকে তোলা মাত্রই পাহাড়ি এলাকার মানুষেরা এর স্বাদ নিতে কিনে নিয়ে যান।  

পাহাড়ি আলুটি মাটির বহু নিচে থাকলেও তার একটি সংযুক্ত লতা উপরে উঠে আসে। যারা চেনেন তারা এই লতা দেখেই বুঝতে পারেন ভেতরে পাহাড়ি আলুর খনি আছে। তারপর মাটি খুঁড়ে এটি সংগ্রহ করা হয়।     

সোমবার (০৬ মার্চ) দুপুরে লাখাইছড়া চা বাগানের পাহাড় থেকে চা শ্রমিকরা মাটি খনন করে নিচ থেকে প্রায় পাঁচ-ছয় কেজি পাহাড়ি আলু সংগ্রহ করেছেন। সংগ্রহের কিছুক্ষণের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়।  

ওইদিন দুপুরে লাখাইছড়া চা বাগানে গিয়ে দেখা যায়, এলাকাবাসী বচো কন্দের উঠোনে রয়েছে নিজের জন্য সংগ্রহ করা দু’টি পাহাড়ি আলুর অংশ। অনেকেই যার যার প্রয়োজন মতো নিয়ে গেছেন।  

ওই এলাকার অধিবাসী মধু তাঁতি বলেন, এই পাহাড়ি আলু এখন দেখা যায় না। আগে প্রায়ই পাওয়া যেতো। এক কোমড় মাটির নিচে থাকে এটি। এই আলু খেতে খুবই সুস্বাদু। আর বেশ উপকারী। আমরা একে ‘সুতনি আলু’, ‘খামালু’ প্রভৃতি বলি।   

তিনি আরও বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় আমার বয়স ছিল ১৩ বছর। সে সময় দেশে পর্যাপ্ত খাবার ছিলো না। আমাদের অনেকে তখন এই পাহাড়ি আলু খেয়ে জীবন বাঁচিয়েছে।  

এর উপকারিতা জানতে চাইলে মধু তাঁতি বলেন, পাহাড়ি আলু সাধারণ আলুর মতো নয়। এটি শক্তিবৃদ্ধি করে ও ক্ষুধামন্দা দূর করে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৭ 
বিবিবি/আরআর/জেডএস
 


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।