ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

পঞ্চাশ বছর বয়সে নিজের নাম লিখতে শেখা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৭
পঞ্চাশ বছর বয়সে নিজের নাম লিখতে শেখা পঞ্চাশ বছর বয়সে নিজের নাম লিখতে শেখা ছবুরা বেগমের, ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: ছবুরা বেগম। ফেনী শহরের নাজির রোড় এলাকার শেখ বাড়ির বাসিন্দা তিনি। বয়স পঞ্চাশ বছর শেষ প্রায়। এক জীবনের বেশিরভাগ সময়ই হয়ত পার করে ফেলেছেন তিনি! কিন্তু এখনও নিজের নামটিই লিখতে জানেন না।

শেষ বয়সে নিজের হাতে নিজের নামটি লেখার সুযোগ করে দিয়েছে স্বেচ্চাসেবী সংগঠন পথের পাঠশালার সাক্ষরতা অভিযান প্রকল্প ‘আঁই টি সই করি ন’ (আমি টিপ সই করিনি)।

এমন গল্প শুধু একটা নয়- প্রথমদিন মঙ্গলবার (০৯ মে) ফেনী পৌরসভার ৯৫ জন নিরক্ষর মানুষকে সাক্ষরতার আওতায় এনেছেন প্রকল্পের সদস্য তরুণ-তরুণীরা।

এ বয়সে নিজের নামটি লিখতে পেরে বেশ খুশি নিরক্ষর মানুষগুলোও। আর এ হাসিমাখা মুখগুলো দেখার জন্যেই গ্রীষ্মের প্রখর রোধে হেঁটে হেঁটে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে একদম বিনামূলে স্বেচ্ছাশ্রম দিচ্ছেন অর্ধশতাধিক স্বেচ্ছাসেবী।

প্রকল্পের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে ঘুরে দেখা যায়, আবদুল ওয়াহাব হাওলাদার- তার বাড়ি বাগেরহাট  জেলায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফেনী শহরে রিকশা চালান। থাকেন নাজির রোড় এলাকায়। বয়স চল্লিশ পেরিয়ে গেছে বহু আগে। তিনিও নিজের নাম লিখতে পারেন না।
পথের পাঠশালার সাক্ষরতা অভিযান
নাম লিখতে না পারায় তার আক্ষেপেরও শেষ নেই। সরকারি-বেসরকারি কোনো দরকার হলে টিপসই দিতে হয়। এটি তার কাছে খুবই অপমানজনক। পথের পাঠশালার উদ্যোগে নিজের নামটি লিখতে শিখতে পেরে তিনিও আপ্লুত।

এভাবে ফেনী পৌরসভার ০৯নং ওয়ার্ডে নিজের নাম লিখতে শিখেছেন নূর জাহান (৬০), শেখ ফরিদ রহমান (৫০), ইমাম হোসেন (২৫), জোৎস্না বেগম (২৫), রোখসানা বেগম (৫৫), উজ্জ্বল আলী (৩৫), আবদুল হকসহ (৬৫) ৯৫ জন নিরক্ষর।

প্রথমদিনে প্রকল্পের সমন্বয়ক সাজ্জাদ হোসেন দীপু ও সহকারী সমন্বয়ক ফখরুল ইসলাম ফাহাদ, পথের পাঠশালার সদস্য সীমান্ত চৌধুরী, ব্লাড ডোনার হেল্পের সংগঠক মাহবুবুর রহমান ফাহাদ, রোটারেক্ট ক্লাব অব ফেনী অপূর্ব’র সদস্য ফরহাদ উদ্দিন ভূঞাঁ, পথের পাঠশালার শওকত চৌধুরী, আমরাই আগামীর নবীন এসজে অপু, রক্ত কনিকার মুসা ফারভেজ ও মাস্তুল ইয়ুথের সংগঠক ওসমান গনী রাসেলের নেতৃত্বে ৮টি গ্রুপে কাজ করছেন অর্ধশত স্বেচ্চাসেবী।

সার্বিক সহযোগিতায় রয়েছে ফেনী জেলা প্রশাসন, ফেনী পৌরসভা ও রোস্তোরাঁ মালিক সমিতি, ফেনী।
পথের পাঠশালার সাক্ষরতা অভিযানপ্রথমদিন স্বেচ্চাসেবীদের দুপুরের খাবারের আয়োজনে ছিল শহরের এসএসকে রোড়স্থ গার্ডেন রেস্টুরেন্ট।

প্রকল্পের সমন্বয়ক সাজ্জাদ হোসেন দীপু বাংলানিউজকে জানান, প্রত্যেক নিরক্ষরকে প্রথমদিন দেওয়া হয়েছে কাগজের পৃষ্ঠা ও একটি কলম। সেইসঙ্গে তার নাম লেখা একটি প্রিন্ট আউট পেপার। তাকে সাহায্য করবেন- এমন একজন সহায়তাকারী।

‘আঁই টিপসই করি ন’ কর্মসূচি শুরু
তারুণ্যের উচ্ছ্বাস দূর করবে নিরক্ষরতা
আঁই টিপসই করি ন
পথের পাঠশালায় প্রেরণার গল্প


বাংলাদেশ সময়: ২১৩৬ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৭
এসএইচডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।