ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

অবৈধ শিকারে বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে বনরুই

ফিচার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৭
অবৈধ শিকারে বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে বনরুই অবৈধ শিকারে বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে বনরুই

ঢাকা: বাংলাদেশে প্যাঙ্গোলিনের স্থানীয় নাম বনরুই। চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্যে ত্বকে বড় বড় আঁশযুক্ত এ প্রাণীটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় বিলুপ্তির পথে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন গবেষকরা।

বাংলাদেশের ম্রো নৃ-গোষ্ঠীর সহায়তায় সম্প্রতি গবেষকরা বিরল প্রজাতির প্রাণী বনরুইয়ের সন্ধান পেয়েছেন। দেশের কিছু জনবিরল অঞ্চলে খুব অল্পসংখ্যক বনরুই আজও বেঁচে আছে।

লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে সম্প্রতি বনরুইয়ের দেখা পাওয়া গেছে বলে জানান গবেষক দলের প্রধান স্কট ট্রেজাসার।

ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্সের ডিরেক্টর স্কট ট্রেজাসার বলেন, এ প্রাণীগুলো জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে ভালোবাসে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বের লাউয়াছড়াই আমাদের গবেষণার প্রধান অঞ্চল। কিন্তু বছরখানেক জরিপ চালিয়েও আমরা বনরুই খুঁজে পাচ্ছিলাম না। সম্প্রতি আমরা কিছুসংখ্যক বনরুইয়ের দেখা পেয়েছি এবং আমাদের গবেষণার পরিধি আরও বিস্তৃত করেছি।

গবেষণায় পাওয়া কিছু কিছু তথ্য বিস্মিত করে গবেষকদের। বাংলাদেশে আগে যে প্রজাতির বনরুইয়ের দেখা পাওয়া যেত তা ভারতী বনরুই এবং এ প্রজাতিটি ইতোমধ্যেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশে সম্প্রতি যে বনরুই দেখা গেছে তা চীনা প্রজাতির। বর্তমানে এ প্রজাতিটিও বিলুপ্ত প্রায়।  

নীরব স্বভাবের এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির আঁশের মূল্য বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জীবনও বিপন্ন হয়ে পড়ে। অবৈধ শিকারিদের কারণে গোটা বিশ্ব থেকে বনরুই আজ বিলুপ্তির পথে।

অবৈধ শিকারে বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে বনরুই

ম্রো উপজাতিদের থেকে পাওয়া তথ্য মতে, ২০০৮ সালে এক কেজি বনরুইয়ের আঁশের মূল্য ছিল বাংলাদেশি টাকায় ৮শ টাকা। ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে এর মূল্য গিয়ে দাঁড়িয়েছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। ফলে দিনে দিনে শিকারির সংখ্যাও বাড়ছে।

একজন ম্রো শিকারির সঙ্গে কথা হয় গবেষকদের। তিনি একাই ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট ৩২টি বনরুই শিকার করেছেন। গবেষকরা মনে করেন, আঁশ সংগ্রহের জন্য প্রচুর সংখ্যক বনরুই হত্যা করা হয় এদেশে। এটাই এদের বিলুপ্তির প্রধান কারণ।

বিরল এ প্রাণী নিরিবিলি পরিবেশে বসবাসে অভ্যস্ত। এর সম্পর্কে ধারণা কম থাকায় প্রাণীটির সংরক্ষণেও সাধারণ মানুষের ভূমিকা রাখা দুঃসাধ্য।

বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৭
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।