খুব অল্প সময়ের মধ্যে অসংখ্য প্রযুক্তি উদ্ভাবিত হয়েছে মানবমস্তিষ্ক থেকে। সম্প্রতি উদ্ভাবিত কিছু প্রযুক্তি সভ্যতার ভবিষ্যৎ চিত্রে আনতে চলেছে অভাবনীয় ভূমিকা।
১. হাইপারলুপ ট্রেন
আইডিয়াটা এসেছে এ যুগের একজন প্রথমসারির উদ্ভাবক এলন মাস্কের মাথা থেকে। যাতায়াত ব্যবস্থায় অভাবনীয় গতি আনবে এ প্রযুক্তি। এটি মূলত এক প্রকার বায়ুশূন্য টিউব। এর ভেতর দিয়ে চৌম্বক শক্তি কাজে লাগিয়ে প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলতে পারবে ট্রেন। এতে হাজার মাইল পাড়ি দিতে লাগবে এক ঘণ্টারও কম সময়। আবুধাবি ও যুক্তরাষ্ট্রে এরইমধ্যে শুরু হয়েছে হাইপারলুপ ট্র্যাক (যে টিউবের মধ্যে দিয়ে ট্রেন ছুটে চলবে) নির্মাণের কাজ।
২. নিউরোমরফিক চিপ
মানব মস্তিষ্কের আর্কিটেকচার অনুকরণে তৈরি হচ্ছে নিউরোমরফিক কম্পিউটিং চিপ, যা কাজ করবে মানব মস্তিষ্কের মতোই। এর মূল লক্ষ্য হার্ডওয়্যারের গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে ভিন্ন ও মৌলিকভাবে তথ্য প্রসেস করা। এর মাধ্যমে কম্পিউটার পারবে মৌলিকভাবে চিন্তা করার ক্ষমতা। এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সকে (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) নিয়ে যাবে অনন্য উচ্চতায়।
৩. ভার্চুয়াল রিয়েলিটি হেডসেট
বর্তমান প্রযুক্তি বাজারে একটি আলোচিত নাম ভিআর (ভার্চুয়াল রিয়েলিটি) হেডসেট। এ হেডসেট চশমার মতো করে চোখের সঙ্গে স্থাপন করে প্রবেশ করা যায় ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জগতে। এটি নিয়ে যাবে এমন এক জগতে যা বাস্তবতার একদম কাছাকাছি, কিন্তু ব্যবহারকারীকে স্বশরীরে সেখানে যাওয়ার দরকার নেই। বর্তমানে মূলত ভিডিও গেমের জন্য ব্যবহৃত হলেও, একবার কল্পনা করুন আরও ১০ বছর পর এ প্রযুক্তি আমাদের কোথায় নিয়ে যাবে!
৪. ভার্টিকাল ফার্ম
পৃথিবীতে প্রায় ৭০০ কোটি মানুষের বসবাস। যে গতিতে জনসংখ্যা বাড়ছে, সেই তুলনায় বাড়ছে না আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ। ফলে নিকট ভবিষ্যতে বিশ্বে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। আর এ সংকট মোকাবিলা করবে ভার্টিক্যাল ফার্ম। উলম্বকাঠামোর মধ্যে মাটি ও সূর্যের আলো ছাড়াই ফসল উৎপাদনের পদ্ধতি এটি। এর মাধ্যমে বহুতল স্থাপনার মাধ্যমে অল্প স্থানে অনেক বেশি কৃষিপণ্য আবাদ করা সম্ভব।
৫. অর্গানিক রেডিকাল ব্যাটারি
ভবিষ্যতের জ্বালানি চাহিদা মোকাবিলা করার জন্য বিজ্ঞানীরা বিশেষ ধরনের ব্যাটারি তৈরির পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। কারণ যুগের সঙ্গে সঙ্গে জালানি চাহিদাও বাড়বে ব্যাপক হারে। এখনকার মোবাইল ফোনগুলোতে আগের তুলনায় বেশি চার্জ প্রয়োজন হয়। ভবিষ্যতের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও রোবটিক্সের প্রসারের জন্য দরকার হবে বিপুল পরিমাণ শক্তির। আর তা সরবরাহ করবে অর্গ্যানিক রেডিকাল ব্যাটারি। এ ধরনের ব্যাটারি প্রথম তৈরি হয় ২০০৫ সালে। তবে তা এখনও বাজারে আসেনি।
৬. থ্রি-ডি প্রিন্টিং
থ্রি-ডি প্রিন্টিংয়ের কার্যকারিতা প্রায় সীমাহীন বললেও ভুল হবে না। এটিকে বলা হয় প্রযুক্তি জগতের স্বর্ণখনি। ডিজিটাল ডিজাইন বা স্ক্যান থেকে বস্তুর ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করা হয় এতে। বর্তমান সময়ে এই প্রযুক্তি ওপেন সোর্স হয়ে যাওয়ায় খুব দ্রুত এর বিকাশ ঘটছে। আজ থেকে ৫০ বছর পর হয়তো এ প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সুস্বাদু পিজ্জা তৈরি সম্ভব হয়ে উঠতে পারে।
৭. চটপটে রোবট
বিজ্ঞানীরা এমন যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যা উঁচুনিচু আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে দ্রুতগতিতে হাঁটা-চলা ও দৌড়-ঝাপ দিতে পারে। তবে ভয়ের ব্যাপার হলো, মানুষ ও বিভিন্ন প্রাণীর দেহ অনুকরণে তৈরি এসব রোবট ভবিষ্যতে যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক বিধ্বংসী হয়ে দেখা দিতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩১০ ঘণ্টা, মে ১০, ২০১৮
এনএইচটি/এএ