‘নজরুল: চিরবিদ্রোহী’ শীর্ষক একক বক্তৃতায় এমনটাই বলছিলেন প্রাবন্ধিক, সমালোচক ও গবেষক অধ্যাপক মোরশেদ শফিউল হাসান (হাসান শফি)। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে একক বক্তৃতার এ আয়োজন করে বাংলা একাডেমি।
বৃহস্পতিবার (২৪ মে) সকাল ১১টায় একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে এ বক্তৃতার আয়োজন করা হয়।
হাসান শফি বলেন, মানুষই ছিল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের মর্মকথা। তার জীবন বিদ্রোহের আভায় স্নাত, বিচিত্র ও বর্ণাঢ্য। কবিতায় তিনি নতুন স্বরের উদ্গাতা, গদ্যে মননের সাধক, সংগীতে ধ্রুপদী ও লোকধারার সার্থক সেতুবন্ধকারী। এখানেই শেষ নয়, বেতার ও চলচ্চিত্রের জগতে তিনি ছিলেন স্বচ্ছন্দবিহারী।
নজরুলের ব্যক্তিত্ব ও সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে বক্তা বলেন, ব্যক্তিত্বের অনমনীয় দৃঢ়তায় নজরুল যেমন সাম্রাজ্যবাদ ও অসাম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, ঠিক তেমনি সমকালীন সমাজের হিন্দু ও মুসলিম সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে নিজের জীবন ও সাহিত্য দিয়ে বিদ্রোহ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তার মতো অসাম্প্রদায়িক মানুষ খুঁজে পাওয়া বিরল। আবার সাহিত্যে ও সংগীতে প্রগতির কণ্ঠে তিনি নিজ সম্প্রদায়ের মুসলমানদের জাগিয়ে দিয়ে গেছেন।
একক বক্তৃতার এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল কাইউম। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলা একাডেমির সচিব ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন।
স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, নজরুল ছিলেন হিন্দু-মুসলমানের মিলনের প্রতীক। ধর্মের নামে বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন সদা-সোচ্চার।
আবদুল কাইউম বলেন, নজরুলের জীবন এক বিদ্রোহ, এক বিস্ময়। ধরাবাঁধা জীবন ও সাহিত্যধারার বিপরীতে তিনি প্রাণের উদ্দাম আবেগে সামনে এগিয়ে চলেছেন। একই সঙ্গে আমাদেরও দিয়েছেন সামনে চলার দিশা।
বক্তৃতা অনুষ্ঠান শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নজরুলগীতি পরিবেশন করেন শিল্পী লীনা তাপসী খান। এ সময় যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন পিনু সেন দাস (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি) এবং ডালিম কুমার বড়ুয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৭ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৮
এইচএমএস/এমজেএফ