কানাডার লাব্রাডোর উপকূলে নৌকা নিয়ে মাছ ধরে বেড়াচ্ছিলেন মালোরি, ক্লিফ ও অ্যালান। লাব্রাডোর সাগর পার হলেই বরফের রাজ্য গ্রিনল্যান্ড।
হঠাৎ দূরে একটি মাশরুমের মতো আকৃতির আইসবার্গের ওপর সাদা রঙের একটি প্রাণীর দেখা পেলেন তারা। দূর থেকে সেটাকে একটি সিলের মতো মনে হচ্ছিল। আইসবার্গের আরও কাছে গেলে আশ্চর্যের সীমা রইলো না তাদের। সেখানে বসে আছে সাদা রঙের একটি শিয়াল। একে বলা হয় আর্কটিক শিয়াল বা মেরু শিয়াল।
এই একাকী শিয়ালটি মাঝ সাগরে ভাসতে থাকা আইসবার্গের ওপর কিভাবে এলো ভেবে পায় না কেউ। তাছাড়া এই বিরল প্রাণীটাকে কখনও স্বচক্ষে দেখনি তারা। দেখে মনে হচ্ছিল সি-গালের আক্রমণের ভয়ে লুকাতে চাইছিল প্রাণীটি। বেশ কিছুদিন ধরে অভুক্ত, হাড্ডিসার দেহটা দেখে বলে দেওয়া যায় সেটাও।
প্রাণীটাকে এভাবে মৃত্যুর মুখ থেকে বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন তারা। আইসবার্গের ওপর নেমে ক্ষুধার্ত, ভয়ার্ত শিয়ালটিকে নিয়ে নৌকায় তুলে আনেন মালোরি।
নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনায় মালোরি বলেন, প্রথমে প্রাণীটা আমাদের থেকে পালানোর চেষ্টা করছিল। অনেক কষ্টে আমরা তাকে নৌকায় নিয়ে যেতে পেরেছি। আইসবার্গের বেশ কিছু অংশ ভেঙে, জাল বিছিয়ে তাকে ধরতে হয়েছে আমাদের।
নৌকায় তোলার পর শীতে কাঁপতে থাকা শিয়ালটির জন্য নরম বিছানা তৈরি করে দিলেন জেলেরা। প্রথম ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা কিছুই খেল না। চিপস দেওয়া হলো, স্ন্যাকস দেওয়া হলো, কিন্তু কোনোটাই মুখে রুচলো না তার। ফেরার পথে বেশিরভাগ সময়ই সেখানে ঘুমিয়ে কাটাল সে। ঘুম থেকে উঠে ভিয়েনা সসেজটা খুব পছন্দ হয়ে গেল তার। খাওয়ার পর বেশ শান্ত দেখাচ্ছিল প্রাণীটাকে।
শুকনো জমিতে ফিরে শিয়ালটিকে প্রকৃতিতে অবমুক্ত করে দিলেন মালোরি। প্রাণীটি উদ্ধারের মুহূর্তের বেশ কিছু ছবি তুলে রেখেছিলেন তিনি। এই তিন হৃদয়বান জেলের সহজ ও ছোট্ট একটি পদক্ষেপের কারণে প্রাণে বেঁচে যায় প্রাণীটি। উইলিয়াম হার্বারের কিছু পরিত্যক্ত বাড়ির আশেপাশে শিয়ালটিকে প্রায়ই ঘুরে বেড়াতে দেখেন মালোরি।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৩ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৮
এনএইচটি