ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

সমসাময়িক নৃত্য উৎসবে সমকালীন জীবন চিত্র

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
সমসাময়িক নৃত্য উৎসবে সমকালীন জীবন চিত্র ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বাংলাদেশি তরুণ সমসাময়িক নৃত্য পরিকল্পনাকারীদের তৈরি দশটি দলীয় এবং একটি একক নৃত্য পরিবেশনা নিয়ে শিল্পানুরাগী দর্শক-শ্রোতাদের কাছে অনুষ্ঠিত হলো মনোমুগ্ধকর এক নৃত্য সন্ধ্যা।

বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় গ্যোয়টে ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে একাডেমির নাট্যশালার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এই আয়োজন। এর আগে গ্যোয়টে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ তরুণ প্রতিভাবান নৃত্যশিল্পীদের নিয়ে নৃত্যের কোরিওগ্রাফি বিষয়ক একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

টমাস বুঞ্জারের সহায়তায় অনুষ্ঠিত সেই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশী নৃত্যশিল্পীরা পারফরম্যান্স করেন এই আয়োজনে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপিরচালক লিয়াকত আলী লাকী এবং গ্যোয়টে ইন্সটিটিউট বাংলাদেশের পরিচালক ড. কিরস্টেন হাকেনব্রোক। এসময় শিল্পের কোন দেশভাগ থাকেনা এবং এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে দু-দেশের নৃত্যশিল্পেই উন্নয়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

আয়োজনের শুরুতেই মেহরাজ হক তুষারের পরিবেশনাটির নাম ছিল ‘ট্রাস্ট’ বা ‘বিশ্বাস’। এতে তিনি বিশ্বাস এবং বন্ধন এর এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটিয়েছেন। পারভীন সুলতানা কলি পরিবেশন করেন ‘ইমপ্রিজনড ফ্রিডম’ বা ‘অবরুদ্ধ স্বাধীনতা’ নামের নাচ। এতে মূলত নারীদের স্বাধীণতার বিষয়টি ফুটে ওঠে। আরিফুল ইসলাম অর্ণব পরিবেশন করেন ‘এ স্ট্রাগলিং আইডেনটিটি’ বা ‘একটি সংগ্রামী পরিচয়’ শিরোনামের নৃত্য। এই নৃত্যের মধ্য দিয়ে সমাজে অবহেলিত হিজড়া বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের মনের অভিব্যক্তি এবং বাহ্যিক আচরণ তুলে ধরেন তিনি। মৌমিতা জয় রায়ের পরিবেশনাটি ছিল ‘রিলিজিওন-এ কজ অব কনফিক্ট ইন কালচার’। অনেন্দিতা খান পরিবেশন করেন ‘রিফিউজিস’ নামের নৃত্য। এ নৃত্য দুটিতে মূলত সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং নিজেদের মধ্যকার বিরুপ ভাবকে ফুটিয়ে তোলা হয়।

এরপরের পরিবেশনার শিরোনাম ‘রাশ’। যার অর্থ ‘নলখাগড়া’। কোরিওগ্রাফার তাহনুন আহমেদী মূলত একজন নৃত্যশিল্পী হিসেবে দেশের বর্তমান সমাজের সঙ্গে বেড়ে উঠার নানা প্রতিকূলতা তুলে ধরেছেন শিল্পী। সুদেঞ্চা স্বয়ম্প্রভার পরিবেশনার নাম ‘শী’। ঘুরেফিরে এখানে সমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্যের নানা বিষয় উঠে এসেছে। ‘ট্রাই নট টু ক্রাই’ পরিবেশনায় মো. ফরহাদ আহমেদ ছেলে শিশু এবং ছেলেরা কীভাবে নানা অপব্যবহারের শিকার হয় তা তুলে ধরেছেন। ‘বন্ডিং অব সিভলিংস’ পরিবেশনায় বৃষ্টি বেপারী ভাইবোনদের বিচ্ছেদ ও মিলনের আনন্দ-বেদনার কাব্য তুলে ধরেন। ইয়াসিন আরাফাতের ‘ক্লাউডস’ পরিবেশনায় এসেছে মাদকের ভয়াবহতা। আর ‘ট্রু স্টোরি’তে স্নাতা শাহরীন তুলে ধরেন নারীর শারীরিক ও মানসিকতার নানা গল্প। আয়োজনের প্রতিটি পরিবেশনায় মূল শিল্পীর সাথে অংশ নেন একাধিক সহশিল্পী।

আর এই আয়োজনে অংশ নেয়া ১১ জন তরুণ নৃত্য পরিকল্পনাকারীগণ এই সময়ের বাংলাদেশের পরিবার, সমাজ, সংস্কৃতি, জীবন ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় তাদের নিজস্ব অনুভূতি আর চিন্তা ভাবনার মাধ্যমে নৃত্য শৈলিতে রূপদান করেছেন বলেই অভিমত দর্শক-শ্রোতাদের।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৯
এইচএমএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।