মৌলভীবাজার: হঠাৎ দেখলেই মনে হবে সবুজ রঙের কাঁচা কলা। পাকার আগের অবস্থায় ফলসম্ভারে থাকে ওই রঙের উপস্থিতি।
সম্প্রতি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পর্যটনস্পট মাধবপুর লেকে গিয়ে এক কলাবিক্রেতাকে পাওয়া গেল। নাম তার জয়রাম রবি দাস। মাধবপুর চা বাগানের চা শ্রমিক। তবে, এখন আর চা বাগানে কাজ করেন না জয়রাম। মাধবপুর লেক সম্পর্কে চা বাগান সূত্র জানায়, প্রায় ৫৭ বছর আগে চা আবাদের জন্য প্রচুর পানি ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ায় এখানের ৩টি টিলাকে বাঁধ দিয়ে ‘ডাম্প’ তৈরি করা হয়। এই মাধবপুর ডাম্পই পরবর্তীতে মাধবপুর হ্রদ বা মাধবপুর লেক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। এর আয়তন প্রায় ৫০ একর এবং দৈর্য্য প্রায় ৩ কিলোমিটার। প্রতি বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার সারাদেশ থেকে হাজার হাজার লোক এই মাধবপুর লেকের অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন।
মৌলভীবাজার জেলাকে পর্যটন জেলা হিসেবে ঘোষণা করায় বিগত কয়েক বছরে ধরে এখানকার মাধবপুর লেকে ব্যাপক সংখ্যা পর্যটকরা আসছেন। এর মাধ্যমে ছোট ছোট ভ্রাম্যমাণ প্রায় দুই ডজন ব্যবসাকেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে স্থানীয় দরিদ্র মানুষেরা সচ্ছলতার মুখ দেখছেন। তাদের একজনই জয়রাম। পাকা সবুজ কলা সম্পর্কে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এ ফলটিকে পাহাড়ের লোকজন লম্বি কলা নামে ডাকে। দেখতে কাঁচা মনে হলেও ভেতরে পাকা। সবাই কাঁচা কলা মনে করেন। কিন্তু আমি যখন বলি যে, এটি আসলে পাকা সবুজ কলা। তখনই আগত ক্রেতারা এটি কেনার জন্য দরদাম করেন। আমাদের চা বাগানের পাহাড়ি এলাকায় পাওয়া যায়। প্রতি কলার একদাম ২০ টাকা।
নিজের আয়-রোজগার সম্পর্কে তিনি বলেন, প্রায় আট বছর ধরে এখানে ছোট ব্যবসা করছি। দেশি ফল, পান, সিগারেট, বিস্কুট, মাস্ক এসব আমি বিক্রি করি। প্রতিদিন গড়ে ১শ টাকা থেকে আড়াই-তিনশ’ টাকা লাভ থাকে। এই দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাই। দুই ছেলে, এক মেয়ে নিয়ে আমাদের বুড়াবুড়ির সংসার।
দোকান সম্পর্কে বলেন, সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত এই দোকান খুলে রাখি। তারপর দোকানের টেবিলটি বাসায় নিয়ে যাই। পরের দিন আবার নিয়ে আসি। এভাবেই চলে আমার এই দোকান। করোনার জন্য দেড়-দুই বছর তো বাবু আমার আয় কিচ্ছুই হয়নি। মাঝেমধ্যে পরিবার নিয়ে অনাহারেও থাকি। তবে, এখন একটু ভালো আছি।
কলা এক ধরনের জনপ্রিয় প্রাকৃতিক ফল। এটি খেলে হজমশক্তি বাড়ে ও দৈহিক ওজন কমাতেও সাহায্য করে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২
বিবিবি/এএটি