বরিশাল: মিষ্টি খেতে ভালোবাসেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দায়। মানুষের হরেক রকমের পছন্দের কারণে দিন দিন মিষ্টির নামের তালিকাও বাড়ছে।
সম্প্রতি বরিশাল নগরে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করছে ‘কাঁচা মরিচের ঝাঁজে সবুজ রঙের রসগোল্লা’। এক কথায় যাকে ‘কাঁচা মরিচের গোল্লা’ বলা হচ্ছে। বরিশাল নগরের সকাল-সন্ধ্যা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের স্বত্ত্বাধিকারী বিশ্বজিৎ ঘোষ বিশু জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখে এবং ক্রেতাদের উৎসাহেই কাঁচা মরিচের ঝাঁজে সবুজ রঙের এই রসগোল্লা তৈরিতে আগ্রহী হন। প্রথম ছানা-সুগার ও কাঁচা মরিচের সমন্বয়ে এ মিষ্টি বানিয়ে পরিবার-আত্মীয়-স্বজন এবং উৎসাহদানকারীদের খাওয়ান। তাদের ইতিবাচক মতামত পেয়েই ‘কাঁচা মরিচের গোল্লা’ নামে নতুন ধরনের এ মিষ্টি বাজারজাত শুরু করেন।
তিনি বলেন, বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) প্রথমবারের মতো মাত্র ৩০ কেজি মিষ্টি ক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করি। ওই দিন দোকানে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব মিষ্টি বিক্রি হয়ে যায়। এই রসগোল্লা প্রতি পিস ২০ টাকায় বিক্রি করেছি। এ দোকানের স্টাফরা বলেন, প্রথম হওয়ায় এই রসগোল্লা খাওয়া নিয়ে ক্রেতারা বেশ আগ্রহী। দিন যত যাচ্ছে ক্রেতাদের ভিড় তত বাড়ছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ক্রেতারা মিষ্টি দোকানে বসে চেখে দেখছেন। মিষ্টিগুলো এরপর স্বাদ বুঝে ৩শ টাকা কেজি দরে কিনে বাড়িতেও নিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দোকানের ম্যানেজার তন্ময় রায়।
ছানা সংকটের কারণে ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এ মুহূর্তে কাঁচা মরিচের গোল্লা বাজারজাত করা সম্ভব নয় বলে জানান দোকান মালিক বিশ্বজিৎ ঘোষ বিশু।
নাজমুল নামে এক ক্রেতা বলেন, বরিশাল সাধারণ গৌরনদীর দধি-মিষ্টির জন্য বেশি বিখ্যাত। তার ওপর নিতাই, হক, শশীর মিষ্টিও বেশ বিখ্যাত। তবে, কাঁচা মরিচের মিষ্টি বিষয়টাই যেন কেমন। খবর শুনে তাই বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে এ মিষ্টি খেতে বিশু দা’র দোকানে চলে আসলাম। রঙের কারণে মিষ্টিগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও অন্যরকম লাগলো। যখন নতুন ধরনের এ মিষ্টি খেয়ে ভিন্নরকম ভালোলাগা কাজ করেছে তাই পরিবারের সদস্যদের জন্য কিছুটা নিয়ে নিলাম। আমিনুল ইসলাম আরেক ক্রেতা বলেন, সাধারণ মিষ্টির থেকে এটির স্বাদে ভিন্নতা রয়েছে। মিষ্টি ও ঝালের পাশাপাশি আরও কিছু আছে হয়তো, এর কারণে মিষ্টিগুলো বেশি স্বাদযুক্ত হয়েছে। এই ক্রেতার মতে রসগোল্লা, রসমালাই, লাড্ডু, কালোজাম অনেক বছর ধরে চলছে-তাই নতুনত্ব ক্রেতাদের মনে ধরেছে।
এদিকে সকাল-সন্ধ্যা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালিক বিশ্বজিৎ ঘোষ বিশু বলেন, আরেকটি নতুন মিষ্টি বাজারজাত করার চেষ্টা করছি। যা দেশের মধ্যে বরিশালেই প্রথম বাজারজাত হবে।
প্রসঙ্গত, কুমিল্লার একটি বেকারিতে দেশে প্রথম ঝাল রসগোল্লা তৈরি করা হয়। বিষয়টি বিভিন্ন গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয়। এরপর নেত্রকোনায় বালিশ মিষ্টির পাশাপাশি ঝড় তোলে সবুজ রঙের টক-ঝাল-মিষ্টি রসগোল্লা। যাদের দেখা-দেখি পটুয়াখালীর গলাচিপায় সবুজ রঙের ঝাল রসগোল্লা তৈরি করে নিপু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। তাও বেশ সাড়া ফেলে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায়। তাদের পর এবার বরিশাল নগরীর বিষু ঘোষ তৈরি করলেন কাঁচা মরিচের গোল্লা।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২২
এমএস/এএটি