‘বাজেরে বাজে ঢোল আর ঢাক
এলো রে পহেলা বৈশাখ
আজ কৃষ্ণচূড়ার ডালে
ঢেকেছে লালে লালে
সেই রঙ হৃদয়ে ছড়াক...’
গানের মতো করেই আর মাত্র কয়েকদিন বাদেই আসছে বাঙালির সবচেয়ে বড় সার্বজনীন উৎসব বাংলা নববর্ষ। নতুন বাংলা বছরকে স্বাগত জানাতে ১৪২৯ বঙ্গাব্দের পহেলা বৈশাখে আনন্দে মাতবে সারা দেশ।
করোনা ভাইরাস মহামারি কারণে গত দুই বছর নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় রাজধানীবাসী রাজপথে নামবে মঙ্গল শোভাযাত্রায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ঘুরে দেখা যায় মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার এসব কর্মযজ্ঞের দায়িত্বে রয়েছেন চারুকলার ২২ ও ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। চারুকলার মেইন গেইট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা যায়, জয়নুল গ্যালারির মুখে ছবি আঁকছেন একদল শিক্ষার্থী। জলরঙ ও অ্যাক্রেলিকে বিভিন্ন আকার ও রকমের চিত্রকর্ম আঁকছেন তারা। পাশেই আরেক দল শিক্ষার্থী ব্যস্ত সরাচিত্র নিয়ে। মাটির সরায় নানা রঙে কেউ ফুটিয়ে তুলছেন মাছ-ময়ূর-পাখির মুখ, কেউবা আঁকছেন ফুল-লতাপাতাসহ নানা মোটিভ।
জয়নুল গ্যালারির এক কক্ষে প্রবেশ করতেই দেখা গেল বাঘ-সিংহ-হাতি ও পেঁচাসহ নানা কিছুর লোকজ ফর্মের মুখোশে রং করতে ব্যস্ত আরেক দল শিক্ষার্থী। চারুকলার জয়নুল স্কুল ঘরে বেশ ক’জন শিক্ষার্থী মাউনবোর্ড দিয়ে ছোট ছোট পাখি বানাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাতে রং লাগানো হচ্ছে। সেসঙ্গে রয়েছে হাতপাখা আর চড়কি।
অন্যদিকে মাঠের মধ্যে বাঁশ দিয়ে কিছু একটার কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টা করছেন মিস্ত্রি ও শিক্ষার্থীরা। এসব কাজকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে- স্ট্রাকচার, পাখির অরিগামি, মুখোশ এবং সরাচিত্র ও পেন্টিং। ‘মঙ্গল শোভাযাত্রায় এবার পাঁচটি বড় মোটিভ থাকবে। এসবের মধ্যে রয়েছে ঘোড়া, পাখি ও টেপা পুতুল। এছাড়াও তারা তৈরি করছেন হাতপাখা, চড়কিসহ আরও কিছু বৈশাখী অনুষঙ্গ। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য করা হয়েছেন- ‘নির্মল কর, মঙ্গল কর মলিন মর্ম মুছায়ে’।
এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা চারুকলার সামনে থেকে শুরু না হয়ে টিএসসির সামনে থেকে শুরু হবে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শোভাযাত্রা সকাল নয়টায় শুরু হবে। তবে শোভাযাত্রা শুরুর স্থানটি পরিবর্তন হয়েছে। মেট্রোরেলের কাজ চলার কারণে চারুকলার সামনের রাস্তা সংকুচিত হয়ে আছে, তাই টিএসসি থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি উপাচার্যের বাসভবন মোড়টা ঘুরবে। পহেলা বৈশাখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের মুখোশ পরা এবং ব্যাগ বহন করা যাবে না। তবে, চারুকলা অনুষদের প্রস্তুত করা মুখোশ হাতে নিয়ে প্রদর্শন করা যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুভুজেলা বাঁশি বাজানো ও বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
এএটি