ঢাকা: পহেলা বৈশাখ মানেই চুলের খোপায় ফুলের সমারোহ। আর সঙ্গে গালে আলপনা।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকালে রমনা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এদিন বৈশাখের প্রভাতী অনুষ্ঠানে ছায়নটের শিল্পীদের দেখা গিয়েছে সবুজ পাড়ের অফ হোয়াইট শাড়িতে। সঙ্গে টিয়ে রঙের ব্লাউজ। আরও ছিল চুলে বেলি ফুলের মালা এবং কপালে লাল টিপ। ছেলেদের দলও পরেছিল একইরকম টিয়ে রঙের পাঞ্জাবি।
ছায়ানটের আয়োজনে আগতদের সাজেও ছিল লাল-সাদার ছোঁয়া। প্রায় সব নারীর চুলেই ফুল। আর ছেলেবুড়ো সবার গালে আল্পনার ছোঁয়া ছিল চোখে পড়বার মতো। একই দৃশ্য দেখা গেছে মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ছেলেরা সবাই পাঞ্জাবিতে সেজেছে। পাঞ্জাবির রঙে সাদা, লাল, সবুজ, কমলার আধিক্য। মাথায় গামছা বেঁধে ফ্যাশন করা ছেলেদের সংখ্যাও কম ছিল না। ছেলেরাও হাতে গালে নববর্ষ লেখা আলপনা এঁকেছে।
বাঙালিদের মতো করে সাজবার চেষ্টা করেছে এদেশে বসবাসরত বিদেশিরা। তারাও বর্ষবরণ করতে টিএসসির মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে, কেউ কেউ ভোর বেলায় ছায়ানটে গান শুনেছেন। বিদেশি নারীদের কপালে টিপ, পরনে ঢাকাই শাড়ি কিংবা চুলে ফুলের মুকুট সবার নজর কেড়েছে। বিশেষ করে মেয়েদের হাতে চুড়ি, গলায় বড় বড় মালা বেশ চোখে পড়েছে। কাঁচের চুড়ি ছিল অনেকের হাতে। অনেকেই আবার হাত পা রাঙিয়েছেন আলতা দিয়ে।
ফুল বিক্রি প্রসঙ্গে শাহবাগের ফুল ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম বলেন, এই বৈশাখে বেলি ফুলের মালা, গাজরা ও সাদা রঙের জারবেরা, ডায়ান্থাস বিক্রি বেড়ে যায়। বিশেষ করে বেলি, রজনীগন্ধা বা গাজরা জাতীয় মালা বেশি বিক্রি হয়। অন্যদিকে মাথার ফুলের টায়রা বিক্রি শুরু হয় পহেলা বৈশাখ ভোর থেকে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, সাদা শাড়ি লাল পাড়ের ইতিহাস আমাদের অনেক প্রাচীন। শাড়ির ইতিহাস গবেষণা করলে দেখা যায়, ৪০ এর দশকে শাড়িতে এই দুই রঙের আধিক্য ছিল। তখন অনেক রঙ বা নকশা ছিল না। লাল রঙ তৈরি সহজ ছিল একইসঙ্গে সুতা একটিই তৈরি হতো। তাই এই সাদা শাড়ি লাল পাড় আমাদের প্রাচীনতম শাড়িগুলোর একটি। সেটিকেই সম্প্রতি কয়েক বছর ধরে একটি ট্রেন্ড বা ফ্যাশনে পরিণত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২২
এইচএমএস/এনএইচআর