মৌলভীবাজার: এমন তো নয় যে, এ ফুলটি বিদেশি! ফুলটি আমাদের দেশেরই। দেশের পরিবেশ-প্রকৃতি আর জলবায়ুতে সুদীর্ঘকাল ধরে তার দিব্বি বেড়ে ওঠা।
মানুষ তাকে ভুল নামে চেনে। ভুল নামে বলাবলি করে। ফুলের এ দুঃখটি তার আজন্মলালিত। এ ফুলটি নাম ‘মধুমালতী’। কিন্তু সবাই তাকে মাধবীলতা বলে ভুল নামে ডাকে। মধুমালতীর ইংরেজি নাম ‘রেঙ্গুনক্রিপার’ এবং বৈজ্ঞানিক নাম Combretum indicum।
এ ফুলের ইতিহাস থেকে জানা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ফুলটির চমৎকার একটি নামকরণ করেছিলেন। সেই নামটি হলো- মধুমঞ্জরি লতা। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র এর বিস্তৃতি থাকলেও সুস্পষ্ট স্থান হিসেবে রাজধানী ঢাকার রমনা পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন, কার্জল হল প্রভৃতি স্থান অগ্রগণ্য। ইদানিং এ ফুলটি অগণিত পুষ্পপ্রেমি ফ্ল্যাটবাসীদের দ্বারকোণে সৌন্দর্যবর্ধনের নতুন মাত্রায় যুক্ত হয়েছে। ফুলটির লতাগুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ হতে জন্ম লাভকৃত। রক্তিম বর্ণের আভায় হৃদয়জুড়ে। সেই রক্তিম বর্ণের মধ্যে রয়েছে খানিকটা শুভ্রতার চিহ্ন। অর্থাৎ লাল পাপড়ির মাঝখানে সাদাটে রং।
আলো নিভে আসা সন্ধ্যার পর থেকেই ফুলেদের ফুল ফোটার আয়োজন শুরু হয়। রাত ৮/১০টা নাগাদ গাছজুড়ে পাতাকে আড়াল করে ফুটতে থাকে এই মধুমালতীর দল। দারুণ মিষ্টি ঘ্রাণ তখন গাছের চারদিক ভরিয়ে রাখে। মন ভরে যায় এমন অপূর্ব গন্ধে। এর পাতাগুলো আয়ত বল্লাকার (চওড়া গোলাকার) এবং প্রায় ৬ থেকে ৯ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে থাকে। পত্রশিরা সামান্য রোমশ (লোমপূর্ণ) এবং বিন্যাস বিপ্রতীপ (সম্পূর্ণ বিপরীত)। লতাযুক্ত ডালের আগ্রভাবে (আগায়) বড় বড় ঝুলন্ত থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। ঝুলন্ত থোকার মুখে পাঁচটি গোলাকৃতি লতি এবং ২ সেন্টিমিটার করে চওড়া। সদ্য ফুটন্ত ফুলের রং সাদা। সময় গড়ালে লাল বর্ণ ধারণে করে। ফুল ফোটার সময় সন্ধ্যা থেকে রাত।
অনেক ফুলপ্রেমীরা শখ করে তাদের বাসা-বাড়ির প্রাচীর সংলগ্ন স্থান, প্রধান ফটক বা উঠনের আশপাশে লাগিয়ে থাকেন। আধুনিক আবাসন ফ্ল্যাটের ছাদেও ইদানিং জায়গা দখল করে নিয়েছে মধুমালতী।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৪, ২০২২
বিবিবি/এএটি