ঢাকা: ‘ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর সারাজীবনের সাধনায় আমাদের মাঝে সঞ্চার করেছেন মাতৃভাষা বাংলার প্রতি অপরিসীম মমতা। তিনি যেমন ভাষাতাত্ত্বিক কারণে আমাদের কাছে স্মরণীয় তেমনি বাংলা ভাষার পক্ষে লড়াইয়ের জন্যও স্মরণযোগ্য।
বৈরী বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে তিনি অসমসাহসে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানিয়েছেন এবং আরবি ও রোমান হরফে বাংলা প্রচলনের তীব্র বিরোধিতা করেছেন। ’
রোববার (১৭ জুলাই) বাংলা একাডেমি আয়োজিত একাডেমির শহীদ মুনীর চৌধুরী সভাকক্ষে বহুভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মরণে একক বক্তৃতা অনুষ্ঠানে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ সম্পর্কে এমন কথা বলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন।
অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে ‘চর্যাপদ ও দোহাকোষের অনুবাদ: ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এবং সাম্প্রতিক ঐতিহ্য’ শীর্ষক একক বক্তৃতা প্রদান করেন জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মাকোতো কিতাদা।
স্বাগত বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠায় যেমন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর মতো মনীষীদের মহৎ স্বপ্ন কাজ করেছে তেমনি একাডেমিও মুহম্মদ শহীদুল্লাহকে স্মরণে রেখেছে নানা মাত্রিকতায়। তার নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলা একাডেমির মূল ভবন। এছাড়া একাডেমি প্রকাশ করেছে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মারকগ্রন্থ এবং শহীদুল্লাহ রচনাবলি; যা পাঠক সমাজে বিপুলভাবে আদৃত হয়েছে।
একক বক্তা অধ্যাপক ড. মাকোতো কিতাদা বলেন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ কর্তৃক চর্যাপদের ফরাসি অনুবাদ, যা ১৯২৮ সালে প্যারিস থেকে প্রকাশিত হয় তা বিংশ শতাব্দীর ভাষাবিজ্ঞানের ইতিহাসে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ভাষাবিজ্ঞানের গবেষকদের জন্য এটি পিরামিডের সদৃশ গবেষণাকর্ম। পের কভার্নে শহীদুল্লাহর গবেষণা-পদ্ধতি অনুসরণ করে, তিব্বতি অনুবাদ ও মুণিদত্তের সংস্কৃত টিকার ব্যাখ্যা ব্যবহার করে চর্যাপদের ইংরেজি অনুবাদ সম্পন্ন করেছেন। তার সেই অনুবাদ আজ পর্যন্ত সবচেয়ে সম্পূর্ণ অনুবাদ বলে পরিগণিত হয়। এভাবে প্রতীয়মান হয় চর্যাপদ ও দোহাকোষ-কে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিত করতে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর অবদান অনস্বীকার্য।
আয়োজনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেন স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক মাসাহিকো তোগওয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির পরিচালক নূরুন্নাহার খানম। সঞ্চালনা করেন সংস্কৃতি উপবিভাগের উপপরিচালক ড. সাইমন জাকারিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ