ঢাকা, বুধবার, ১০ পৌষ ১৪৩১, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

বাংলাদেশের ‘আলট্রাস’ও ভয় ধরাতে চায় অস্ট্রেলিয়াকে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৯ ঘণ্টা, জুন ৬, ২০২৪
বাংলাদেশের ‘আলট্রাস’ও ভয় ধরাতে চায় অস্ট্রেলিয়াকে

ধারে-ভারে বাংলাদেশের চেয়ে যোজন যোজন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া ফুটবল দল। যার প্রমান বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম লেগের ম্যাচেই মিলেছে।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে বাংলাদেশ হেরেছে ৭-০ গোলে। আজ (বৃহস্পতিবার) ঘরের মাঠ বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় মাঠে নামবে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে সাম্প্রতিক সময়ে বড় দলের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখেই লড়াই করছেন কোচ হাভিয়ের কাবরেরার শিষ্যরা। ফুটবলারদের এই লড়াইয়ে বাড়তি মনোবল যোগাচ্ছেন গ্যালারি ভর্তি সমর্থকরা। বিশেষ করে বলতে হয় একদল ভিন্ন সমর্থক গোষ্টির কথা। তারা ‘আলট্রাস’। বাংলাদেশের খেলা যেখানেই সেখানেই হাজির ‘বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাস’ সমর্থক গোষ্ঠি। আজও এর ব্যাতিক্রম হবে না। মাঠের ফুটবলারদের সঙ্গে মিলে প্রতিপক্ষকে ঘাবড়ে দিতে বড় ভূমিকা পাল করে তারা। যেন স্কোয়াডের ১২তম সদস্য ‘আলট্রাস’।

আলট্রাস আসলে কি? সোজা কথায় ফুটবলের পাড় সমর্থক গোষ্ঠি। বিশ্বখ্যাত উরুগুইয়ান লেখক এদুয়ার্দো গালিয়ানো তার বই ‘সকার ইন সান অ্যান্ড শ্যাডো’তে ফুটবলের উগ্র সমর্থকদের (ফ্যানাটিক) নিয়ে লিখেছেন, ‘খেলা দেখা তার জন্য যেন মৃগীরোগে আক্রান্ত হওয়ার মতো। খেলা তিনি আসলে কখনো মনোযোগ দিয়ে দেখেনই না। গ্যালারিজুড়েই তার সব রাজত্ব। এটাই তার কুরুক্ষেত্র। সেখানে প্রতিপক্ষ দলের ন্যূনতম একজন খেলোয়াড়ের উপস্থিতিও তাকে বারুদের মতো উসকে দেয়। ’ 

ফুটবল মাঠের গ্যালারিতে একদল সাধারণ সমর্থক থাকে। তারা ক্ষণে ক্ষণে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দেয়। আর আলট্রাসরা পুরো সময় জুড়ে বাদ্য বাজনা এবং স্লোগানে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের মনে ভীতি ছড়ায়। এই উগ্র সমর্থকদের যতই নেতিবাচকভাবে দেখা হোক, ফুটবলের অস্তিত্বের সঙ্গে তারা এখন অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িয়ে গেছেন। এতটাই যে, আলট্রাস সমর্থকদের ছাড়া ইউরোপের ক্লাবগুলোর অস্তিত্বও এখন অকল্পনীয়। বাংলাদেশের এই আলট্রাস গ্রুপও গ্যালারিতে ইউরোপিয়ান সংস্কৃতির কিছুটা তুলে আনছে।  

সব ম্যাচেই বিভিন্ন ধরনের টিফো নিয়ে হাজির হয় আলট্রাসরা। আজও ব্যাতিক্রম কিছু নিয়েই হাজির হওয়ার কথা জানিয়েছেন আলট্রাসের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান অভি। তিনি বলেন, ‘আজ এমন কিছু করার চেষ্টা আছে, যেটা বিগত দিনে দেখা যায়নি। ফুটবলাররা মাঠে খেলবেন, আমরা বাইরে থেকে তাদের শক্তি জোগাব। অতিথি দলের কাজটা যতটুকু সম্ভব কঠিন করে দেওয়ার চেষ্টা করব আমরা। ’

বিস্তর পরিকল্পনা থাকলেও নিয়মের বাধ্যবাধকতায় করা যাচ্ছে না অনেক কিছুই। বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ইয়াসিন মোল্লা বলেন, ‘আসলে নিয়মের মধ্যে থেকেই আমরা সব কিছু করতে চাই। আজ অনেক কিছু করার ইচ্ছা থাকলেও দেশের ‍ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা থেকে করা যাচ্ছে না। সিকিউরিটির জন্য অনেক পরিকল্পনাই বাদ দেয়া হয়েছে। তবে আজও আমরা ভিন্ন কিছু করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমরা বরাবরে মতই সরব থাকবো। গ্যালারি থেকে প্রিয় খেলোয়াড়দের কাজ যথাসম্ভব সহজ করার চেষ্টা করবো। ’

২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ বনাম নেপাল প্রীতি ম্যাচ দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল বাংলাদেশি ফুটবল আলট্রাসের। প্রথম দিনেই তারা পেয়েছিল ব্যাপক সাড়া। প্রায় পৌনে দুইশো তরুণ এক হয়ে বাংলাদেশকে সমর্থন জানায়। এরপর দিন যত যাচ্ছে বাড়ছে সদস্যসংখ্যা। ইউরোপের মাঠগুলোতে যেমনটা হয়, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশকে গ্যালারি থেকে অনুপ্রেরণা জোগায় এই সমর্থকরা। বাদ্য-বাজনা বাজিয়ে তারা একাত্ম হন জামালদের সঙ্গে। নানা রকম স্লোগানে তারা সাহস জোগান ফুটবলারদের। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের হারানোর কিছু নেই। মাঠে ফুটবলাররা দাঁতে দাঁত চেপে লড়বেন, গ্যালারিতে তাদের উৎসাহ জোগাবেন বাংলাদেশ ফুটবল আলট্রাসের সদস্যরা। তাতে যদি ভালো একটা ম্যাচ উপহার দেওয়া যায়, ক্ষতি কী!

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৯ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০২৪
এআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।