ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ জুলাই ২০২৪, ০১ মহররম ১৪৪৬

ফুটবল

জার্মানিকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০৬ ঘণ্টা, জুলাই ৬, ২০২৪
জার্মানিকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন

নির্ধারিত ৯০ মিনিটের শেষ মুহূর্তে গোল করে আশা জাগিয়েছিল জার্মানি। হতাশার অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া জার্মান সমর্থকদের মুখে হাসিও ফুটেছিল তাতে।

 কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে সেই হাসি কান্নায় রূপ নিল। শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে বিদায় নিল স্বাগতিকরা। আর রোমাঞ্চকর জয়ে সেমিফাইনালে উঠে গেল স্পেন।

২০২৪ ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে ২-১ গোলে জয় তুলে নিয়েছে স্প্যানিশরা। স্টুটগার্ট অ্যারেনায় আজ দানি ওলমোর গোলে এগিয়ে গিয়েছিল স্পেন। দ্বিতীয়ার্ধের শেষ মুহূর্তে ভির্টৎসের গোলে সমতায় ফেরে জার্মানি। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে মিকেল মেরিনোর গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লুইস দে লা ফুয়েন্তের দল।

অথচ ম্যাচের শুরুতেই বড় ধাক্কা খেয়েছিল স্পেন। পঞ্চম মিনিটে জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে পড়ে যান বার্সেলোনার মিডফিল্ডার পেদ্রি। এরপর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি। তার জায়গায় নামেন দানি ওলমো। এরপর খেলার নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই জার্মানির হাতে চলে যায়। ২১তম মিনিটে প্রথম ভালো সুযোগ আসে তাদের সামনে।  

কিমিচের উঠিয়ে দেওয়া ক্রসে নেওয়া কাইল হাভার্টজের হেডে বল চলে যায় স্পেন গোলরক্ষক সিমোনের হাতে। হাভার্টজ ৩৫তম মিনিটে আরও একবার সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার তার নিচু শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে ফেরান সিমোন। ৩৯তম মিনিটে স্পেনের অলমোর একটি প্রচেষ্টা বানচাল করে দেন জার্মান গোলরক্ষক ম্যানুয়েল নয়্যার। ফলে গোলশূন্য কাটে প্রথমার্ধ।

 
দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতে আধিপত্য দেখায় স্পেন। এক পর্যায়ে এগিয়েও যায় তারা। ৫১তম মিনিটে বার্সার তরুণ তারকা লামিনে ইয়ামালের নিচু পাসে বল পেয়ে প্রথম প্রচেষ্টায় নিচু শটে বাম দিক দিয়ে বল জালে পাঠান বদলি নামা স্ট্রাইকার ওলমো। গোল হজমের পর অবশ্য মরিয়া হয়ে উঠে জার্মানি। ৬৯তম মিনিটে রবার্ট আনড্রিখের দারুণ শট ঠেকিয়ে দেন সিমোন।

হাভার্টজ পরে দুইবার সুযোগ নষ্ট না করলে আরও আগে সমতায় ফিরতে পারতো জার্মানি। ৮৩তম মিনিটে সিমোনকে একা পেয়েও বল তার ওপর দিয়ে জালে পাঠাতে ব্যর্থ হন হাভার্টজ। বল বারের ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। মিনিট তিনেক পরে ক্রুসের ক্রসে বল পেয়ে নিচু হেড নিয়েছিলেন হাভার্টজ। এবারও তিনি পরাস্ত হন সিমোনের কাছে।  

অবশেষে ৮৯তম মিনিটে সমতায় ফেরে জার্মানি। সতীর্থের ক্রসে ব্যাক পোস্ট থেকে বল পেয়ে হেডে মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান ভির্টৎসের দিকে বাড়ান কিমিচ। আর সঙ্গে সঙ্গে নিচু শট বাঁদিকের পোস্টে বল পাঠান ভির্টৎস। সমতা ফেরার পর যোগ করা সময়ে তেমন আক্রমণ শানাতে দেখা যায়নি দুই দলকে।  

খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। যেখানে প্রথম ভাগে দুই দল একবার করে সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। তবে দ্বিতীয় ভাগের শুরুতেই পেনাল্টির আবেদন করেছিল জার্মানি। মুসিয়ালার বুলেট গতির নিচু শট গোলমুখের দিকে যাওয়ার সময় স্প্যানিশ সেন্টার-ব্যাক মার্ক কুকুরেয়ার হাতে লাগে। কিন্তু ভিএআর দেখে পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি।

অতিরিক্ত সময়ের খেলাও সমতায় শেষ হওয়ার পথে ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আচমকা গোল করে জার্মানদের স্বপ্ন ভাঙেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার মিকেল মেরিনো। এই গোলে অবদান রাখেন ওলমো। বাঁদিক থেকে বল নিয়ে ডান পায়ে বক্সের ভেতরে ক্রস দেন তিনি। সেখানে থাকা মেরিনো  দারুণ দক্ষতায় হেডে লক্ষ্যভেদ করেন। ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্পেন।

অবশ্য ১২৫তম মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে দানি কারভাহাল মাঠ ছাড়লে ১০ জনের দলে পরিণত হয় স্পেন। কিন্তু পরের দুই মিনিট নির্বিঘ্নে পাড়ি দিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করে ফেলে তারা। এটি এই আসরে তাদের টানা পঞ্চম জয়। ইউরোর এক আসরে টানা পাঁচ জয়ের রেকর্ড আছে শুধু ফ্রান্স (১৯৮৪) এবং ইতালির (২০২০) দখলে। দুই দলই পরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৭, ২০২৪
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।