ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

চিলিকে হারিয়ে বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস

ওয়ার্ল্ড কাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৫০ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০১৪
চিলিকে হারিয়ে বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রবিন ফন পার্সিকে ছাড়া চিলির বিপক্ষে খেলতে নামা নেদারল্যান্ডসকে অনেকটাই বিবর্ণ দেখাচ্ছিল ম্যাচে। ম্যাচের বল দখলে অনেকটা সময়ই আধিপত্য ছিল তাদের, তবে শেষ পর্যন্ত চিলিয়ানদেরই হতাশায়ই ডুবিয়ে শেষার্ধে বদলি খেলোয়াড় লেরওয়ে ফার ও ম্যাম্পসি ডিপের করা গোলে বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করে মাঠ ছাড়ে অ্যারিয়েন রোবেনের নেতৃত্বাধীন নেদারল্যান্ডস।

চিলির জালে প্রথমে বল জড়ান ৭৭ মিনিটের মাথায় ফার এবং অতিরিক্ত সময়ে ডিপে। অনেক সম্ভাবনা দেখিয়েও পরাজিত সৈনিকদের নিয়ে মাঠ ছাড়েন আলেক্সিজ সানচেজ।

খেলার মাত্র ২ মিনিটের মাথায়ই ফাউল করেন নেদারল্যান্ডসের জেরমেইন লেন্স। একইসময়ে ম্যাচের প্রথম ফ্রি কিক করেন চিলির গেরি মেডেল। অবশ্য, চার মিনিটের মাথায়ই এবার ডাচদের পক্ষে ফাউল করেন অধিনায়ক অ্যারিয়েন রোবেন। তার ফাউলের সুবাদে পাওয়া ফ্রি কিক ফের নেন চিলিয়ানদের পক্ষে মেডেল।

খেলার ৫ মিনিটের মাথায় হ্যান্ডবলে হতভম্ব হন ডাচ নিগেল দে জং।

২৫ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে হলুদ কার্ড হজম করতে হয় চিলিয়ান ফ্রান্সিসকো সিলভাকে।

এর মধ্যেই আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চলতে থাকে। তবে প্রথমার্ধ পর্যন্ত দু’দলের প্রত্যেকটি আক্রমণই ডিফেন্ডারদের সফল প্রতিরোধে বিফলে যায়।

দ্বিতীয়ার্ধে শুরুতেই ফিলিপ গুটিয়েরেজের বদলে জ্য বসেজরকে নামায় চিলি। খেলার এ অর্ধে বল দখলে এগোতে থাকে ডাচরা। বাড়াতে থাকে আক্রমণও।

৬৪ মিনিটের মাথায় চিলিয়ান স্ট্রাইকার আলেক্সিজ সানচেজকে ফাউল করায় হলুদ কার্ড হজম করেন নেদারল্যান্ডের ডিলে ব্লাইন্ড।

বেশ ক’টি আক্রমণের পর শেষ পর্যন্ত ৭৭ মিনিটের মাথায় প্রথম গোলের দেখা পায় ডাচরা। ড্যারিল জানমাতের নেওয়া কর্নার কিকের বল ডি-বক্সের মাঝখান থেকে গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে দুর্দান্ত হেডে চিলির জালে জড়ান ফার।

নেদারল্যান্ডসের এ গোলের পর গোল শোধে মরিয়া হয়ে ওঠে চিলি। তবে ডাচদের শক্ত ডিফেন্স ভেদ করে বল জালে জড়াতে পারেননি সানচেজরা। একটি শট অবশ্য নেওয়া হয়েছিল। তবে সেটি দুর্দান্তভাবে ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক।

উপরুন্ত খেলার অতিরিক্ত সময়ে অ্যারিয়েন রোবেনের বাড়িয়ে দেওয়া বল গোলপোস্টের খুব কাছ থেকে ডান পায়ের শটে জালে জড়ান ডিপে।

ব্যস, এতেই পরবর্তী রাউন্ডে ব্রাজিলকে এড়ানোর প্রাথমিক কাজ শেষ হয়ে যায় ডাচদের।

ম্যাচে বল দখলে রোবেন-স্নেইডারদের চেয়ে এগিয়েছিলেন সানচেজরা। তাদের ৬৮ শতাংশ বল দখলের বিপরীতে ৩২ শতাংশ বল দখল নিয়ে খেলেন ডাচ খেলোয়াড়রা।

তবে অন্য দিক দিয়ে নেদারল্যান্ডসই এগিয়ে ছিল। তারা চিলির গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নিয়েছে ১৩টি। ৪টির মধ্যে দু’টি ফিরিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক, আর দু’টি চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছানোর আনন্দে মেতেছেন রোবেন-ফাররা। বাকি শটগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। আবার চিলিয়ানরা ডাচদের গোলপোস্টে শট নিয়েছে ৮টি। তাদের ৭টি শটই লক্ষ্যভ্রষ্ট। একটি ফিরিয়ে দিয়েছেন গোলরক্ষক।

ট্যাকল জয়ের পাশাপাশি ফাউলেও এগিয়ে ছিলেন রোবেন-স্নেইডাররা। ডাচদের ২৬টি করে ট্যাকল জয় ও ফাউলের বিপরীতে সানচেজের চিলি ট্যাকল জয় করেছে ৬টি এবং ফাউলে অভিযুক্ত হয়েছে ১৪ বার।

দুটি কর্নার কিক করেছে নেদারল্যান্ডস, চিলি করেছে ৭টি। বল গোলপোস্টে জড়াতে গিয়ে অফসাইডে ডাচরা ধরা পড়েছে একবার, চিলিয়ানরা ধরা পড়েছে দুইবার। হলুদ কার্ড একটি করে হজম করেছেন চিলিয়ান খেলোয়াড় ফ্রান্সিসকো সিলভা ও ডাচ খেলোয়াড় ব্লাইন্ড

দ্বিতীয় রাউন্ডে খেলা নিশ্চিত করার পর সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় সাও পাওলোর অ্যারেনা কোরিন্থিয়ানস স্টেডিয়ামে গ্রুপের শীর্ষস্থান দখলের লড়াইয়ে মাঠে নামে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষ দল দু’টি।

দু’টি দলেরই লক্ষ্য ছিল, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে ব্রাজিলকে এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ দল দু’টি মনে করছে ব্রাজিল এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবে, সেক্ষেত্রে ‘বি’ গ্রুপে যারা চ্যাম্পিয়ন হবে তাদের নকআউট পর্বে ব্রাজিলের মুখোমুখি হতে হবে না। অর্থাৎ এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন খেলবে বি গ্রুপের রানারআপের সঙ্গে, আর বি গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি হতে হবে এ গ্রুপের রানারআপের সঙ্গে, এক্ষেত্রে ক্রোয়েশিয়া অথবা মেক্সিকো হতে পারে নেদারল্যান্ডস বা চিলির নকআউট প্রতিদ্বন্দ্বী।

দলের জয়ের জন্য ডাচদের পক্ষে মাঠে ছিলেন- সিয়েসেন, ভ্লার দে ভ্রিজ, ব্লাইন্ড, দে জং, জানমাত, ওয়েসলি স্নেইডার, অ্যারিয়েন রোবেন (অধিনায়ক), কুয়াত লেন্স ও উইজনালদাম।  

ডাচদের দলে তিনটি পরিবর্তন ছিল। মার্টিনস ইন্ডির জায়গায় খেলেন উইজনালদাম, ডি গুজম্যানের জায়গায় কুয়াত, আর আগের দুই ম্যাচে হলুদ কার্ড পেয়ে এ ম্যাচে ছিটকে পড়া ফন পার্সির জায়গায় খেলেন লেন্স।

কোচ লুইস ফন গালের তত্ত্বাবধানে খেলেন ডাচ ফুটবলযোদ্ধারা।

অপরদিকে চিলির পক্ষে মাঠে নামেন- ব্রাভো (অধিনায়ক), মেনা, ইসলা, সিলভা, আলেক্সিজ সানচেজ, ভারগাস, গুটিয়েরেজ, মেডেল, জারা, অ্যারাগুইজ ও দায়াজ।

এ দলে ছিল একটি পরিবর্তন। দলটির লড়াইয়ে এ. ভিদালের জায়গায় নামেন গুটিয়েরেজ।

লাতিন আমেরিকার ফুটবলের নয়াশক্তি চিলি খেলে কোচ জর্জ সাম্পাওলির তত্ত্বাবধানে।

ম্যাচটিতে বাঁশি হাতে দৌঁড়ান গাম্বিয়ার রেফারি বাকারি গাসামা।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন স্পেনকে ৫-১ গোলে উড়িয়ে দেয় গতবারের রানারআপ নেদারল্যান্ডস। দ্বিতীয় ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে ৩-২ গোলে জয় তুলে নেয় তারা।

অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৩-১ গোলে হারানোর পর স্পেনকেও ২-০ গোলে হারিয়ে চমকে দেয় সানচেজের চিলি।

এর আগে, মাত্র একবার মুখোমুখি হয়েছিল ডাচ ও চিলিয়ানরা। সেবার ২-২ গোলে মীমাংসা হয়েছিল দুই দলের ফুটবল লড়াই।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৫৫ ঘণ্টা, জুন ২৩, ২০৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।