ঢাকা: ১৩ জুলাই রিও ডি জেনিরোর (বাংলাদেশ সময় পরদিন ভোরে) সবুজ গালিচায় ৭৮ হাজার দর্শকের সামনে সোনালি ট্রফিতে চুমু আঁকবেন তিনি।
১৯৮৬ বিশ্বকাপের নায়ক ফুটবল ঈশ্বর দিয়াগো আরমান্দো ম্যারাডোনার অমর কীর্তিকেও ম্লান করে দেবেন তিনি একাই।
১৯৫০ এর ব্রাজিল বিশ্বকাপে দুই লাখ দর্শককে কাঁদিয়ে সেলেকাওদের পরাজয়ের ৬৪ বছরের পুরানো সেই ট্র্যাজেডির রঙিন রূপ দেবেন তিনিই।
তিনি, লিউনেল মেসি। টানা চারবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই ক্ষুদে জাদুকর এবার এমনই সব কীর্তি গড়বেন বলে দৃঢ় বিশ্বাস আকাশি-সাদাদের। সেইসঙ্গে সারাবিশ্বের কোটি ভক্ত সমর্থকদের।
এসব কীর্তি গড়ার পথে ইতোমধ্যে আলবিসেলেস্তেরা পেরিয়ে এসেছে প্রথম ধাপ। দ্বিতীয় ধাপে মঙ্গলবার সাও পাওলোতে আর্জেন্টিনার বাধা ইউরোপের দল সুইজারল্যান্ড।
প্রথম পর্বে নবাগত বসনিয়া-হার্জেগোভিনা, ইরান ও নাইজেরিয়া ম্যাচে অন্যগ্রহের ফুটবলার খ্যাত মেসি একাই দলকে টেনে নিয়েছেন। তিন ম্যাচে চার গোল করে এগিয়ে আছেন শীর্ষ গোলদাতাদের তালিকায়ও।
আকাশি-সাদা জার্সি গায়ে ২৬ বছরের এই তরুণ তুর্কি মনে করিয়ে দিচ্ছেন ২৮ বছর আগের ঝাঁকড়াচুলের এক খ্যাপাটে তরুণকে। যিনি একাই সেবার মধ্যমমানের আর্জেন্টিনা দলকে সোনালি ট্রফি এনে দিয়েছিলেন।
এবারের ব্রাজিল বিশ্বকাপের মেসি ইতিহাসের ধুলো সরিয়ে সামনে নিয়ে এসেছেন ৮৬’র ম্যারাদোনার সেই স্মৃতি। একাই দলকে নকআউটে নিয়ে আসা বার্সেলোনার প্রাণভোমরা ২৮ বছরের অতৃপ্তি মোচন করে ইতিহাস গড়বেন, ইতিহাস হবেন সেই প্রার্থনা কোটি ভক্ত-সমর্থকের।
ফুটবলের সব অর্জন করায়াত্ত্ব করা এই জাদুকরের একমাত্র না পাওয়ার আক্ষেপ মুছে দিতে ফুটবল বিধাতাও হয়তো নিজের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
এদিকে, দেশকে তৃতীয় ট্রফি এনে দেওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে বুয়েন্স আয়ার্স থেকে প্রতিবেশী সেলেকাওদের দেশে উড়ে আসা মেসিও চান ১৩ জুলাই মারাকানায় প্রতিপক্ষের দল যেন হয় পেলে-নেইমারের দেশ ব্রাজিল।
৫০ সালের বিশ্বকাপে মারাকানায় ব্রাজিলকে কাঁদিয়ে কাপ নিয়ে গিয়েছিল আরেক প্রতিবেশী উরুগুয়ে। ৬৪ বছর পরে একই মঞ্চের একই আয়োজনের চিত্রনাট্যটা সেই একই রকম হবে বলেই বিশ্বাস আর্জেন্টাইন দলনেতার। শুধু উরুগুয়ের নাম কেটে সেখানে বসবে আর্জেন্টিনা।
আরেকটি মারাকানা ট্রাজেডি, আরেকটি ৮৬ কাব্য লিখতেই এবার মেসির ব্রাজিল যাত্রা শুভ হোক, নকআউটের পথ হোক আরো বেশি উদ্ভাসিত এমনটাই আশা আর্জেন্টিনার প্রথম মহাতারকা মেনোত্তির।
ম্যারাদোনার পর যে অসাধ্য সাধনে ব্যর্থ হয়েছেন বাতিগোলখ্যাত বাতিস্তুতা, ওর্তেগা, ক্রেসপো, ভেরন, রিকুয়লমে, তেভেজরা। সেই অসাধ্য সাধন হবে প্রিয় শিষ্যের হাত ধরে এমন আশা আর্জেন্টাইন ফুটবল ঈশ্বর ম্যারাডোনার।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২১ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৪