ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

অবিস্মরণীয় পাঁচ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল

ওয়ার্ল্ড কাপ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৪
অবিস্মরণীয় পাঁচ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল

ঢাকা: ফুটবল প্রেমীরা বলে থাকেন, বিশ্বকাপের ফাইনাল হয় মূলত দুটো। ‘ফাইনাল’ নামে শিরোপা জয়ী যে খেলাটি হয়, তার থেকে কয়েশ’ গুণ উত্তেজনা ও রোমাঞ্চকর দুই ম্যাচ হয় সেমিফাইনালে।

বলা যায়, ফাইনালের থেকেও বড় ফাইনাল এটি।

আজ রাতেই ২০তম বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের আনুষ্ঠানিক পর্দা উঠবে। এবারের ২০১৪’র আসরে ৮ জুলাই জার্মানির মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ব্রাজিল এবং ৯ জুলাই হল্যান্ডের মুখোমুখি হবে আর্জেন্টিনা।

ফুটবলের পরাশক্তিদের মুখোমুখি লড়াই নিঃসন্দেহে উত্তেজনার পারদ ছোঁবে। তবে এর আগেও বিশ্বকাপ উপহার দিয়েছে বেশকিছু শ্বাসরুদ্ধকর সেমিফাইনাল। চলতি মহারণের দামামা বাজার আগে চোখ ফেরানো যাক সেরকম হৃদয়ছোঁয়া পাঁচ ম্যাচে।

হাঙ্গেরি ৪- উরুগুয়ে ২ (১৯৫৪)
শুধু সেমিফাইনাল নয়, সর্বকালের অন্যতম সেরা ম্যাচ ধরা হয় এ সেমিফাইনালকে। জার্মানিকে গ্রুপ পর্বে ৮-৩ গোলে বিধ্বস্ত করা হাঙ্গেরি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ের বিপক্ষে ২ গোলে এগিয়ে যায়। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকার দলটি দ্রুত লড়াইয়ে ফেরে এবং জুয়ানের দুই গোলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। শেষ পর্যন্ত সান্দোর ককসিসের অসাধারণ দুই হেডে ৪-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হাঙ্গারিয়ানরা।

খেলা শেষে হাঙ্গারিয়ান তারকা জজসেক বসজিকের উচ্ছ্বাস, এটা আমার জী্বনে সবচেয়ে সুন্দর ম্যাচ!

অবশ্য ফাইনালে তারা পশ্চিম জার্মানির কাছে ৩-২ গোলে হেরে রানার্সআপ শিরোপা নিয়ে বাড়ি ফেরে।

ইংল্যান্ড ২-পর্তুগাল ১ (১৯৬৬)
‘ব্ল্যাক প্যান্থার’ ইউসেবিও’র অনুপ্রেরণায় গোটা টুর্নামেন্টে রীতিমত জ্বলছিল পর্তুগাল। খেলার ১০ মিনিটের মধ্যেই ববি চার্লটনের দুই গোল ইংলিশদের ফাইনালের পথে বেশ খানিকটা এগিয়ে দেয়। শেষ মূহুর্তে (৮৩ মিনিট) ইংলিশ গোলরক্ষক গর্ডন বাঙ্কস ইউসেবিওকে ফাউল করলে পেনাল্টি থেকে একটি গোল পায় পর্তুগাল।

ইংলিশ কোচ অ্যালফ রামসের বক্তব্য ছিল, এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টে দলের সেরা পারফরম্যান্স।

অন্যদিকে পর্তুগীজ কোচ ‍ওত্তো গ্লোরিয়া বলেন, ইংল্যান্ডের যেভাবে খেলা উচিত ছিল তারা সেভাবেই খেলেছে।

ইতালি ৪-পশ্চিম জার্মানি ৩ (১৯৭০)
ম্যাচটিকে ফুটবল বিশ্লেষকরা বলে থাকেন ‘গেইম অব দ্য টুয়েন্টিথ সেঞ্চুরি’। আট মিনিটেই রবার্তো বনিনসেগনার গোলে এগিয়ে যায় ইতালি। এরপত তারা সম্পূর্ণ রক্ষণের মোড়কে মুড়ে শেষ বাঁশি বাজার অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু তাদের দূর্ভাগ্য জার্মানরা সমতায় এনে খেলা অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যায়।

এরপর চলতে থাকে পাল্টাপাল্টি লড়াই। গার্ড মুলার জার্মানিকে এগিয়ে নিলে আবার লুইগি রিভরার দুই গোলে সমতা ও এগিয়ে থাকা নিশ্চিত করে ইতালি। এরপর মুলার আবার সমতায় ফেরালেও, শেষ পর্যন্ত জিয়ান্নি রিভেরার গোলে শেষ হয়ে যায় জার্মানদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন।

কিন্তু ইতালিয়ানদের অসাধারণ দলীয় নৈপূণ্য ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে ৪-১ গোলে হার মানে।   

পশ্চিম জার্মানি ৩-ফ্রান্স ৩ (১৯৮২)
একটি অসাধারণ উদ্দীপনা জাগানো ম্যাচ। শুরুতেই পিয়েরে লিটবারস্কির গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। মিশেল প্লাতিনি পেনাল্টি থেকে সমতা আনেন এবং অতিরিক্ত সময়ে ম্যারিয়াস ট্রেসর ও জিরেসের গোলে ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।  

এরপর কার্ল হেইঞ্জ ও ক্লস ফিশারের গোলে ৩-৩ স্কোর দাঁড়ালে খেলা গড়ায় পেনাল্টি পর্বে। ফলাফলে জার্মানরা ৫-৪ গোলে জিতলেও গোটা খেলায় ফরাসিরা ছিল ভীষণ নান্দনিক।

ফ্রান্স ২-ক্রোয়েশিয়া ১ (১৯৯৮)
স্বাগতিক ফ্রান্স নানা সমালোচনার মধ্য দিয়ে শেষ চারে পৌঁছায়। অন্যদিকে প্রতিভায় মোড়ানো ক্রোয়েশিয়া দ্বিতীয়ার্ধে সুকারের গোলে এগিয়ে যায়। কয়েক মিনিট বাদেই লিলিয়ান থুরামের প্রথম আন্তর্জাতিক গোলে সমতায় ফেরে ফরাসিরা। দারুণ আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত থুরামের দ্বিতীয় গোলে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ফ্রান্স।

সেবার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় নিয়ে প্রথম বার শিরোপা ঘরে তোলে বিশ্বকাপ স্বাগতিকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।