ময়মনসিংহ: এবার লোকাল বাসে নয়, মাইক্রোবাসে করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সংবর্ধনা নিতে ঢাকা এসেছেন এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের বাছাই পর্বের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ৯ সদস্য।
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ফেডারেশরেশনের পক্ষ থেকে ঢাকায় তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে ভাড়া করা মাইক্রোবাসে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন তারা।
তবে মেয়েদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই নন এসি মাইক্রোবাসে তাদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক মফিজ উদ্দিন।
প্রথমবারের মতো এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের বাছাই পর্বে হার না মানা অপারাজেয় নারী ফুটবলাররা চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছেন।
নিজেদের নিয়ে গেছেন এশিয়ার সেরা আটে। ঈদের আগে গত ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে লোকাল বাসে চেপে ধোবাউড়া ফিরেছিলেন তারা।
ইতিহাস গড়া ও ফুটবলে বিস্ময় জাগানিয়া এ কিশোরীদের লোকাল বাসে পাঠানোর এ ঘটনায় সে সময় চরম সমালোচনার মুখে পড়ে বাফুফে।
সমালোচনার অবসান ঘটাতেই এবার ঢাকা যাত্রাপর্বে মেয়েদের মাইক্রোবাসে পাঠাতে অভিভাবকদের অনুরোধ করেন বাফুফে কর্মকর্তারা।
সংবর্ধনা নিতে নারী ফুটবলারদের সঙ্গে থাকা স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শরীর চর্চা শিক্ষক মফিজ উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, ধোবাউড়া থেকেই ৮ হাজার টাকায় একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে। মেয়েরা এসি সহ্য করতে না পারায় নন এসি মাইক্রোবাস ভাড়া করা হয়েছে।
প্রতিভাবান কিশোরী ফুটবলার সানজিদা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বাসে চলতেই আমাদের ভালো লাগে। এরপরও এ ঘটনায় অনেক কিছু হয়ে গেছে। সে কারণে মাইক্রোবাসে করে আমরা ঢাকা যাচ্ছি। কোনো সমস্যা হচ্ছে না। ’
দলটির আলোচিত গোলরক্ষক তাসলিমার বাবা সবুজ মিয়া জানান, আগে লোকাল বাসে প্রথমে ময়মনসিংহ শহরে যেতো মেয়েরা। সেখান থেকে ট্রেনে ঢাকায় যেতো, এ যাত্রাতেই ওরা অভ্যস্ত।
‘এবার ফেডারেশন থেকে আমাদের একটি মাইক্রোবাস ঠিক করে দিতে বলা হয়েছিল। তারাই ভাড়া পরিশোধ করবে। হাসিখুশি মনেই মেয়েরা ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে। ওরা আবারও দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে-এমন প্রত্যাশা আমাদের। ’
এএফসি অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবলের চূড়ান্ত পর্বে উঠা বাংলাদেশ দলে খেলছেন কলসিন্দুরের ৯ নারী ফুটবলার। তারা হলেন- সানজিদা, মার্জিয়া, তহুরা, তাসলিমা, মাহমুদা, শিউলি, নাজমা, মারিয়া ও শামসুন্নাহার।
তাদের সবাই স্থানীয় কলসিন্দুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্রী।
যাবার সময় ফের ভালো কিছু করার প্রত্যাশার কথা জানালেন সানজিদা। তার ভাষ্য, ‘সংবর্ধনার পর সাফ ক্যাম্পে ভালো পারফরম্যান্স করেই মূল দলে খেলতে চাই। এ টার্গেট আমাদের সবারই। ’
প্রায় একই কথায় জেতার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তহুরা, মারিয়া মান্দারাও।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৬
এমএএএম/এমএ/