যাই হোক, অনেকে মনে করছেন মৌসুম শুরুর আগেই পর্তুগিজ তারকা রোনালদোর বিদায় ঠিকই আছে, কিন্তু সত্যিটা হচ্ছে রিয়ালের নতুন কোচ হুলেন লুপেতেগুইকে এখন এমন একজন স্ট্রাইকারের খোঁজ করতে হচ্ছে যে নিয়মিত গোল করতে সক্ষম। ঠিক এই জায়গাটায় রিয়াল কোচ তার নতুন শিষ্য ভিনিসিয়াস জুনিয়রের উপর আস্থা রেখে তাকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে চাইছেন।
রিয়াল এখন তাদের এই নতুন তারকাকে পুড়ে খাঁটি বানাতে চাইছে এবং সেজন্য তার বাড়তি যত্ন নিচ্ছে। এইজন্যই তাকে গেতাফের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের দলে রাখেন নি লুপেতেগুই। ৪৫ মিলিয়ন ইউরো ব্যয় করে এই ব্রাজিলিয়ানকে দলে ভিড়িয়েও তাকে আড়ালে রাখতে চাইছে রিয়াল। আর এতে বড় ভূমিকা রেখেছেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ। তিনি চান একটু দেরিতে ভিনিসিয়াসকে মূল একাদশে আনতে।
এখানে একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, তাহলে রিয়াল যে তাকে খেলাচ্ছে না কিন্তু খেলোয়াড় কেনার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ না করে জমিয়ে রেখেছে রিয়াল তা কার জন্য ব্যয় করবে? গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে নেইমারকে কেনার আশা এখনও ছাড়েনি রিয়াল। তার মানে তার জন্যই কি অপেক্ষা করছেন পেরেজ?
কিন্তু রিয়ালের এমন ভাবনা সমর্থকদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। এরমধ্যে ‘আমরা সবসময়ের মতোই ভাল দল’ এমন কথা বলে আবার বড় কোনো তারকাকে দলে না ভিড়িয়ে আসলে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন পেরেজ নিজেই। রোনালদোর অনুপস্থিতিতে রিয়াল শক্তি হারিয়েছে এবং ক্লাবের জনপ্রিয়তা যে দিনদিন কমছে সেটা তো অস্বীকার করার উপায় নেই। তাহলে এই দল নিয়ে আবার চ্যাপিয়ন্স লিগ জয়ের আশা করা বাস্তবসম্মত কি না সেটা তাদের ভাবনায় আছে কি না কে জানে।
ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও ঘরোয়া লিগে ক্রমেই দুর্বল প্রতীয়মান হচ্ছে রিয়াল। গত মৌসুমে লা লিগা আর কোপা দেল রে’র শিরোপা জয়ে ব্যর্থ হওয়ার পর থেকে প্রশ্নটা তাই নিয়মিতই ঊঠছে, ‘রিয়াল কি তার সোনালী দিন হারাচ্ছে?’ আসলেই তো তাই হচ্ছে। চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের হ্যাটট্রিক করা সাবেক কোচ জিদানের পর রোনালদোর বিদায় মিলিয়ে রিয়ালের অবস্থা এখন ডুবতে বসা জাহাজের মতো।
রিয়ালের সমস্যাটা হলো, রোনালদোকে তাদের বেচতে হতোই, আবার ভাল দামও পাওয়া সম্ভব ছিল না। কারণ, তিনি ক্লাবকে কোনো সময় দেননি। এর পেছনেও মূল খলনায়ক রিয়াল সভাপতি নিজেই। তার প্রতি রোনালদোর বিরক্তি সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। রিয়ালে আরও গুরুত্ব চাচ্ছিলেন রোনালদো। কিন্তু মৌসুম শেষের আগেই পিএসজি তারকা নেইমারকে নিয়ে রিয়ালের অতি আগ্রহ দেখে মন ভেঙে যায় তার।
তাই, রিয়ালের সবচেয়ে বড় পাপ হলো একেবারে হাস্যকর দামে রোনালদোকে বেচে দেওয়া। অন্তত তার বর্তমান বাজারমূল্যের চেয়ে অর্থের পরিমাণটা এক কথায় সামান্য।
এই পাপের শাস্তি হচ্ছে এখনও রোনালদোর বিকল্প খুঁজে না পাওয়া। যে অর্থে তাকে বেচে দিয়েছে রিয়াল সেই দামের ধারেকাছে একই মানের খেলোয়াড় কেনা এখন অসম্ভব। আর এতেই বুঝা যায় রিয়াল কত বড় শাস্তি পাচ্ছে।
রদ্রিগোকে ১২০ মিলিয়ন ইউরোতে কেনা কিংবা এর কাছাকাছি দামে কাউকে কেনা এবং ক্লাবের ইতিহাসে সেরা গোলস্কোরারকে ১১২ মিলিয়ন ইউরোতে বেচে দেওয়া আসলে ব্যাখ্যা করা কঠিন যে, এটা ঠিক কত বড় ভুল।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৮
এমএইচএম