ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

লিভারপুল নাকি ম্যানচেস্টার সিটি?

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৯
লিভারপুল নাকি ম্যানচেস্টার সিটি? ভিন্ন ম্যাচে আজ খেলতে নামছে লিভারপুল ও ম্যানচেস্টার সিটি-সংগৃহীত

ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শ্রেষ্ঠ মৌসুম কোনটি? এমন প্রশ্নে অনেকে হয়তো বলবে, ২০১১-১২ মৌসুম। কেউ জানাবে চলমান ২০১৮-১৯ মৌসুমের কথা। তবে দুই মৌসুমই যে ইতিহাসে স্থান করে নিল এরইমধ্যে!

চলতি মৌসুমের আলোচনার আগে ফেরা যাক ২০১১-১২ মৌসুমে। ম্যানচেস্টার শহরের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাব ইউনাইটেড ও সিটি।

একই নগরের হলেও দুই ক্লাবের বৈরিতা-রেষারেষি সর্বজনবিদিত। শিরোপার জন্য সেই প্রতিযোগিতার ধ্রুপদি লড়াই হয়েছিল সেবার।

ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগের মধ্যে কেন প্রিমিয়ার লিগের মর্যাদা ভিন্ন তাই প্রমাণ করেছিল তারা। অনেক সময় ৩৮ ম্যাচের মধ্যে ৩০ ম্যাচ পার হয়ে গেলে বোঝা যায়, শিরোপা কাদের ঘরে যাচ্ছে। কিন্তু ঐ মৌসুমে অপেক্ষা করতে হয়েছিল শেষ ম্যাচ পযর্ন্ত। বলতে গেলে শেষ মিনিটটাও।

৩৭ ম্যাচ শেষে দুই দলের পয়েন্ট ছিল ৮৬। গোল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সিটিজেনরা। শেষ ম্যাচে ইউনাইটেডের প্রতিপক্ষ ছিল সান্ডারল্যান্ড। আর কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সের (কিউপিআর) বিপক্ষে নামে সিটি। সান্ডারল্যান্ডের মাঠে ওয়েন রুনির এক মাত্র গোলে জয় নিয়ে শিরোপা উৎসবেরও প্রস্ততি নিচ্ছিল রেড ডেভিলসরা।

অন্যদিকে ঘরের মাঠ ইতিহাদে তখনও ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে সিটি। তীরে এসে তরী ডোবার মতো অবস্থা। ম্যাচের নির্ধারিত সময়ও শেষ। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটেই সিটিকে সমতায় ফেরান এডিন জেকো। কিন্তু ড্র করলে তো হবে না। আদায় করতে হবে তিন পয়েন্ট। এর দুই মিনিট পরেই সেই কঠিন কাজটি করলেন সার্জিও আগুয়েরো।

স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের শিষ্যদের হাসি কেড়ে নিয়ে নাটকীয় ম্যাচ জিতে শিরোপা উৎসব করে সিটি। এরপরই মূলত প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটির রাজত্ব শুরু।

এর আগে যারা শেষ শিরোপা জিতেছিল ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে। ১৯৯২ সালে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ নাম হওয়ার পরেই রাজত্ব কায়েম করেছিল স্যার ফার্গুসনের দল। ম্যানসিটির সফলতা শুরু রবার্তো মানচিনির মাধ্যমে।

এই ব্যাটন এখন পেপ গার্দিওলার হাতে। গত মৌসুমে রেকর্ড ১০০ পয়েন্ট নিয়ে সিটিকে প্রিমিয়ার লিগ এনে দিয়েছেন তিনি। বার্সেলোনা-বায়ার্ন মিউনিখ অধ্যায় শেষে ইতিহাদে এসেই ফুল ফোটাতে লাগলেন পেপ। পেয়েছেন আধুনিক ফুটবলের ‘চে গুয়েভারা’ খেতাবও।

তবে শিরোপা ধরে রাখার মিশনে সিটিজেনদের এবার সবচেয়ে বড় বাধার নাম লিভারপুল। এক সময় অল রেডসদের হাতে ছিল ফুটবল শাসনের ভার। কিন্তু সেই সোনালি অতীতে জং ধরেছিল বড্ড বেশি। গত দুই মৌসুম ধরে ইয়র্গেন ক্লপের জাদুতে নিজেদের চেনারূপে ফিরেছে লিভারপুল।

কিন্তু একটা জায়গায় দুর্ভাগাই বলতে হবে ক্লপের দলকে। ৯৪ পয়েন্ট নিয়েও শিরোপা জেতেনি এমন নজির প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে নেই। ১৯৯৯-২০০০ মৌসুমে ইউনাইটেডের রেকর্ড ৯১ পয়েন্টের চেয়ে বেশি নিয়েও এবার লিগের শেষ ম্যাচ পযর্ন্ত করতে হচ্ছে লিভারপুলকে।

অলরেডসদের অপেক্ষা বাড়িয়েছে সিটি। ৯৫ পয়েন্ট নিয়ে এখন পযর্ন্ত শীর্ষে গার্দিওলার দল। তবে রোববার (১২ মে), রাত দশটার আগে ফয়সালা হবে শিরোপা যাচ্ছে কাদের ঘরে। টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা মিশনে গার্দিওলা সফল হবেন নাকি ২৯ বছরের খরা কাটাবে লিভারপুল। ২০ দলের ইংলিশ ফুটবল লিগে অল রেডসের ঘরে যে ১৯টি শিরোপা আছে তার শেষটি এসেছে ১৯৮৯-৯০ মৌসুমে।

মুখোমুখি না হলেও মৌসুমের শেষ ম্যাচটি তাই ফাইনালই বটে লিভারপুল-ম্যানসিটির জন্য। সেই ফাইনালে ব্রাইটনের মাঠে খেলবে সিটিজেনরা। আর ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে লিভারপুল আতিথেয়তা দিবে উলভসকে।

দীর্ঘ খরা কাটানোর জন্য রাতে লিভারপুল সমর্থকরা প্রার্থনায় বসবে নিজেদের জয় ও সিটির পরাজয় বা ড্রয়ের জন্য। আর সিটির দরকার কেবল তিন পয়েন্ট। তাহলেই মীমাংসা হবে রোমাঞ্চকর এক মৌসুমের শিরোপার।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘন্টা, মে ১২, ২০১৯
ইউবি/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।