অনেকের মতে, ভারত, ওমান এবং বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতারের মতো দল নিয়ে গঠিত গ্রুপে বাংলাদেশ শুরু করবে ‘আন্ডারডগ’ হিসেবে। ফিফা র্যাংকিংয়ের ১৮২তম স্থানে থাকা বেঙ্গল টাইগাররা গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
পরের বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ কাতার গ্রুপের অবিসংবাদিত ফেভারিট। বাংলাদেশ বরং রানার্স-আপ হওয়ার জন্য লড়াই করতে পারে। তবে এটাও অনেক কঠিন লক্ষ্য বাংলাদেশের জন্য। যদিও দলের ইংলিশ কোচ জেমি ডে’র বিশ্বাস, বর্তমান বাংলাদেশ দল গ্রুপে চমক দেখাতে সক্ষম।
ফিফা ডট কম’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেমি ডে বলনে, ‘আমরা জানি আমাদের (গ্রুপের) চার প্রতিপক্ষের প্রত্যেকেই র্যাংকিংয়ে আমাদের চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে এবং এজন্যই আমাদের বাস্তবধর্মী হতে হবে। এই আসর আমাদের জন্য কঠিন হবে, কিন্তু আমরা আমাদের অভিজ্ঞতার সর্বোচ্চ ব্যবহার করব এবং আশা করি এই পথে আমরা কয়েকটি চমকে দেওয়া ফলাফল পাবো। ’
এদিকে বাংলাদেশ দলের সমর্থকরা দারুণ শুরুর প্রত্যাশা করলেও ডে আফগানদের হালকাভাবে না নিতে তার শিষ্যদের সাবধান করে দিলেন। সাবেক আর্সেনাল মিডফিল্ডার বলেন, ‘এটা (আফগানিস্তান ম্যাচ) আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে যেহেতু আমরা বিদেশের মাটিতে খেলব। তাদের দলটিতে দারুণ কয়েকজন খেলোয়াড় আছে, যারা ইউরোপের ক্লাব ফুটবলে খেলে। পয়েন্ট পেতে হলে আমাদের সেরাটা খেলতে হবে। ’
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া লিগের নিচুসারির কয়েকটি ক্লাবের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ডে’কে গত বছর একসঙ্গে দুটি দায়িত্ব তুলে দেয় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। জাতীয় দলের পাশাপাশি অনূর্ধ্ব-২৩ দলের দায়িত্ব নিয়ে তার প্রথম সাফল্য আসে গত অক্টোবরে। এশিয়ান গেমসের আসরে সেবার শেষ আটে গিয়ে শেষ হয় জুনিয়র দলের জয়োৎসব। তবে ওই আসরে কাতারকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেওয়া ছিল সবচেয়ে বড় চমক।
জেমি ডে’র অধীনে জুনিয়র দল তাদের সাফল্যের ধারা বজায় রেখেছে এবং তাদের কয়েকজন সিনিয়র দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। শুধু তাই না, বর্তমান দলটির ১৬জনই এসেছেন অনূর্ধ্ব-২৩ থেকে। এজন্য বাংলাদেশ দলকে বলা হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে তারুণ্য সমৃদ্ধ দল।
বাংলাদেশের এই দলটিকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করা নিয়ে ডে বলেন, ‘আমাদের জাতীয় দলে তরুণ প্রতিভার দারুণ সমন্বয় ঘটেছে। অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের সহায়তা করছে। নতুন ও পুরনোদের মধ্যে এই সমন্বয় আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে ভালোভাবেই সাহায্য করছে। ’
আফগানদের বিপক্ষে জয় দলের পরবর্তী ম্যাচের আগে বাড়টি রসদ যোগাবে। পরের ম্যাচের প্রতিপক্ষ গ্রুপের সবচেয়ে শক্তিশালী দল কাতার। ওই ম্যাচে জয় পেলে সেটা হবে অসাধারণ কিছু। তবে বিশ্বকাপের আয়োজক দেশের বিপক্ষে খেলতে পারাও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ডে। তিনি বলেন, ‘এশিয়ার সেরা দলের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাও আমাদের খেলোয়াড়দের জন্য দারুণ কিছু। আশা করি, ওরা কোনো চাপ না নিয়েই খেলবে, অভিজ্ঞতাটা উপভোগ করবে এবং তাদের সামর্থ্যের সেরাটাই দেবে। ’
‘আমাদের ম্যাচ বাই ম্যাচ ধরে এগুতে হবে যাতে আমাদের তরুণ খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক ফুটবলের মূল্যবান অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। আশা করি এই অভিজ্ঞতা তাদেরকে আরও ভালো খেলোয়াড় হতে সাহায্য করবে, যাতে আগামী বছরগুলোতে তারা জাতীয় দলের কেন্দ্র হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে। ’
১ সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানে পৌঁছেছে লাল-সবুজের দল। ৩ ও ৫ সেপ্টেম্বর দেশটির দুই ক্লাব এফসি কুকতোস ও সিএসকেএ পামিরের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে জেমি ডে’র শিষ্যরা। পরে ১০ সেপ্টেম্বর দুশানবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামবেন জামাল ভুঁইয়ারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৩, ২০১৯
এমএইচএম