ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

ইচ্ছে থাকলেও আর মাঠে ফেরা হলো না

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
ইচ্ছে থাকলেও আর মাঠে ফেরা হলো না বাঁয়ে এক পা হারানো ফুলম্যান, মাঝে নেতো আর ডানে রাসেল

২০১৬ সালের নভেম্বরে ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান ক্লাব শাপেকোয়েন্সের অধিকাংশ ফুটবলারসহ ৭১ জন। নেতো, জ্যাকসন ফুলম্যান এবং অ্যালান রাসেল ছাড়া শাপোকোয়েন্সের সব খেলোয়াড় প্রাণ হারান।

কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালে কলম্বিয়ান ক্লাব অ্যাথলেটিকো ন্যাসিওনেলের মুখোমুখি হতে কলম্বিয়া রওয়ানা দিয়েছিল শাপোকোয়েন্সের ফুটবলাররা। বিমানে মোট আরোহী ছিলেন ৭৭ জন।

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কবলে পড়ে কলম্বিয়ার দুর্গম এক পাহাড়ি এলাকায় বিধ্বস্ত হয় বিমানটি।

দীর্ঘ লড়াইয়ের পর বেঁচে যাওয়া শাপোকোয়েন্সের ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার নেতো মাঠে ফেরার চেষ্টা করেও হাল ছেড়ে দিলেন। বুটজোড়া তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনার পর বেঁচে যাওয়া এই ডিফেন্ডার।

ব্রাজিলের রিও ডি জেনেইরোতে জন্ম নেওয়া নেতো দেশটির গুয়ারানি, মেট্রোপলিটিয়ানো, সান্তোস আর সবশেষ শাপোকোয়েন্সের জার্সিতে। ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৬৮ ম্যাচ। এই সেন্টার ব্যাক গোল করেছেন ১০টি।

বিদায়বেলায় এই ব্রাজিলিয়ান জানান, ‘আমার শরীর খেলার জন্য সায় দিচ্ছে না। বুকের ভেতরের কষ্ট (সতীর্থদের হারানোর কষ্ট) চাপা দিলেও শরীরের ব্যথা চাপা দিতে পারছি না। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেই অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার প্রতিদিনের রুটিনমাফিক কাজে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু ফুটবলের জন্য যে হাই-লেভেলের অনুশীলন দরকার সেটা করতে পারছি না। অনুশীলনের পর হাঁটুতে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব হয় এবং পিঠের ব্যথা আমাকে কাবু করে তোলে। মাঠের বাইরে থাকাটা আমার জন্য অন্যরকম এক কষ্টের। ’

তিনি আরও জানান, ‘৪ ডিসেম্বর সিএসএ’র বিপক্ষে আমাকে খেলার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ফেয়ারওয়েল ম্যাচ খেলার সুযোগ করে দেওয়া হলেও আমি পারছি না। আমার কঠিন সময়ে যারা পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের জন্য থাকবে কৃতজ্ঞতা। কখনও কখনও যন্ত্রণা হয়তো আনন্দের চেয়েও বড় হয়ে দেখা দেয়। সে কারণেই আমার খেলা ছাড়ার সিদ্ধান্ত। ’

শাপোকোয়েন্সের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সাফল্য ছিল কোপা সুদামেরিকানার ফাইনালে ওঠা। অ্যাথলেটিকো ন্যাসিওনেলের বিপক্ষে সেই ফাইনাল আর শেষ পর্যন্ত খেলা হয়নি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির। তবে অ্যাথলেটিকো ন্যাসিওনেল এবং লাতিন আমেরিকা ফুটবল কনফেডারেশন, কনমেবলের কর্মকর্তারা কোপা সুদামেরিকানা জয়ী হিসেবে শাপোকোয়েন্সকেই ঘোষণা করেছিল। দলটি হুয়ান গাম্পার ট্রফিতে অংশ নিয়েছিল, খেলেছিল স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনার মাঠে।

তিন ফুটবলার সহ ছয়জন মৃত্যুকে জয় করে ফিরেছেন স্বাভাবিক জীবনে। দুর্ঘটনায় বেঁচে যাওয়া শাপোকোয়েন্সের তিন জনের একজন ছিলেন গোলরক্ষক জ্যাকসন ফুলম্যান। তিনি নিজের একটি পা হারিয়েছেন। বেঁচে ফেরা নেতো, ফুলম্যান আর রাসেল সতীর্থদের স্মরণে একটি চ্যারিটি ম্যাচে খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে পাওয়া অর্থ শাপোকোয়েন্সের মৃত ফুটবলারদের পরিবার আর ভেঙে পড়া ক্লাবের উন্নয়নের কাজে ব্যয় হয়।

জ্যাকসন ফুলম্যান ফুটবলকে বিদায় জানিয়েছেন আগেই। এবার তার পদাঙ্কই অনুসরণ করতে বাধ্য হলেন নেতো। তবে, রাসেল খেলছেন প্রথম ডিভিশনের একটি ক্লাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৯
এমআরপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।