চ্যাম্পিয়নস লিগে নেইমারের হ্যাটট্রিক ও কিলিয়ান এমবাপ্পের জোড়া গোলে ইস্তানবুল বাসাকসেহিরকে ৫-১ ব্যবধানে উড়িয়ে গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে পিএসজি। আসরটিতে দুই বছর পর হ্যাট্রট্রিক করলেন ব্রাজিল তারকা নেইমার।
বুধবার রাতে ঘরের মাঠে পার্ক দেস প্রিন্সেসে ‘এইচ’ গ্রুপে দ্বিতীয় দিন তুরস্কের ক্লাবটির মুখোমুখি হয় টমাস টুখেলের শিষ্যরা। কেননা আগের দিন খেলা চলাকালীন বর্ণবাদী মন্তব্যের অভিযোগ তুলে বাসাকসেহিরের খেলোয়াড়রা মাঠ ছাড়লে সেদিন খেলা স্থগিত রাখে উয়েফা। মঙ্গলবার ১৪ মিনিট খেলা হওয়ার পর ম্যাচ স্থগিত হয়েছিল, সেখান থেকেই খেলা শুরু হয়।
অবশ্য মঙ্গলবারই লাইপজিগের বিপক্ষে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হারে পিএসজির পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। আর এবার বড় এই জয় গ্রুপ সেরা হয়েই পরের পর্বে গেল।
হাঁটু গেড়ে বসে এক হাত উপরে তুলে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানান রেফারি ও দুই দলের খেলোয়াড়রা। আগের দিন একজন ম্যাচ অফিসিয়ালের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী ভাষা ব্যবহারের অভিযোগ ওঠায় এই ম্যাচ পরিচালনা করেন নতুন অফিসিয়ালরা।
পুরো ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে এদিন জয় তুলে নেয় পিএসজি। যেখানে ২১তম মিনিটে নেইমারের চমৎকার ফিনিশিংয়ে এগিয়ে যায় পিএসজি। মার্কো ভেরাত্তির কাছ থেকে বল পেয়ে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড়ের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বের করে নেন নেইমার। কিছুটা এগিয়ে ডান পায়ের কোনাকুনি শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড খুঁজে নেন জাল।
৩৮তম মিনিটে গোলরক্ষকের ব্যর্থতার সুযোগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন নেইমার। প্রতি-আক্রমণ থেকে বল পেয়ে রাফিনিয়া বল বাড়ান এমবাপেকে। তিনি খুঁজে নেন অরক্ষিত নেইমারকে। সামনে ছিলেন কেবল গোলরক্ষক, প্রায় তার গা ঘেঁষেই শট নিয়ে বসেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। গোলরক্ষকের পায়ে লেগে গতি কিছুটা কমে বল জড়ায় জালে।
খেলার ৪২তম মিনিটে সফল স্পট কিকে ব্যবধান ৩-০ করেন এমবাপ্পে। চলতি বছর এবং চলতি আসরে ইউরোপ সেরার মঞ্চে এটাই তার প্রথম গোল।
বিরতির ঠিক পরেই হ্যাটট্রিক পূরণ করেন নেইমার। দ্বিতীয়ার্ধে বদলি নামা আনহেল দি মারিয়ার সঙ্গে ‘ওয়ান-টু-ওয়ান’ খেলে ডি বক্সের বাইরে থেকে ডান পায়ের শটে জাল খুঁজে নেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি তার তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এই টুর্নামেন্টে নেইমারের চেয়ে বেশি হ্যাটট্রিক আছে কেবল লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর (৮টি করে)।
বাসাকসেহির ৫৭তম মিনিটে খেলার ধারার বিপরীতে ব্যবধান কমায় । কর্নার থেকে বল পেয়ে বুলেট গতির শট নেন ইরফান হাকভেচি। নাভাসের একটু সামনে দাঁড়িয়ে থাকা মোহামেত টোপালের গায়ে লেগে দিক পাল্টে বল জড়ায় জালে। তবে পাঁচ মিনিট পর ব্যাবধান ৫-১ করে ফেলেন এমবাপ্পে। নেইমারের দারুণ পাস পাওয়া দি মারিয়া নিজেই গোলের জন্য শট নিতে পারতেন। তা না করে খুঁজে নেন ফাঁকায় থাকা এমবাপ্পেকে। বাকিটুকু অনায়াসে সারেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের বাকি সময় পিএসজি আরও কয়েকটি প্রচেষ্টা চালায়। তবে আর কোনো গোল হয়নি। কিন্তু উড়ন্ত জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়েছে পিএসজি। মুখোমুখি লড়াইয়ে পিছিয়ে দুই নম্বরে লাইপজিগ। আগের দিন তাদের বিপক্ষে ৩-২ গোলে হেরে যাওয়া ইউনাইটেড খেলবে ইউরোপা লিগে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১০, ২০২০
এমএমএস