ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফুটবল

বিদায় ‘ক্যাপ্টেন রামোস’

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২১
বিদায় ‘ক্যাপ্টেন রামোস’ রিয়ালের একটা যুগের নেতা ছিলেন রামোস/সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ ১৬ বছর যে ক্লাবের হয়ে অসংখ্য লড়াই জিতেছেন, একঝাঁক রথী-মহারথীদের সামলে সামনে থেকে দিয়েছেন নেতৃত্ব, এনে দিয়েছেন অগুনতি সাফল্য, যেখানে খেলে নিজেকে নিয়ে গেছেন কিংবদন্তির পর্যায়ে, সেই প্রিয় রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলে দিলেন সার্জিও রামোস।  

বৃহস্পতিবার এক আবেগঘন পরিবেশে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন রামোস।

৩৫ বছর বয়সী স্প্যানিশ ডিফেন্ডার বিদায়বেলায় অশ্রুসজল চোখে বললেন, ‘সময় হয়ে গেছে। আমার জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময় বলা যায়। সময় এসে গেছে রিয়াল মাদ্রিদকে বিদায় বলে দেওয়ার। আমার বাবার হাত ধরে এখানে এসেছিলাম (কান্না)। '

তিনি আরও বলেন, ‘নিজেকে সামলানো কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমি খুব করে চেয়েছিলাম আমাদের স্টেডিয়াম সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে বিদায় বলে দেওয়ার। ধন্যবাদ, রিয়াল মাদ্রিদ। আমার হৃদয়ে আজীবন থাকবে তুমি। আমার জীবনের সবচেয়ে অসাধারণ সময় কেটেছে এখানে। সবাইকে ধন্যবাদ। এটা বিদায়ের চেয়েও বেশি কিছু; আমাদের দেখা হবে, কারণ আমি ফিরে আসবো। ’

বিদায়ের কারণ হিসেবে রামোস বলেন, 'আমার প্রথম পছন্দ ছিল থেকে যাওয়া। আমাকে বেতনে কিছু কাটছাঁট করে ১ বছরের চুক্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। অর্থ কোনো সমস্যা নয় এখানে। আমি আমার এবং আমার পরিবারের জন্য দুই বছরের চুক্তি চেয়েছিলাম। শেষদিকে আমি ১ বছরের চুক্তি মেনেও নিয়েছিলাম, কিন্তু ক্লাবের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো, প্রস্তাব আর টেবিলে নেই। '

রামোসের বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে রিয়ালের একটা যুগের পরিসমাপ্তি ঘটলো। এখানে কাটানো ১৬ বছরে নিজেকে ধীরে ধীরে ক্লাবের ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তিনি। রিয়ালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফ্লোরেন্তিনো পেরেজ দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম স্প্যানিশ খেলোয়াড় হিসেবে ২০০৫ সালে সেভিয়া থেকে ২৭ মিলিয়ন ইউরোর রামোসের আগমন ঘটে।  

রিয়ালে আসার পর থেকে ক্লাবটির আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম নেতা হিসেবে আবির্ভাব ঘটে রামোসের। এই সময়ে সেই গ্যালাক্টিকো যুগ থেকে হোসে মরিনহোর অস্বাভাবিক সময়কাল এবং ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালের মাঝে ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার অন্যতম সেনানী ছিলেন তিনি।

রামোসের কিংবদন্তির শুরুটা মূলত ২০১৪ সাল থেকে। ১২ বছরের প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে সেবার নিজেদের ক্লাবের ইতিহাসের ১০ম ইউরোপিয়ান কাপ জেতার স্বাদ পায় লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। এরপর ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আসে আরও ৩টি ইউরোপা সেরার মুকুট।  

রিয়ালের জার্সিতে ১০১ গোল এবং ২২টি শিরোপা জেতার অসাধারণ কীর্তির মালিক রামোস। ক্লাবের হয়ে তার এমন অবিশ্বাস্য ফর্মের প্রতিফলন ঘটেছে স্পেন জাতীয় দলেও। ২০১০ বিশ্বকাপ এবং ২০০৮ ও ২০১২ ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জেতা স্প্যানিশ দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলার তালিকায় চারে অবস্থান রামোসের। তার ৬৭১ ম্যাচের বিপরীতে এগিয়ে আছেন যথাক্রমে রাউল গঞ্জালেস, ইকার ক্যাসিয়াস এবং মানোলো সানচিস। ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে গত মৌসুমটা বাজেভাবে কেটেছে তার। দলও ছিল শিরোপাশূন্য। এতেই দলের সাফল্যে তার প্রভাব বোঝা যায়। ফলে, বিদায় বলে দিলেও রিয়ালের ইতিহাস তাকে ‘ক্যাপ্টেন’ হিসেবেই মনে রাখবে।

 

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৪ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০২১
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।