ব্রাজিলকে বলা হয় 'ফুটবলের দেশ'। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটিতে খেলাটির জনপ্রিয়তা বাকি সবকিছুর ঊর্ধ্বে।
কিন্তু দিন বদলেছে। নতুন প্রজন্মের ব্রাজিলিয়ানরা এখন আর আগের মতো শুধু ফুটবল নিয়ে মেতে থাকে না। তাছাড়া আগের সেই 'সর্বজয়ী' ব্রাজিল দলও আর নেই, সেই প্রতিভার ছড়াছড়িও নেই। ফলে জাতীয় দল নিয়ে দেশটির তরুণদের মধ্যে আগের সেই 'ক্রেজ' নেই। কিন্তু বিষয়টা ঠিক হজম করতে পারছেন না নেইমার জুনিয়র। ব্রাজিলের বর্তমান প্রজন্মের সেরা এই ফুটবলার এ নিয়ে আগেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। এবার তার সমালোচনার ভাষা আরও রুক্ষ।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নেইমার দাবি করেন, ব্রাজিল জাতীয় দলকে নিয়ে তাদের দেশেই খুব একটা মাতামাতি হয় না। এমনকি পিএসজি ফরোয়ার্ড অভিমানের সুরে বলেন, তার নিজের খেলা নিয়েও তার দেশে যথেষ্ট আলোচনা হয় না। যদিও ব্রাজিল টানা ১৫ ম্যাচে অপরাজিত থেকে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে কাতার বিশ্বকাপে পা রেখেছে। কিন্তু ব্রাজিলে এ নিয়ে কোনো 'হাইপ' নেই। তিতের দল নিয়ে সেভাবে কোনো প্রত্যাশাও করতে দেখা যায় না ব্রাজিলিয়ানদের।
'ফেনোমেনোস' পোডকাস্টে নেইমার বলেন, 'এখন সেলেসাও এবং সমর্থকদের মাঝে বিশাল দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আমি জানি না কেন এমন হলো; কিন্তু আমাদের খেলা নিয়ে এখন খুব আলোচনা হয়। এটা দুঃখজনক যে, আমরা এমন একটা প্রজন্ম রেখে যাচ্ছি যারা ব্রাজিল জাতীয় দলের গুরুত্ব বুঝে না। '
ব্রাজিল জাতীয় দলের সঙ্গে নেইমারের সম্পর্ক বেশ আবেগের। কিন্তু বিশাল প্রত্যাশার চাপ নিতে গিয়ে তার মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি তার। কিন্তু ব্রাজিলের সাফল্য তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গত কোপা আমেরিকার ফাইনালে হারের পর তার কেঁদে বুক ভাসানোর দৃশ্য ফুটবলভক্তদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও অনেকটা পরিষ্কার যে, এত বিশাল প্রত্যাশার চাপ খুব বেশিদিন বহন করতে পারবেন না তিনি।
গত বছর কোপায় শিরোপা জিততে ব্যর্থতার পর এক সংবাদমাধ্যমকে নেইমার বলেছিলেন, 'আমার মনে হয় এটাই (২০২২ বিশ্বকাপ) আমার শেষ। আমি নিজেই এটাকে শেষ হিসেবে নিচ্ছি, কারণ আমি জানি না ফুটবলের চাপ নেওয়ার মতো আমার মানসিক শক্তি আদৌ আছে কি না। তাই আমি সব ঠিকঠাক করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করব; আমার দেশের হয়ে জেতার জন্য, যা শৈশব থেকেই আমার সবচেয়ে বড় স্বপ্ন। আমি আশা করি আমি পারব। '
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
এমএইচএম