পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে ইউক্রেনে সর্বাত্মক সামরিক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। এরইমধ্যে ইউক্রেনের কয়েকশ সেনা ও সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার কিছু আগে টেলিভিশন ভাষণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান চালানোর ঘোষণা দেন। ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর দুই পক্ষের মধ্যেই হতাহতের খবর আসতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় ইউক্রেনের ক্রীড়াক্ষেত্রে কিংবদন্তির আসনে বসা বেশ কয়েকজন ক্রীড়াবিদ রাশিয়ার আগ্রাসনের কঠোর সমালোচনা করেছেন। তারা কিছুতেই নিজেদের মাতৃভূমিকে রাশিয়ার 'দখলে যেতে দেওয়া হবে না' বলে হুশিয়ারি দিচ্ছেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন ভ্লাদিমির ক্লিটসকো। ইউক্রেনের এই কিংবদন্তি বক্সার চলতি মাসেই নিজ দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছেন। রাশিয়ার হামলা শুরুর পর টুইটারে দুইবারের এই হ্যাভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন লিখেছেন, 'জেনে রাখুন, ইউক্রেন শক্তিশালী। আমাদের শক্তিশালী রাজধানী কিয়েভ রয়েছে, শক্তিশালী শহর, গ্রাম এবং শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ জাতি রয়েছে; যাদের কাছে ইউরোপের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও শান্তি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অস্তিত্ব অসীম। ইউক্রেনের জয় হোক!'
তিনি আরও লিখেছেন, 'গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা অমূল্য... ইউক্রেন শান্তি স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্ব চায়। আমি কিয়েভকে রক্ষা করতে আঞ্চলিক বাহিনীর রিজার্ভ হিসেবে যোগ দিয়েছি; ইউক্রেনে এখন যা হচ্ছে এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে যে আগ্রাসন দেখানো হচ্ছে তার মোকাবিলা করতে। '
ক্লিটসকোর ছোট ভাই ও আরেক সাবেক চ্যাম্পিয়ন ভিতালি ক্লিটসকো আবার কিয়েভের বর্তমান মেয়র।
ইউক্রেনের কিংবদন্তি ফুটবলার এবং ব্যালন ডি'অরজয়ী আন্দ্রে শেভচেঙ্কো টুইটারে লিখেছেন, 'ইউক্রেন আমার মাতৃভূমি! এই দেশ এবং দেশের জনগণ নিয়ে আমি গর্বিত। আমরা অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছি এবং গত ৩০ বছরে আমরা একটা জাতি হয়ে উঠেছি। আমরা আন্তরিক, পরিশ্রমী এবং স্বাধীনতাপ্রেমী জাতি। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় সম্পদ। ’
ম্যানচেস্টার সিটির ফুটবলার এবং ইউক্রেন জাতীয় দলের অধিনায়ক ওলেক্সান্দার জিনচেঙ্কো হামলার আগে ইনস্টাগ্রামে লিখেছিলেন, ‘দেশটা ইউক্রেনিয়ানদের এবং কেউ তা কেড়ে নিতে পারবে না। আমরাও ছাড় দেব না। এই দেশে আমি জন্মেছি, বেড়ে উঠেছি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের জার্সির প্রতিনিধিত্ব করি। এই দেশটাকে আমরা গৌরবান্বিত করার চেষ্টা করছি। আমাদের সীমান্ত অবশ্যই অক্ষত রাখতে হবে। ’
হামলার পর নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে পুতিনের একটা ছবি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘দানব, আশা করি সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হবে তোর। ’ তবে কিছুক্ষণ পর সেই পোস্ট মুছে যায়। তার দাবি, ইনস্টাগ্রামই মুছে দিয়েছে এই বার্তা।
ইউক্রেনের কিংবদন্তি দাবাড়ু ক্যারি কাসপারভ টুইটে লিখেছেন, '২০১৪ সালে ইউক্রেনে হামলার পর থেকে রাশিয়ার সঙ্গে যত ডলারের ব্যবসা করা হয়েছে, তাদের বন্ধুদের সঙ্গে যত ইউরোর অবৈধ চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে; তা ইউরোপের সাধারণ মানুষদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর যুদ্ধমেশিন বানাতে পুতিনের কাজে লেগেছে। '
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২২
এমএইচএম