ঢাকা: ছাদখোলা বাসে বাংলাদেশে এই প্রথম কোনো ক্রীড়া দলকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। এদিন প্রকৃতি যেন সেজেছে অন্য সাজে।
এ যেন সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের জন্য প্রকৃতির আয়োজন। আনন্দ-উল্লাস করে তারা ছাদখোলা বাসে বিজয় সরণী পার হয়েছে। বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিজয় সরণীতে এমন চিত্র দেখা যায়। এরপর ৬টা ১৫মিনিটে রাজধানীর কাকরাইল মোড় পার করে তারা।
বাসের গায়ে ব্রান্ডিং করার স্টিকার প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান পিক্সেল কমিউনিকেশনসের সত্ত্বাধিকারী মিজান মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, কাল সারারাত ধরে আমরা এই স্টিকার তৈরি করেছি। আমরা তো কাজের মানুষ। অন্য সবার মত আমরাও আনন্দিত। তবে এই কাজটা করেছি আনন্দ নিয়ে। দায়িত্ববোধ থেকে।
কাকরাইলে যখন দাঁড়িয়ে আছি, দুই শিক্ষার্থী তাহসিন আহমেদ, মাসুদ কবির সায়েম নামে দুইবন্ধু এসে বাফুফে ভবনের ঠিকানা জানতে চাচ্ছিলেন। তাদের সাথে কথা হলে জানালেন, রাজধানীর মধুবাগ থেকে জয়ী দলের এই আয়োজন দেখতে এসেছেন তারা। দুইজনই কলেজ শিক্ষার্থী। কথায়-কথায় বললেন, আমরা বাসায় না জানিয়ে এসেছি। আনন্দ হচ্ছে। বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন হল। তাই দেখতে এসেছি।
এর আগে দেখা যায়, ছাদখোলা বাসে সাফজয়ী খেলোয়াড় ও কর্মকর্তারা রাস্তায় ভক্তদের অভিবাদনে সাড়া দিচ্ছিলেন। হাত তুলে বা ফুলের পাপরি ছিটিয়ে। ফুটবলাররা কেউ বসে, কেউ বা দাঁড়িয়ে উল্লাস করতে করতে যাচ্ছিলেন। এসময় তাদের বাসের সামনে ও পিছনে বিভিন্ন মিডিয়ার গাড়ি দেখা যায়। এছাড়াও বাসটির সঙ্গে ছিল শতাধিক মোটরসাইকেল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি তাদের নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল।
মনিপুরী পাড়ার বাসিন্দা ও ফুটবল ভক্ত মো. সোহেল বাংলানিউজকে বলেন, টিভিতে দেখেছি এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রা শুরু করেছে নারী ফুটবল খেলোয়াড়রা। তখনই বাসা থেকে বাইরে এসেছি তাদের দেখতে। এক ঘন্টা যাবত অপেক্ষা করছি। এয়ারপোর্টে খেলোয়াড়দের সংবর্ধনা দিতে মোটামুটি ভালোই লোক রয়েছে। কিন্তু এখানে (বিজয় সরণিত) কোন লোক নেই।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টা ৪৫মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নামেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, যুব ও ক্রীড়া সচিব এবং মন্ত্রণালয় ও বাফুফে কর্মকর্তারা।
ক্রীড়াসংশ্লিষ্টরা জানান, ছাদখোলা বাসে কোনো ক্রীড়া দলকে সংবর্ধনা দেওয়া বাংলাদেশে এটাই প্রথম। ১৯৯৭ সালে জাতীয় ক্রিকেট দল আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাওয়ার পর তাদের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে গণসংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। তবে বিমানবন্দর থেকে দল শহরে এসেছিল শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসে।
বিমানবন্দর থেকে ছাদ খোলা বাসটি যাত্রা শুরু করে কাকলি হয়ে। এরপর মহাখালী ফ্লাইওভার ব্যবহার করে জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অফিসের পর বিজয় সরণীতে এসে হাতের বাঁয়ে চলে যাবে। সেখান থেকে তেজগাঁও হয়ে পুনরায় ফ্লাইওভার দিয়ে মৌচাক হয়ে কাকরাইলে আসবে। কাকরাইল থেকে হাতের বাঁয়ে- ফকিরাপুল, আরামবাগ এবং মতিঝিল ও শাপলা চত্বর হয়ে বাফুফে এসে পৌঁছাবে। বাফুফে ভবনে উপস্থিত থাকবেন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। মেয়েরা আসার পর তাদেরকে ফুল দিয়ে তিনি বরণ করে নেবেন। এরপর ফটোসেশন হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০২২
এমএমআই/এমকে/আরইউ