প্যারিস, ফ্রান্স: বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনের বাকি মাত্র দু’দিন। এরইমধ্যে জাতিসংঘের এ সম্মেলনের অগ্রগতি ও অর্জন নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা ধূম্রজাল।
![](files/December2015/December09/2222_937059416.jpg)
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, বাংলাদেশের মতো দেশগুলো এই চুক্তিতে আগ্রহী হলেও চীন, ভারতের মতো দেশগুলো এতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তাই এ নিয়েই তৈরি হয়েছে ধূম্রজাল।
![](files/December2015/December09/33_142876561.jpg)
বাংলাদেশের জলবায়ু বিশেষজ্ঞ ড. আতিক রহমানের ভাষায়, চুক্তি ঠিকই হবে। তবে তাতে আইনি বাধ্যবাদকতার বিষয়টি থাকছে না। এটা থাকছে, রিভিউ অবজারভেশনের ফরম্যাটে। তবে কোনো চুক্তি হলে তা অবশ্যই সব দেশ মানতে বাধ্য থাকবে।
![](files/December2015/December09/4_742414683.jpg)
এখন পর্যন্ত আলোচনায় যে বিষয়গুলো উঠে এসেছে তার অন্যতম গ্রিন হাউজ গ্যাসের নির্গমনের মাত্রা কমানো ও বৈশ্বিক তাপমাত্রা নির্ধারণ। এখন পর্যন্ত এই গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি কমানোর যে আলোচনা চাউর আছে, তা সম্ভব হবে না বলেই ধারণা সম্মেলনে যোগ দেওয়া বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞদের।
![](files/December2015/December09/5_149414821.jpg)
তারা বলছেন, তাপমাত্রা কমানো তো যাবেই না বরং তা বাড়তে পারে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ডিগ্রি পর্যন্ত। অথচ এটা কমানো না গেলে সারা বিশ্বের কম পক্ষে ৪০ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। তবে তাপমাত্রার এই বৃদ্ধি যাতে ২ ডিগ্রি ক্রস না করে, সে উদ্যোগই নিতে হবে সবাইকে।
![](files/December2015/December09/6_758311374.jpg)
যে যাই বলুক, বাংলাদেশ এই শতকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা দেড় ডিগ্রির বেশি বাড়তে দিতে নারাজ। সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট আল গোর ও সম্মেলনে দেওয়া তার বক্তৃতায় জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের সম্ভাব্য ক্ষতি ও বিশাল জনগোষ্ঠীর বাস্তুচ্যুত হওয়ার শঙ্কার বিষয়টি সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
![](files/December2015/December09/1_1_155713621.jpg)
ড. আতিক রহমান জানান, তাপমাত্রা বাড়ার ফলে জলবায়ু পরির্তনের সংকট এরইমধ্যে সারা বিশ্বে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে সমুদ্রপৃষ্ঠ বাড়ছে। আফ্রিকার দেশগুলোতে পানির উৎস দূরে সরে যাচ্ছে। আবার সাইবেরিয়া অঞ্চলে গলতে শুরু করেছে হিমবাহ।
তিনি বলেন, এখন আমাদের ঠিক করতে হবে জলবায়ু পরিবর্তনের এই সংকট মোকাবেলায় তহবিল গঠনের। তবে আগে যে ১শ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের কথা উঠেছিল, তাতে সংকট মোকাবেলা সম্ভব হবে না। এজন্য কমপক্ষে প্রয়োজন হবে ৫শ বিলিয়ন ডলার। তবে এখনই ব্যবস্থা না নিলে এ টাকায়ও বিশ্বকে বাঁচানো যাবে না।
অন্যদিকে এবারের সম্মেলনে জলবায়ু তহবিলের অর্থ ব্যয়ে বিশ্বব্যাপী স্বচ্ছতার বিষয়টিও উঠে এসেছে। এমন কি এই অর্থ সরকারি-বেসরকারিভাবে, স্থানীয়ভাবে না আন্তর্জাতিকভাবে নজরদারির মাধ্যমে ব্যবহার হবে তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। বাংলাদেশ অবশ্য বরাবরের মতো জলবায়ু খাতে দেওয়া টাকা ঋণ হিসেবে না নিয়ে সাহায্য আকারে দেওয়ার অবস্থানে সোচ্চার রয়েছে।
![](files/December2015/December09/2_2_665034556.jpg)
এবারের সম্মেলনের এখন পর্যন্ত অবস্থা সম্পর্কে ড. আতিক রহমান বলেন, এবার নানা কারণে সম্মেলনের শুরুর দিকেই বিশ্বনেতারা উপস্থিত ছিলেন। বারাক ওবামা বা নরেন্দ্র মোদি সম্মেলনে যে বক্তব্য দিয়েছেন, যে কমিটমেন্ট করেছেন এখন শেষ দিকে এসে সম্মেলন সে মান ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। বলা যায়, এখনের আলোচনাগুলো বিশ্বনেতাদের দেওয়া বক্তব্যকে অনুবাদ করতে পারছে না।
তিনি আরও বলেন, এবারের সম্মেলনে ইস্যু অনেক। অল্প ইস্যু থাকলে সমাধান সহজ হয়। তাছাড়া কেউই কমপ্লিট একটি ইস্যুতে কথা বলছেন না। সবাই নিজেদের ইস্যু নিয়ে কথা বলছেন। তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কোপেনহেগেন চুক্তি থেকে যেহেতু কারও বের হওয়ার উপায় নেই, তাই একটা কিছু হবেই।
৩০ নভেম্বরে শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হবে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এবারের সম্মেলনে ১৯৬ দেশের ৪৫ হাজার অংশগ্রহণকারী অংশ নিচ্ছে। যার মধ্যে দেড় শতাধিক রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৫
আরএম/এএ
** বাংলানিউজের মাসুদ এখন প্যারিসে