ঢাকা, বুধবার, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

জনবল সংকটে ধুঁকছে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
জনবল সংকটে ধুঁকছে মনপুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স 

ভোলা: রয়েছে আধুনিক ভবন।  পর্যাপ্ত ওষুধ আর পরিচ্ছন্ন পরিবেশ।

নেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা। ১০ জন ডাক্তারের জায়গায় রয়েছেন চারজন। ৩০ নার্সের বিপরীতে আছেন আটজন। শুধু তাই নয়, ল্যাব-টেকনিশিয়ানের বেশিরভাগ পদ শূন্য। পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি নেই। শুধু মাত্র আলট্রাসনোগ্রাম থাকলেও হয় না কোনো অপারেশন।

এমনি সংকট আর অব্যবস্থাপনায় মধ্য দিয়ে ২৯ বছর ধরে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে ভোলার মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যা মনপুরা দ্বীপবাসীর একমাত্র সেবাপ্রতিষ্ঠান। যেখানে চিকিৎসার অভাবে মানুষকে ভোলা বা নোয়াখালী যেতে হয়। এতে দরিদ্র রোগীরা সবচেয়ে বেশি বিড়ম্বনায় পড়ছেন।

হাজারো সংকট আর অব্যবস্থাপনা থাকলেও হাসপাতালটির স্বাভাবিক চিকিৎসা কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে যেন কারও মাথা ব্যথা নেই -এমনই অভিযোগ দ্বীপবাসীর।

জানা গেছে, ১৯৯৬ সালের দিকে ৩১ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করে মনপুরা হাসপাতাল। এরপর ২০১৮ সালের দিকে আধুনিক ভবন দেওয়া হয়। কিন্তু ভবনের প্রশাসনিক অনুমোদন হলেও বাড়ানো হয়নি কোনো জনবল। শুধু তাই নয়, হাসপাতালে নেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা।  

এ ব্যাপারে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, টেকনিশিয়ান না থাকায় কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি দেওয়া হয়নি। এতে উন্নত সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

হাসপাতালে রয়েছে খাবারের সমস্যা। ৫০ শয্যা চালু হলেও খাবার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে মাত্র ৩১ জনের। এতে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হলে তারা খাবার পান না।

উপজেলার ১ লাখ জনগোষ্ঠীর একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্র মনপুরা হাসপাতালের এমন করুন দশা বিরাজ করলেও কারও যেন মাথা ব্যথা নেই।  

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তার চৌধুরী বলেন, কোনো চিকিৎসা হয় না হাসপাতালে। আধুনিক ভবন পড়ে রয়েছে। নেই ডাক্তার-নার্স। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় রোগীদের ভোলা কিংবা নোয়াখালী গিয়ে চিকিৎসা করাতে হয়।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ল্যাব না থাকায় হাসপাতালে অপারেশন হয় না। কাটাছেড়ার সেলাই হলেও গুরুতর রোগীদের চিকিৎসা হয় না। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা, সেখানে  নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা নেই। যে কারণে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও চিকিৎসকদের।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বর্তমানে হাসপাতালে ১০ চিকিৎসকের বিপরীতে কর্মরত আছেন চারজন। অন্যদিকে নার্স ৩০ জন থাকার কথা থাকলেও আছেন আটজন। এছাড়া টেকনিশিয়ান, ওয়াড বয়, আয়াসহ তৃতীয় শ্রেণীর ৬১ পদের মধ্যে ৪১টি পদ শূন্য। যার জন্য অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় কর্তৃপক্ষকে।  
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচ) ডা. করিব সোহেল বলেন, জনবল সংকটের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে বিষয়টি খুবই জরুরি।  

এ ব্যাপারে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, ওই হাসাপাতালে খুব শিগগির একটি জেনারেটর দেওয়া হবে। যা দিয়ে এক্স ও প্যাথলজি সেবা চালু করা যাবে। নার্স সংকটের বিষয়ে আমরা লিখছি। সদর হাসপাতালের ডাক্তার সংকট নিরসনে মনপুরা হাসপাতাল থেকে ২ জন ডাক্তার আনা হয়েছে। তাই কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে আশা করি আগামী এক মাসের মধ্যে এমন সমস্যা থাকবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।