ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

‘করোনা মোকাবিলায় শেখ হাসিনা টাকা নয়, মানুষের জীবনের কথা ভেবেছেন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
‘করোনা মোকাবিলায় শেখ হাসিনা টাকা নয়, মানুষের জীবনের কথা ভেবেছেন’

ঢাকা: কোভিড ১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাকার চিন্তা করেননি, তিনি মানুষের জীবনের কথা ভেবেছেন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।


মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে কোভিড সফলতায় বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) কর্তৃক স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।


                                             
জাহিদ মালেক বলেন, কোভিড মোকাবিলায় বাংলাদেশের বিশ্বের রোল মডেল হওয়াটা কোনো ম্যাজিকের মাধ্যমে হয়নি। এই মোকাবিলা হয়েছে বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা, উদ্যোগ ও পরিশ্রমের মাধ্যমে। এই মহামারি মোকাবিলা ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার ফসল। আর এই মহামারি কোভিড মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টাকার চিন্তা করেননি, তিনি মানুষের জীবনের কথা চিন্তা করে কাজ করেছেন।

তিনি আরও বলেন, কোভিড মোকাবিলায় সাফল্য লাভ গোটা জাতির জন্যই একটি বিশেষ অর্জন ও সফলতা। এই সফলতায় সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি সময়োপযোগী দিক নির্দেশনা ও কর্ম পরিকল্পনা। তিনি নিজে সার্বিক দায়িত্ব কাধে তুলে নিয়ে এই মহামারিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমাদেরকে যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন আমরা কেবল তার নির্দেশনা মেনে কাজগুলো করে গেছি।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা স্বাস্থ্যখাতের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যখন যা কিছু চেয়েছি তিনি আমাদেরকে সেগুলো দিতে এক মুহূর্তও বিলম্ব করেননি। প্রধানমন্ত্রী টাকার চিন্তা করেননি, তিনি মানুষের জীবনের চিন্তা আগে করেছেন। করোনা মোকাবিলায় আমরা আজ বিশ্বে ৫ম স্থান পেয়েছি, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এই কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ঠিকভাবে কাজ করায় আমরা আজ বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হচ্ছি। আজ আমাকে যেভাবে সংবর্ধনা দেওয়া হলো এটি আমি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) গোটা চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসা খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের পক্ষে গ্রহণ করে সম্মানিত বোধ করছি। এর মাধ্যমে গোটা চিকিৎসক, নার্সসহ স্বাস্থ্যখাতকে যেভাবে সম্মান দেওয়া হল সেজন্য আমি বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

করোনার সময়ে দেশের বেসরকারি স্বাস্থ্যখাত একযোগে কাজ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন দেশে বিদেশে সবখানে মানুষ ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। শুরুতে মানুষ কোনো এলাকায় হাসপাতাল করতে দিতে চায়নি। মানুষ ভয়ে সে সময় করোনা হাসপাতাল করার বিপক্ষে আন্দোলন পর্যন্ত করেছেন। তখন দেশের প্রাইভেট মেডিকেল হাসপাতালগুলো সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছিল। আমরা প্রাইভেটখাতকে বলেছিলাম করোনার জন্য হাসপতাল ডেডিকেটেড করতে, তারা সেটি মেনে নিয়েচিল। বেড বাড়াতে বললে তারা বাড়িয়েচিল। তাদের যখন যা বলেছি, তারা তাই করেছে। এসব কারণে করোনা মোকাবিলায় আমাদের কাজগুলো আরও সহজ হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কোভিড মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন দিক কর্মপরিধি বিশেষত: ভ্যাকসিন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশ যখন ভ্যাকসিন নিয়ে আলোচনা করছে তখন বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ তা বিনামূল্যে পেয়েছে। বাংলাদেশ একদিনে ১ কোটি ২০ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দিয়ে বিশ্বে বিরল রেকর্ড করেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, যখন আমেরিকা ও ইতালিতে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু হার ক্রমান্বয়ে বেড়ে ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়, তখন বাংলাদেশে আক্রান্তের হার বাড়লেও এক পর্যায়ে সেটি নিয়ন্ত্রণে এসে যায়। ২০২০ সালের জুনের শেষে এবং জুলাইয়ে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু হার কিছুটা বাড়তে থাকে, পরে সেটিও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

অনুষ্ঠানে বিশ্বের ১০০ বছরের ইতিহাসে কোভিড মহামারি নিয়ন্ত্রণে সফলতা অর্জন, ভ্যাকসিন সংগ্রহ, বিতরণ ও প্রয়োগে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করার জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে বেসরকারি স্বাস্থ্য সেক্টরের পক্ষ তেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এছাড়াও কোভিডে অবদান রাখায় বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে ৩৫টি প্রতিষ্ঠান ও ১০ ব্যক্তিকে কোভিড হিরো হিসেবে আখ্যায়িত করে পুরষ্কৃত করা হয়।

বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনে সভাপতি এম এম মুবিন খানের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য বিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শায়লা খাতুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যলয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৪, ২০২৩
আরকেআর/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।