ঢাকা: দেশে বর্তমানে যক্ষা রোগীর সংখ্যা ৬ লাখ ১০ হাজার। বছরে নতুন করে প্রতি লাখে আরো ৪১১ জন মানুষ যক্ষা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
সোমবার ব্র্যাক সেন্টারে জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি, নিউএইজ এবং ব্র্যাক এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “ফুসফুসের স্বাস্থ্য ও যক্ষা নিয়ন্ত্রণ : বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং আগামীর নির্দেশনা” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন এনটিপি’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কনসালটেন্ট ডা. মজিবুর রহমান।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বছরে প্রতি লাখে ৪৩ জন মানুষ যক্ষা রোগে মারা যাচ্ছে। এ হিসেবে এ রোগে বছরে মোট মারা যাচ্ছে ৬৪ হাজার মানুষ। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আক্রান্তের সংখ্যা ১২ মিলিয়ন। যার মধ্যে ৩.২ মিলিয়ন মহিলা। বিশ্বের মোট আক্রান্তদের মধ্যে ২২ শতাংশ রোগী এইচআইভি পজিটিভ। যক্ষা রোগে প্রতি বছর বিশ্বে মারা যাচ্ছে ১.৪৫ মিলিয়ন মানুষ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে এ রোগে আক্রান্ত এবং মারা যাওয়ার হার বেশি হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ অসচেতনতা। পুষ্টিহীনতা, শিক্ষার অভাব, কুসংস্কার, চিকিৎসার অভাবের কারণে এখানে মৃত্যুর সংখ্যাটা এত বড়।
এতে বলা হয়, এ রোগ সৃষ্টি হওয়ার বড় কারণ তামাক সেবন। মোট ক্যান্সার আক্রান্তদের মধ্যে ৭০ শতাংশ ক্যান্সার তামাক সেবনজনিত কারণে হয়ে থাকে। এর বাইরে যেসব কারণ রয়েছে সেগুলোর মধ্যে বায়ু দুষন, দ্রুত ও অপরিকল্পিত নগরায়ন, যানজট ও ফিটনেসবিহীন গাড়ির দুষণ, তেজস্ক্রীয়তা অন্যতম।
এছাড়া পেশাগত কারণেও এ রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
নিউএজ পত্রিকার সম্পাদক নুরুল কবীরের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, মাছরাঙা টেলিভিশনের প্রধান নির্বার্হী ফাহিম মুনায়েম, যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির পরিচালক আশিক হোসেইন, ডা. কে জামান, ডা. ফাতেমা জান্নাত, ঢাকা কমিউনিটি হসপিটাল ট্রাস্টের কো-অরডিনেটর ডা. মাহমুদুর রহমান, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল প্রমুখ।
ব্র্যাক সেন্টারের সিনিয়র উপদেষ্টা (কমিউনিকেইশন) আফসান চৌধুরী বলেন, বিভিন্ন সময় প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপের কথা বলা হলেও এটা প্রতিষ্ঠিত নয়। এটা প্রতিষ্ঠিত হওয়া দরকার। কারণ, সবার অংশগ্রহণ ছাড়া যক্ষা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশের রোগীরা ডাক্তাদের ভয় করে। রোগীদের এই ভয় কাটাতে হবে।
ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ডায়াবেটিস থেকে টিবি (যক্ষা) হতে পারে। ডায়াবেটিস থেকে কত জন যক্ষায় আক্রান্ত হচ্ছে দেশে এ নিয়ে কোনো জরিপ নেই। শুধু ডাক্তারই রোগ সর্ম্পকে জানবে তা সঠিক নয়। সবারই স্বাস্থ্য শিক্ষা গ্রহণ করা দরকার। এজন্য শিক্ষা ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অর্ন্তভুক্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের ডাক্তাররা কোনো রোগের ড্রাগ রেজিস্টেন্স ক্ষমতা বিবেচনা না করেই ঔষধ দিয়ে থাকে। এখানে কত শতাংশ ঔষধে কত ধরণের রোগে রেজিস্টেন্স এ নিয়ে কোনো গবেষণা নেই। এ বিষয়ে একটা স্বিদ্ধান্তে আসা দরকার।
নুরুল কবির বলেন, দেশের রাজনীতি চরম অধঃপতনে পৌঁছে গেছে। অথচ সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে, দেশের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তনে রাজনৈতিক সচেতনতার বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১২
এমইউএম / সম্পাদনা : আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর
[email protected]