ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

বোয়ালমারীতে ডেঙ্গু রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ! 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
বোয়ালমারীতে ডেঙ্গু রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ! 

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেঙ্গু রোগে চিকিৎসাধীন মোছা. ঝর্না খাতুন (২৩) নামে এক রোগীর শরীরে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন পুশ করার অভিযোগ উঠেছে।  

মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি জানাজানি হয়।

 

স্যালাইন পুশ করার পর রোগীর শরীরে খিঁচুনিসহ নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে। এ ঘটনায় ওই রোগীর স্বামী বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।  

এর আগে সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে। ঝর্না বোয়ালমারী পৌরসভার লোকনাথ গ্রামের সুলতান শেখের স্ত্রী।  

ভুক্তভোগী ও লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ১১টার দিকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে পৌরসভার লোকনাথ গ্রামের সুলতান শেখের স্ত্রী ঝর্না খাতুন বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। সে সময় হাসপাতালের সার্জন ডা. সিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন ওষুধের মধ্যে স্যালাইন দেন। পরে স্যালাইন পুশ করার পর রোগীর শরীরে খিঁচুনিসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। এভাবে তার শরীরে দুই ব্যাগ স্যালাইন পুশ করার পর দেখা যায় স্যালাইনের মেয়াদ নেই। হাসপাতাল থেকে দেওয়া স্যালাইনের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। একটি স্যালাইনের প্যাকেটে মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩। আরেক ব্যাগ স্যালাইনে ৭/২০২৩ লেখা এবং মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ৬ ২০২৩ লেখা।  

এ ব্যাপারে রোগীর স্বজন বিল্লাল শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমার ভাতিজি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ডাক্তার স্যালাইন দেন। কিন্তু স্যালাইনের মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় তা রোগীর শরীরে পুশ করার পর পরই চোখ-মুখ উল্টিয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। এখনও সে খুবই অসুস্থ।  

এ ব্যাপারে রোগী স্বামী সুলতান শেখ বলেন, আমার স্ত্রী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার পর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার বিভিন্ন ওষুধের মধ্যে স্যালাইন দেন। স্যালাইন শরীরে পুশ করার পর খিঁচুনিসহ নানা জটিলতা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে মৃত্যুর মতো অবস্থা হয়ে পড়ে। পরে দেখা যায় হাসপাতাল থেকে যে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে, তা মেয়াদোত্তীর্ণ। আমার স্ত্রী এখনও খুবই অসুস্থ। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। কী হয় বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আমি হাসপাতালের কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।

বোয়ালমারী উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. মো. সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে এ ব্যাপারে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে রং নম্বর বলে জানান। পরবর্তী সময়ে মোবাইল নম্বরটা বন্ধ করে রাখেন।  

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম এম নাহিদ আল রাকিবের ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে তিনি একাধিকবার ফোন দেওয়ার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।  

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানা নেই। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ স্যালাইন রোগীর শরীরে পুশ করা উচিৎ হয়নি। এটা অন্যায়, গাফলতি। এ বিষয়ে আমার কাছে প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগ দিলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০০৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।