ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

স্বাস্থ্য

মেহেরপুরে বাড়ছে ডেঙ্গু, এক মাস ২৪ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৪০০

জুলফিকার আলী কানন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪
মেহেরপুরে বাড়ছে ডেঙ্গু, এক মাস ২৪ দিনে হাসপাতালে ভর্তি ৪০০

মেহেরপুর: মেহেরপুর জেলায় আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীরা মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছাড়াও ক্লিনিকগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন।

রোববার সকালের আগের ২৪ ঘণ্টায় মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আটজন এবং মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন রোগী ভর্তি হয়েছেন।  

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৬ জন, মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ২৫ জন ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচ ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। গত আগস্টে মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ৮০ জন, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৬৬ জন ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজনসহ মোট ১৫১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।

চলতি সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখ পর্যন্ত মেহেরপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১৪৪ জন, গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৯৩ জন ও মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৩ জনসহ মোট ২৫০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪০০। এ মাসের বাকি দিনগুলোতে এ সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা।

হাসপাতালে গিয়ে জানা গেছে, সাধারণ রোগীদের সঙ্গে রাখা হয়েছে ডেঙ্গু রোগীদের। এতে সাধারণ রোগীরা রয়েছেন চরম ঝুঁকির মধ্যে।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, স্থান সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের একসঙ্গে রাখা হয়েছে। তবে, ডেঙ্গু রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে হাসপাতালে।

মশা নিয়ন্ত্রণে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করার জন্য মেহেরপুর পৌরসভা ও গাংনী পৌরসভার বরাদ্দ ছিল। তবে স্প্রে করা হয়নি বলে অভিযোগ। ওয়ার্ড পর্যায়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। এ ছাড়া জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদগুলোকেও কোনো প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি।  

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নার্স শাকিলা বলেন, ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে হঠাৎ ১০৩-১০৪ ডিগ্রি জ্বর দেখা দেয়। জ্বর কমে গেলেও ডেঙ্গুর ভয়াবহতা রয়ে যায়। শুরু হয় পেটব্যথা, মাথাব্যথা, বমি, পাতলা পায়খানা।

গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) চিকিৎসক আব্দুল আল মারুফ বলেন, অনেকে জ্বর নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন। তাদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে রক্ত পরীক্ষা করার। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্য সচেতনতার কথাও বলা হচ্ছে। মশারি ব্যবহার করারও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

রোগীদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু হোক আর হেমোরেজিক হোক, এ সময় জ্বর হলেই পরীক্ষা করিয়ে ওষুধ নেওয়া উচিত। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর অবস্থা বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তাই জ্বর হলেই সতর্ক থাকতে হবে।

মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক চিকিৎসক জমির মোহাম্মদ হাসিবুর সাত্তার বলেন, চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় কিট, আলাদা ওয়ার্ডসহ সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। তবে সবখানে প্রচারণা চালানো প্রয়োজন, যাতে সবাই ডেঙ্গু নিয়ে সতর্ক হতে পারেন। সেক্ষেত্রে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং জলাবদ্ধতা যেন না থাকে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।